প্রতীকী ছবি।
সার্বিক ভাবে হাওড়া শহরে খুন বা ডাকাতি আগের তুলনায় কমলেও ‘হোয়াইট কালার ক্রাইম’ তোলাবাজির ঘটনা বেড়েছে। বেআইনি প্রোমোটিংয়ের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাথা তুলতে শুরু করেছে তোলাবাজ দুষ্কৃতীরা। এর পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মাদকের ব্যবসা। ঘটেছে মাদক নিয়ে খুনোখুনিও। উঠতি দুষ্কৃতীদের হাতে কাঁচা টাকার আমদানি বাড়ায় মাদকাসক্তের সংখ্যা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। পুলিশের চোখ এড়িয়ে স্কুলপড়ুয়াদের টিফিন বক্সে বা ব্যাগে শিবপুরের গঙ্গার ঘাট থেকে টিকিয়াপাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় অবাধে বিক্রি হচ্ছে এলএসডি, হেরোইন, গাঁজা-সহ নানা ধরনের মাদক। যা চিন্তা বাড়িয়েছে পুলিশেরও।
গত কয়েক মাসে মাদক-ব্যবসাকে কেন্দ্র করে হাওড়ায় দু’টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। তৃতীয় একটি ঘটনায় এক যুবককে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। প্রথম ঘটনাটি ঘটে গত ২০ অগস্ট শিবপুরের ঘোষবাগান এলাকায়। অভিযোগ, সেখানে প্রকাশ্যেই চলত নেশার আসর। মাদক কেনার টাকা নিয়ে গোলমাল হওয়ায় এক যুবককে কুপিয়ে খুন করে তার বন্ধুরা। সেই ঘটনার ঠিক দু’দিন পরে, ২২ অগস্ট শিবপুর শ্মশানঘাটে নেশার আসরে এক যুবককে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে তাঁর এক বন্ধুর বিরুদ্ধে।
আবার চলতি মাসে বেলিলিয়াস রোডের ইস্ট–ওয়েস্ট বাইপাসে একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের একতলায় ভূগর্ভস্থ জলাধার থেকে উদ্ধার হয় মহম্মদ আসিফ (১৯) নামে এক তরুণের পচাগলা দেহ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই তরুণ তিন দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। তদন্তে আরও উঠে আসে, যে নির্মীয়মাণ বহুতল থেকে আসিফের দেহ উদ্ধার হয়েছিল, তার কাছেই নুর মহম্মদ মুন্সি লেনে প্রায়ই বসত নেশার আসর। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, মাদক নিয়ে কোনও গোলমালের জেরেই ওই তরুণের মৃত্যু হয়েছে।
গত তিন মাসে একের পর এক এমন ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রতিটির নেপথ্যে রয়েছে মাদকের বেচাকেনা। গঙ্গা পেরিয়ে হাওড়া শহরে অবাধে ঢুকছে সেই মাদক। শিবপুর শ্মশানঘাট, ফোরশোর রোডের কয়েকটি নির্দিষ্ট জায়গা, বিচালি ঘাট রোড, জি টি রোডের কাছে বিপ্রদাস চ্যাটার্জি লেন, নুর মহম্মদ মুন্সি লেন এবং টিকিয়াপাড়ায় রীতিমতো মাদকের ঠেক গড়ে উঠেছে।
চওড়া বস্তি এলাকার এক বাসিন্দা শেখ শাহজাদা বলেন, ‘‘ফোরশোর রোডের কয়েকটি নির্দিষ্ট জায়গায় পড়ুয়াদের টিফিন বক্সে ভরে এই মাদক বিক্রি হচ্ছে। কখনও আবার স্কুলের ব্যাগে করে আনা হচ্ছে গাঁজা, এলএসডি-সহ বিভিন্ন ধরনের মাদক। সব জেনেও পুলিশ নির্বিকার।’’
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, বিভিন্ন নির্মীয়মাণ বহুতলে এই নেশার আসর বসছে বলে জানা গিয়েছে। ওই বহুতলগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া নাজিরগঞ্জ এবং বটানিক্যাল গার্ডেন ফেরিঘাটেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কারণ হিসেবে পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার মেটিয়াবুরুজ এবং খিদিরপুর থেকে ওই সব মাদক জলপথে হাওড়া শহরে ঢুকছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি ভিন্ রাজ্য থেকে ছয় এবং দু’নম্বর জাতীয় সড়ক হয়ে হাওড়ায় মাদক পৌঁছচ্ছে কি না, সে দিকেও লক্ষ রাখা হচ্ছে।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাদক ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য কমবয়সি কিশোর ও যুবকেরা। সেটাই আমাদের চিন্তা বাড়াচ্ছে। তোলাবাজির টাকায় যে এই মাদক কেনাবেচা চলছে, তা অবিলম্বে বন্ধ করা হবে। মাদক কারবারিদের ধরতে পুলিশও জাল বিছিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy