অরুন্ডা পঞ্চায়েতের সামনে জমায়েত। —নিজস্ব চিত্র।
গোলমালের জেরে মঙ্গলবার ভেস্তে গেল খানাকুল-১ ব্লকের অরুন্ডা পঞ্চায়েতে উপ-সমিতি গঠন। দু’পক্ষের জমায়েত ছিল সকাল থেকে। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পঞ্চায়েত চত্বরে বোমাবাজি শুরু হয়। বিজেপির কয়েকশো কর্মী-সমর্থক পঞ্চায়েতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। দমকল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তৃণমূলের লোকজনকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রধান পদপ্রার্থী দেবাশিস সিংহকে অপহরণেরও অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। কোনও অভিযোগই মানেনি বিজেপি।
গোলমাল থামাতে গিয়ে এ দিন আক্রান্ত হয়েছে পুলিশও। তাদের গোটা চারেক মোটরবাইক পোড়ানো হয়। বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। মারধর করা হয় পুলিশ আধিকারিক-সহ কয়েক জন কর্মীকে। বোমার আঘাতে জখম হন শুভেন্দু মণ্ডল নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ার। পরিস্থিতি সামালাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। কয়েক দফা লাঠিও চালানো হয়। তারপরেও দফায় দফায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা জমায়েত করায় পঞ্চায়েত কর্মী এবং তৃণমূল সদস্যদের নিরাপদ একটি ঘরে রাখা হয়। বিকেলে পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) আমনদীপ বাহিনী নিয়ে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেন।
সন্ধ্যা পর্যন্ত দেবাশিসকে খুঁজে না পাওয়ায় খানাকুল-সহ মহকুমার তৃণমূল নেতা-কর্মীরা মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সামনে ধর্নায় বসেন। খানাকুল-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি ইলিয়াস চৌধুরীর অভিযোগ, “বিজেপির জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ, খানাকুলের বিধায়ক সুশান্ত ঘোষেদের নেতৃত্বে তাণ্ডব চলেছে। আমাদের প্রধান পদের প্রার্থীকে অপহরণ করা হয়েছে।’’
অন্য দিকে, বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই ওই দল ছেড়ে আমাদের দলে ভিড়েছিলেন কয়েক জন। তাঁরা ফিরে যাওয়ায় তৃণমূলেরই একাংশ অশান্তি করে আমাদের উপরে দায় চাপাচ্ছে।’’
পুরো বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “নিখোঁজ প্রার্থীর খোঁজ চলছে। অশান্তি এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
অরুন্ডা পঞ্চায়েতে প্রধান-উপপ্রধান নির্বাচনের দিন থেকেই উপ-সমিতি গঠনে অশান্তির আভাস মিলেছিল। ২৩টি আসনের ১৪টিতে জেতে তৃণমূলের। বাকি ৯টি আসন পায় বিজেপি। ১০ অগস্ট প্রধান-উপপ্রধান নির্বাচনের দিন সকালেই প্রধান পদের দাবি নিয়ে তৃণমূলের দেবাশিস সিংহ-সহ তিন জন দলত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় পঞ্চায়েত দখল করে বিজেপি। দেবাশিসকে প্রধান নির্বাচন করা হয়। ওই ঘটনার পরে ফের শনিবার দেবাশিস-সহ দু’জন তৃণমূলে ফিরে যাওয়ায় সমস্যা বাড়ে।
খানাকুল-১ বিডিও শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “আইন-শৃঙ্খলার কারণে এ দিন অরুন্ডা পঞ্চায়েতের উপ-সমিতি গঠন মুলতুবি রাখা হল। একই সঙ্গে রামমোহন-১ পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনে অশান্তি না মেটায় দু’দলের তরফেই উপ-সমিতি গঠন স্থগিত রাখার আবেদন জানানো হয়েছে।’’
রাতের দিকে নিখোঁজ প্রার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) আমনদীপ, তিনি বলেন, “দুপুরে পঞ্চায়েতে উপসমিতি গঠন শুরু হতেই দু’তিন দিক থেকে কিছু বিজেপির লোক ইট-পাথর ছুড়তে শুরু করে। কিছু পুলিশের লোক আহত হয়েছে। কিছু বাইকেও আগুন দিয়েছে। পুলিশের দু’টি গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি নিয়ে বিডিও অফিস থেকেও নির্দিষ্ট অভিযোগ আসছে। আইনগত যা পদক্ষেপ করার, করছি। ঘটনাস্থল থেকে কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy