প্রতীকী ছবি।
ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে কিডনি বিকল হয়ে ফের শ্রীরামপুরের প্রভাসনগরের এক বাসিন্দার মৃত্যু হল। রবিবার জাগতি দেবী (৮২) নামে ওই বৃদ্ধা কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে মারা যান। এর আগে বৃহস্পতিবার ২০ বছরের এক যুবকের মৃত্যু হয় একই কারণে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে অন্তত ১২ জন ওই উপসর্গ নিয়ে ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তেরা সকলেই প্রাপ্তবয়স্ক। ছ’জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। সোমবার বেলা পর্যন্ত অন্তত ৪ জন ভর্তি ছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ক’দিনে ওই এলাকা থেকে ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি সকলের কিডনির সমস্যা হয়নি। কয়েক জনের ক্ষেত্রে তা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ঠিক কী কারণে এই সমস্যা হচ্ছে, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার এই ধরনের উপসর্গ নিয়ে ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি কয়েক জনের মলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নাইসেডে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট এখনও আসেনি। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ওই এলাকায় জলের র্যাপিড পরীক্ষা করা হবে। প্রাথমিক সেই পরীক্ষায় সন্দেহজনক কিছু মনে হলে জলের নমুনা পরীক্ষার জন্য নাইসেডে পাঠানো হবে।
জাগতিদেবীর বাড়ির লোকেরা জানান, বৃহস্পতিবার থেকে তাঁর ঘনঘন বমি-পায়খানা হচ্ছিল। ওই দিনই তাঁকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু অবস্থার বিশেষ হেরফের হয়নি। শুক্রবার রাতে তাঁর পেটে ব্যথা শুরু হয়। তার পরেই তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তাঁর ছেলে হিরালাল সাউ বলেন, ‘‘মায়ের কিডনির কোনও রোগ ছিল না। কলকাতার হাসপাতালে গেলে বলা হয়, কিডনির খুব সমস্যা হয়ে গিয়েছে। এমনই হল, মাকে বাঁচানোই গেল না।’’
ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার হুগলি জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি অমিতাভ দে এবং সংগঠনের চাঁপদানি বিধানসভার সভাপতি সত্যম সিংহ জাগতিদেবীর বাড়িতে যান। অমিতাভর বক্তব্য, ‘‘একাধিক লোকের এমন উপসর্গ হল। অথচ, প্রশাসনের তৎপরতা দেখছি না। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, জল থেকেও এই সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু বিকল্প জলের ব্যবস্থাটুকু করা হল না।’’ বৃহস্পতিবার মৃত যুবকেরও আগে কিডনির রোগ ছিল না বলে জানা গিয়েছে।
রিষড়া শহর লাগোয়া শ্রীরামপুর পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকার বাসিন্দারা মূলত পুরসভার ট্যাপকলের জল খান। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য গৌরমোহন দে বলেন, ‘‘জল আপাতদৃষ্টিতে স্বচ্ছ এবং পরিষ্কার বলেই মনে হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজন হলে পুরসভার তরফে ওখানে জলের গাড়ি পাঠানো হবে।’’ তিনি জানান, এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। চুন এবং ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy