হাসপাতালে সামনে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
গর্ভে মৃত শিশুকে অস্ত্রোপচার করে বের না-করায় বুধবার রাতে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বার আত্মীয়েরা। চিকিৎসকেরা বোঝানোয় তাঁরা ক্ষান্ত হন। বৃহস্পতিবার স্বাভাবিক ভাবেই মৃত সন্তান পিয়ালি রাজভর চৌধুরী নামে ওই যুবতীর গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসে। তবে, তার পাশাপাশি অন্য এক মহিলার গর্ভের মৃত সন্তানকেও ওই যুবতীর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন পিয়ালির বাড়ির লোকেরা। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, পিয়ালির গর্ভে যমজ সন্তান ছিল, তাঁদের আগে জানানো হয়নি কেন? বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি হয়। চন্দননগর থানা থেকে পুলিশ আসে। শেষমেষ হাসপাতাল সুপার ধ্যানব্রত মণ্ডল ওই পরিবারের কাছে ‘ভুল’ স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘অপারেশন থিয়েটারে থাকা নার্সিং স্টাফের ভুলেই এমনটা হয়েছে। এটা কাম্য নয়।’’ পিয়ালির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সুপার জানান।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, চন্দননগরের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের রেল আবাসনের বাসিন্দা বছর ঊনিশের পিয়ালি গত শনিবার প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে এই হাসপাতালে যান। ‘সমস্যা নেই’ জানিয়ে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন চিকিৎসক। মঙ্গলবার ফের ব্যথা ওঠায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির পরেই ‘ইউএসজি’ (আলট্রাসোনোগ্রাফি) করে দেখা যায়, গর্ভাবস্থায় শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাত পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করে কেন গর্ভস্থ শিশুর দেহ বের করা হল না, সেই প্রশ্ন তুলে বাড়ির লোকেরা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, এতে পিয়ালির ক্ষতি হতে পারে। হাসপাতালের তরফে বোঝানোর পরে ক্ষোভ প্রশমিত হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে অপারেশন থিয়েটারে স্বাভাবিক ভাবেই পিয়ালির মৃত কন্যা সন্তান বেরিয়ে আসে। পিয়ালির স্বামী রাজা চৌধুরীর অভিযোগ, প্যাকেটে মোড়া অবস্থায় গর্ভে মৃত দু’টি সন্তান তাঁদের দেওয়া হয়। এতেই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। ওই পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের দায়সারা মনোভাবের কারণেই এমনটা ঘটেছে।
কেন এমনটা হল?
হাসপাতাল সূত্রের বক্তব্য, অপারেশন থিয়েটারে পিয়ালির পাশে ছিলেন সাড়ে তিন মাসের আর এক অন্তঃসত্ত্বা। তাঁর গর্ভপাত হয়। তাঁর পেটে ছিল পুত্রসন্তানের ‘ফিটাস’ (মাতৃগর্ভে ৮ সপ্তাহ পরে ভ্রূণের বিকাশরত অবস্থা)। তাঁর সন্তানকেও ‘ভুলবশত’ পিয়ালির হাতে তুলে দেওয়াতেই সমস্যা।
সাম্প্রতিক সময়ে জরুরি বিভাগে মৃত এক ব্যক্তির রক্ত কুকুরের চেটে খাওয়া, হাসপাতাল চত্বরে মদ্যপদের রমরমা, রাতে রোগীর আত্মীয়ের পকেটমারি, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ দেওয়ার মতো অভিযোগে এই হাসপাতালে শোরগোল পড়েছিল। এ দিনের ঘটনা নিয়েও গাফিলতির অভিযোগ উঠল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy