এই জমিতেই তৈরি হচ্ছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ছবি: দীপঙ্কর দে
শিল্পায়ন এবং তার হাত ধরে কর্মসংস্থানের উপরে জোর দেওয়ার কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্পপতিদের বার্তা দেওয়া হচ্ছে, এ রাজ্য শিল্পায়নের নিরাপদ জায়গা। এই অবস্থায়, একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শাসক দলের এক নেতার হাতে মার খাওয়ার অভিযোগ তুললেন এক চিকিৎসক। ওই নেতার দাবিমতো টাকা দিতে সম্মত না হওয়াতেই শারীরিক নিগ্রহ করা হয় বলে চিকিৎসকের অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির শিয়াখালায়। অভিযুক্ত সূর্যকান্ত ঘোষাল তৃণমূলের শিয়াখালা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মিন্টু ঘোষ নামে ওই চিকিৎসক। সূর্যকান্ত অভিযোগ মানেননি। পুলিশ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযুক্তকে ধরা হয়নি। চিকিৎসকের বাবা গৌরমোহন ঘোষের অভিযোগ, এফআইআর তুলে নিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ছেলের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। ঘটনার জেরে চিকিৎসক মহলও ক্ষুব্ধ। অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেনতাঁদের একাংশ।
বিষয়টি নিয়ে ফোনে সূর্যকান্তের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মিন্টু ঘোষ নামে কোনও ডাক্তারবাবুকে চিনি না। কে বা কারা কী ভাবে আমার নামে অভিযোগ করেছেন, বলতে পারব না। আরও বিশদে জানতে চাইলে আমার অফিসে আসতে হবে।’’
মিন্টুবাবু জানান, শিয়াখালায় প্রায় ৮ কাঠা জমি কিনে তিনি একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং পলিক্লিনিক তৈরির পরিকল্পনা করেন। জায়গাটি বাস্তু থেকে বাণিজ্যিক জমিতে রূপান্তরের জন্য ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) নিতে তিনি পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করেন। এ জন্য তাঁকে সূর্যকান্তের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ম্যানেজার এবং চালককে নিয়ে শিয়াখালায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে যান ওই চিকিৎসক। তাঁর কথায়, ‘‘উনি বলেন, পার্টি ফান্ডে ২ লক্ষ টাকা দিতে হবে। না দিলে কোনও কাজ করতে পারব না। গালিগালাজ করেন। আমি প্রতিবাদ করলে বাক্বিতণ্ডা হয়। তখনই উনি আমাকে চড়চাপড় মারেন। গলা টিপে ধরেন। গলায় আঁচড়ের দাগ বসে যায়।’’ চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষা করান মিন্টুবাবু। রাতেই চণ্ডীতলা থানায় এফআইআর করেন।
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে শোরগোল পড়েছে। দলের স্থানীয় এক নেতার কথায়, ‘‘ডায়াগনস্টিক সেন্টার হলে সাধারণ মানুষের উপকার হবে। কিছু ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান হবে। চিকিৎসকের সঙ্গে এমন আচরণ দুর্ভাগ্যজনক।’’ জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক (বিধানসভার শিল্প বাণিজ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপার্সন তিনি) তথা তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন ঘটনার তদন্ত করুক। প্রকৃত ঘটনা কী ঘটেছে, আমরা দলগত ভাবেও দেখছি। অভিযোগ সত্যি হয়ে থাকলে, অত্যন্ত অন্যায় কাজ।’’ এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য তথা পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘দু’পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছি। চিকিৎসক আমাকে ঘটনার কথা জানিয়েছেন। দলের সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গেও কথা বলেছি। যা বলার, দলকে বলব।’’
চিকিৎসকের অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধেছে বিরোধীরা। রাজ্য বিজেপি নেতা ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী বড় বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ডাকছেন। অথচ স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে গেলে লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়া হচ্ছে। না দিলে মারধর করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy