বোজানো হয়েছে এই পুকুর। নিজস্ব চিত্র।
মাস কয়েকের মধ্যে সকলের চোখের সামনে মাটি ফেলে প্রায় আট কাঠার একটি পুকুর বুজিয়ে দেওয়া হল পোলবা-দাদপুর ব্লকের সুগন্ধা মোড়ের কাছে। এ কাজে নাম জড়িয়েছে পোলবা-দাদপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ, তৃণমূলের প্রশান্ত গোলের।
জলাভূমি ভরাট নিষিদ্ধ। আইনের তোয়াক্কা না করে পুকুর বোজানোতে অবশ্য কোনও অন্যায় দেখছেন না প্রশান্ত। তাঁর উদ্যোগেই পুকুর ভরাটের কথা স্বীকার করে প্রশান্তের দাবি, ‘‘ওই পুকুরে সাপের উপদ্রব ছিল। তাই পুকুর বুজিয়ে সেই জমিতে উন্নয়ন করা হবে।’’ পুকুর বোজানোর জন্য প্রশাসনের কোনও দফতরের অনুমতিও তিনি নেননি বলেও কবুল করেছেন।
কিন্তু উন্নয়নটা কী? কল-কারখানা হবে না বাজার? পার্কিং প্লেস হবে না কমিউনিটি হল?— কোনও উত্তর মেলেনি ওই তৃণমূল নেতার কাছে। তিনি বলেন, ‘‘এখনও ঠিক হয়নি। তবে, উন্নয়নের জন্যই ভরাট করেছি।’’
প্রশান্তের উত্তর শুনে তাজ্জব পরিবেশকর্মীরা। পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক! একজন জনপ্রতিনিধি যদি নিজের হাতে আইন ভাঙেন, তা হলে সাধারণ প্রোমোটারদের দোষ কোথায়!’’ ব্যান্ডেলের পরিবেশপ্রেমী চন্দন ক্লেমেন্ট সিংহের কথায়, "অবাক কাণ্ড! জলাশয়ে তো সাপ থাকবেই! এ ভাবে প্রকৃতির উপর আঘাত হানলে বাস্তুতন্ত্র টিকিয়ে রাখা সত্যিই দায় হবে। তাই এ সবের বিরুদ্ধে অবিলম্বে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।’’
ব্লক ভূমি দফতরের এক আধিকারিক জানান, বিষয়টি জানা নেই। অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিয়া পাত্র জানান, সমিতির পক্ষ থেকে পুকুরটি ভরাট করা হয়নি।
দিল্লি রোডের কলকাতামুখী লেনের ধারে সুগন্ধা মোড়ের কাছে ওই পুকুরটি ছিল সুগন্ধা অঞ্চল তৃণমল কার্যালয়ের পিছন দিকে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশান্ত গাড়ি-গাড়ি মাটি এনে ওই জলাশয় ভরাট করেছেন। অনেকে মনে করছেন, পুকুর বোজানো জমিতে আবাসন হতে পারে। তাঁরা পুকুরকে পূর্বাবস্থায় ফেরানোর দাবি তুলেছেন। এলাকার এক বর্ষীয়ান বাসিন্দা বলেন, ‘‘চোখের সামনে গাছ কাটা, জলাশয় ভরাট করা চলছে। সব জায়গাতেই শুধু প্রোমোটার-রাজ।’’ শাসক দলের মদতে ওই এলাকায় প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ।
এই ব্লকের সুগন্ধা, রাজহাট প্রভৃতি অঞ্চলে গাছ-মাটি কাটা কিংবা জলাশয় ভরাট করার অভিযোগ নতুন নয়। মাসখানেক আগেই এলাকায় অবৈধ ভাবে মাটি কাটার অভিযোগ তুলে সুগন্ধায় পথ অবরোধে শামিল হয়েছিল বিজেপি। কিছুদিন আগে সুগন্ধা পঞ্চায়েতের কাছে গাছ কাটার খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে পৌঁছেছিলেন এলাকার বিধায়ক অসিত মজুমদার। সে সময় হাতেনাতে ধরা হয় একজনকে। এ বারে শাসক দলের নেতাই বেআইনি কাজের কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন।
বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, "বেআইনি কাজের কথা উনি (প্রশান্ত) যখন স্বীকারই করে নিচ্ছেন, তখন অবিলম্বে ওঁকে গ্রেফতার করা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy