Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Fraud

টলি অভিনেতার বিরুদ্ধে চাকরির টোপে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ, আটকে রেখে বিক্ষোভ

আরও টাকা দেওয়ার টোপ দিয়ে বুধবার ওই অভিনেতাকে জাঙ্গিপাড়ায় ডেকে আনা হয়েছিল। সেখানে পৌঁছতেই তাঁকে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ পৌঁছয় সেখানে।

চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণায় অভিযুক্ত অভিনেতা।

চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণায় অভিযুক্ত অভিনেতা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জাঙ্গিপাড়া শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৩৭
Share: Save:

চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগে এ বার নাম জড়াল টলিপাড়ার এক শিল্পীর। ডাকঘর বা খাদ্য দফতরে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে বহু মানুষের টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠেছে মালদহের বাসিন্দা ওই অভিনেতার বিরুদ্ধে। বুধবার তাঁকে নাগালে পেয়ে আটকে রাখেন জাঙ্গিপাড়ার দিলাকাশ গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে মুচলেকা দিয়ে টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েছেন ওই অভিনেতা। তাঁর দাবি, রাজ্যের এক প্রভাবশালী নেতার কথায় বিভিন্ন মানুষের থেকে টাকা তুলতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। ‘প্রতারিত’রা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত তাঁকে যেতে দেবেন না তাঁরা। প্রতারণার কোনও লিখিত অভিযোগ থানায় দায়ের না হলেও গন্ডগোলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছে জাঙ্গিপাড়া থানার পুলিশ।

জাঙ্গিপাড়ার দিলাকাশের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দলুই নামে এক ব্যক্তি দাবি করেছেন, পোস্ট অফিসে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে তাঁর কাছ থেকে ৩ লাখ ১৬ হাজার টাকা নিয়েছেন সায়ন চৌধুরী নামে টলিপাড়ার ওই জুনিয়র শিল্পী। ফেসবুকেই তাঁর সঙ্গে সায়নের পরিচয় হয়। একে অপরের বাড়িতে যাওয়াআসাও শুরু। সেই সূত্রেই সায়ন দমদমের একটি ডাকঘরে চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়েছেন বলে অভিযোগ বিশ্বজিতের। তাঁর আরও দাবি, শুধু তিনিই নন, তাঁর আরও চার বন্ধুর থেকেও টাকা নিয়েছেন সায়ন। বেশ কয়েক জনকে আবার খাদ্য দফতরে চাকরি পাইয়ে দেওয়ারও লোভ দেখানো হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ চাকরি পাননি। বিশ্বজিতের কথায়, ‘‘চাকরি চাইলেই আরও টাকা চাইতেন সায়ন।’’

বিশ্বজিৎ জানান, আরও টাকা দেওয়ার টোপ দিয়েই বুধবার অভিনেতাকে জাঙ্গিপাড়ায় ডেকে আনা হয়েছিল। বিশ্বজিতের বাড়িতে পৌঁছতেই সায়নকে আটকে রাখা হয়। গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে সায়ন জানান, তিনি বাংলা টেলিভিশন ধারাবাহিকে জুনিয়র শিল্পী হিসাবে কাজ করেন। কয়েকটি ধারাবাহিকে কাজও করেছেন। গ্রামবাসীদের থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে অভিনেতার দাবি, রাজ্যের শাসক দলের এক প্রভাবশালী নেতার কথাতেই চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি টাকা তুলেছেন। ওই নেতাই নাকি তাঁকে টলিউডে বড় কাজ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘টালিগঞ্জ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ওই নেতার বড় হাত রয়েছে। ভেবেছিলাম, আমি হয়তো সত্যিই কাজ পাব। তাই এ ভাবে টাকা তুলেছি। এবং ওই নেতার হাতে তুলে দিয়েছি। ওঁর কথা তখন না শুনলে আমার ক্ষতি হয়ে যেতে পারত!’’

যদিও সায়নের এই দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের একটাই বক্তব্য, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, তাঁরা টাকা ফেরত চান। বিশ্বজিতের বাবা দীননাথ দলুই বলেন, ‘‘জমি বন্ধক রেখে টাকা দিয়েছি। এখন দেখছি, পুরোটাই ভুয়ো। আমার টাকা ফেরত চাই।’’ ওই গ্রামেরই বাসিন্দা সুমন কুন্ডুর অভিযোগ, খাদ্য দফতরে চাকরি করে দেবে বলে তাঁর থেকেই ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন সায়ন। তিনিও চাকরি পাননি। সুমনের কথায়, ‘‘আমার কাছ থেকে প্রথমে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা চেয়েছিল। আমি দিতে পারব না বলায় ৩০ হাজার টাকায় রাজি হয়ে গিয়েছিলেন সায়ন। আমার আজই টাকা ফেরত চাই।’’

গ্রামবাসীদের হাতে আটকা পড়ে সায়ন জানিয়েছেন, তিনি বুধবার রাতের মধ্যে টাকার ব্যবস্থা করছেন। তাঁর বাড়ি মালদহে হওয়ায় কিছুটা সময় হয়তো লাগতে পারে। সংবাদমাধ্যমে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমি টাকা জোগাড় করছি। মালদহ থেকে টাকা আসতে কিছুটা সময় তো লাগবেই। আমি সকলের টাকা দিয়ে দেব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Fraud Bengali Film Industry Hooghly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy