জলের চাপে বসে গেল মান্দারিয়া খালের ওপর সেতু। নিজস্ব চিত্র।
কোথাও বসে গেল সেতু, কোথাও বিচ্ছিন্ন হল সড়ক যোগাযোগ, কোথাও ডুবে গেল গোটা এলাকা। লাগাতার বৃষ্টিতে গ্রামীণ হাওড়ার জনজীবন বিপর্যস্ত।
সাঁকরাইলের আলমপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার না হওয়ায় এই অবস্থা। মুম্বই রোডের ধারে আলমপুর মাশিলা পঞ্চায়েতের অধীন। সাঁকরাইলের অন্যতম বর্ধিষ্ণু জনপদ। বহু কলকারখানা রয়েছে। জমা জল বের করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান গোরাই খান। একইসঙ্গে পরিস্থিতির জন্য তিনি পাল্টা দোষ চাপিয়েছেন বাসিন্দাদের একাংশের ঘাড়েই। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা এখানে ঘরবাড়ি বানিয়েছেন, দোকান করেছেন, তাঁদেরই একাংশ নিকাশি নালা বন্ধের জন্য দায়ী। তাঁদের চিহ্নিত করে চিঠি ধরানো হবে। দখল করা নালা ছাড়তে বলা হবে।’’
মুম্বই রোড থেকে আন্দুল বাজার পর্যন্ত পিচঢালা রাস্তার ধারে বাড়ি সদানন্দ দাসের। তিনি বলেন, ‘‘প্রায় এক হাঁটু জল পার হয়ে বাড়িতে ঢুকতে হচ্ছে।’’ রাস্তার ধারে চায়ের দোকান চালান পার্বতী পাছাল। জল জমে যাওয়ায় ইটের থাক দিয়ে তার উপরে বাঁশ আর তক্তা দিয়ে মাচা বেঁধে দোকান চালাচ্ছেন। খদ্দেররাও বসছেন মাচার উপরে রাখা বেঞ্চে।
বৃষ্টি তো আছেই, এরসঙ্গে ডিভিসি-র ছাড়া জলে আমতা ১ ব্লকের মান্দারিয়া খালের জলস্তর বেড়েছে। সেই জলের তোড়ে এবং কচুরিপানার চাপে খালে বসে যায় প্রায় ৫০ বছরের পুরনো একটি কংক্রিটের সেতু। ফলে, খোসালপুর ও পাড় খোসালপুরের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেতুটিকে ‘বিপজ্জনক’ ঘোষণা করে দু’দিক আটকে দিয়েছে প্রশাসন। সমস্যায় পড়েছেন দুই গ্রামের হাজার খানেক মানুষ।
এলাকাটি উদয়নারায়ণপুর বিধানসভার আওতায় পড়ে। বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের সজাগ করা হয়েছে। সেতু দিয়ে যাতে যাতায়াত না করেন। আপাতত যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। জল কমলে কাঠের অথবা বাঁশের সাঁকো করা হবে। পরে সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে কংক্রিটের সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ সেচ দফতরের আধিকারিক তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জল ও কচুরিপানার চাপে সেতুর মাঝে একটি স্তম্ভ বসে গিয়েছে। দ্রুত কচুরিপানা সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। বসে যাওয়া স্তম্ভের নীচে বস্তা দিয়ে মাটি দেওয়া হচ্ছে।’’
ডিভিসি-র ছাড়া জলে মুণ্ডেশ্বরীতে জলস্তর বাড়তে থাকায় হাওড়ার ‘দ্বীপাঞ্চল’ ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনানের পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার আমতা ২ ব্লকে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন বিধায়ক সুকান্ত পাল। তিনি জানান, নদীঘাটে ২৪ ঘণ্টা নজরদারির জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র ২৪ ঘন্টা খোলা থাকবে।
জগৎবল্লভপুরের চাঁদুল ও যদুপুর— গ্রাম দু’টির ভিতরের রাস্তাটির একদিকে রয়েছে হাওড়া-আমতা রোড, অন্য দিকে বড়গাছিয়া-ফুরফুরা শরিফ রোড। ভিতরের রাস্তাটির উপরে রয়েছে কানা দামোদর নদীর সেতু। সেতুর দু'পাশে প্রায় ১০০ ফুট রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রঞ্জন কুন্ডু বলেন, ‘‘সেতুর কাজ করার জন্য অস্থায়ী যে রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল, সেই রাস্তা মূল রাস্তার থেকে নীচে হওয়াতেই এই সমস্যা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy