গঙ্গা থেকে পরিকল্পিত ভাবে বালি তোলা বালি ব্রিজের কাছে। —নিজস্ব চিত্র।
বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকার পরে ফের হুগলি, হাওড়া ও উত্তর ২৪ পরগনার একাংশে গঙ্গা থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ওই সব জায়গায় ৮-১০টি নৌকো সংগঠিত ভাবে গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বালি তুলছে। কখনও দুপুরেও চলছে এই বেনিয়ম। বালি সেতু, দক্ষিণেশ্বর, বেলুড়, বালিখাল, উত্তরপাড়া লাগোয়া মাঝগঙ্গায় প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে ওই কাজ চলছে গত কয়েক দিন ধরে।
রাজ্য সরকারের নির্দেশ রয়েছে, প্রশাসনের শংসাপত্র এবং নির্দিষ্ট অনুমতি ছাড়া গঙ্গা-সহ কোনও নদী থেকেই বালি তোলা যাবে না। দক্ষিণেশ্বরের দিকে গঙ্গায় বিধি বহির্ভূত ভাবে বালি কাটা হলে বালি সেতু এবং তার কাছেই নিবেদিতা সেতুর ক্ষতির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করেই ওই কাজ কী ভাবে করা হচ্ছে, এ প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা। স্থানীয়দেরও প্রশ্ন, পুলিশ-প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কী ভাবে ওই অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে?
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় স্তরে সম্প্রতি অভিযোগ জানানো হয় উত্তরপাড়া পুরসভায়। নড়েচড়ে বসেন পুর কর্তৃপক্ষ। জেলা প্রশাসনের কাছে পুরসভার তরফে নির্দিষ্ট অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘আমরা সাধারণ মানুষের কাছে জেনেই জেলা প্রশাসনের নজরে লিখিত ভাবে বিষয়টি এনেছি। এই বেনিয়ম অবিলম্বে বন্ধ করা জরুরি।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘সদ্য অভিযোগ মিলেছে। গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গা থেকে বালি তুলে মাখলার বালিখাল লাগোয়া বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে থাকা ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে। ইটভাটাগুলি বাজারের তুলনায় কিছুটা কম দামে তা কিনছে। এই ‘ব্যবস্থা’ ফের চালু হওয়ায় প্রমাদ গুনছেন পরিবেশকর্মীরা। কারণ, হাওড়ার বালি এবং হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকায় গঙ্গার পাড় ক্রমেই উদ্বেগজনক ভাবে ভাঙনপ্রবণ হয়ে পড়ছে। তার উপরে বালি তোলার ঘটনায় তাঁরা সিঁদুরেমেঘ দেখছেন।
পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মাঝে কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হলেও ফের গঙ্গায় বালি কাটা শুরু হলে বিপদ অনিবার্য। কারণ, বালি এবং দক্ষিণেশ্বরের কাছেই রাজ্যের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সেতু রয়েছে গঙ্গার উপর। এমনিতে দক্ষিণমুখী গঙ্গার পশ্চিম পাড় ভাঙে। বালি থেকে কল্যাণী পর্যন্ত গঙ্গা ভাঙনপ্রবণ হয়ে পড়ছে ক্রমেই। বেআইনি ভাবে বালি কাটা অবিলম্বে বন্ধ করা হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy