এই সেই মাছি। ছবি শুভ্রকান্তি সিনহার সৌজন্যে পাওয়া।
মানুষের কাছে মাছির কদর না থাকলেও পরিবেশে এই পতঙ্গের ভূমিকা রয়েছে। পৃথিবীতে মাছির বহু প্রজাতি আছে। সম্প্রতি তার আরও একটি প্রজাতির খোঁজ মিলেছে। এর পিছনে ভূমিকা আছে হুগলির মগরার গোপাল ব্যানার্জি কলেজের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক তথা মাছি-বিজ্ঞানী শুভ্রকান্তি সিনহা এবং তাঁর দুই ছাত্র— নন্দন জানা, প্রভাস হাজারীর। এই আবিষ্কার নিয়ে তাঁদের গবেষণাপত্র পয়লা নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছে ‘জ়ুটেক্সা’ নামে নিউ জ়িল্যান্ডের বিখ্যাত একটি জার্নালে।
শুভ্রকান্তি জানান, মাছিটি তাঁরা সংগ্রহ করেন দার্জিলিং জেলার বিজনবাড়ি থেকে। এটি ‘মাসকিডি’ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। নাম রাখা হয়েছে ‘মায়োসপিলা হিমালয়ানসিস জানা, হাজারি অ্যান্ড সিনহা’।
মাছি নিয়ে নিরন্তর গবেষণার সূত্রে শুভ্রকান্তি ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে নানা জায়গায় যান। রাজ্য জীববৈচিত্র পর্ষদের অর্থানুকূল্যে একটি প্রকল্পের কাজে গত এপ্রিল মাসে বিজনবাড়িতে গিয়ে নতুন ধরনের মাছিটি নজরে আসে। গবেষণাগারে এনে চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। শুভ্রকান্তি বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত মাছিটি সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি, জার্নালে তার বর্ণনা প্রকাশিত হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ জীবনচক্রের কথা জানতে আরও গবেষণা দরকার।’’
তাঁর বক্তব্য, মাছি নানা রোগের জীবাণু বহন করে। তার জন্য সাবধানতা অবলম্বন করলেই তার ছোঁয়াচ এড়ানো যায়। মাছি পরোক্ষ ভাবে পরিবেশের উপকার করে। যেমন, পরাগ সংযোগে সাহায্য করে। জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় মাছি উপযোগী। এরা বিভিন্ন জৈববস্তুকে মাটিতে মিশে যেতে সাহায্য করে। মাছির লার্ভা খায় পাখি। মাকড়শাও মাছি খায়। অর্থাৎ, খাদ্য-খাদক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও মাছির উপস্থিতি জরুরি।
শুভ্রকান্তি জানান, নতুন প্রজাতির মাছিটি জঙ্গলে থাকে। জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্রে এর গুরুত্ব আছে। জঙ্গলের পচা জৈববস্তু মাটিতে মিশতে সাহায্য করে এদের লার্ভা। আমাদের চারপাশে যে মাছি দেখা যায়, তাদের রং কালচে হয়। নতুন প্রজাতির মাছিটি বাদামি রঙের।
গবেষক দলের বক্তব্য, সারা পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রজাতির মাছি রয়েছে। নতুন প্রজাতির আবিষ্কারে ভবিষ্যতে ছাত্রছাত্রী তথা গবেষকেরা উপকৃত হবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy