Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Firecracker

বাজি কারখানার বিস্ফোরণেই রাজ্যে প্রাণ গিয়েছে ৭০ জনের

দুর্গাপুজোর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে শারদীয় নানা উৎসব। উৎসবের রেশ থাকবে সরস্বতী পুজো পর্যন্ত। উচ্চস্বরে মাইক বাজবে, শব্দবাজি ব্যবহার হবে নিয়ম ভেঙে।

বিকিকিনি: গোঘাটের একটি দোকানে চলছে বাজি বিক্রি। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

বিকিকিনি: গোঘাটের একটি দোকানে চলছে বাজি বিক্রি। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২২ ০৯:২৩
Share: Save:

পৃথিবী জুড়ে শব্দের নিরন্তর খেলা চলছে। শব্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটে শব্দেরই মাধ্যমে। শব্দের সুচারু প্রয়োগ সমস্ত জীবজগতের পক্ষে জরুরি। কিন্তু এই ‘শব্দ’ই ধীরে ধীরে মানুষের কাছে অসহ্য হয়ে উঠছে, আর তা মানুষেরই জন্য। মাইক্রোফোনের অপব্যবহার মানুষকে ‘বাধ্যতামূলক শ্রোতা’-তে পরিণত করল। কারখানার যন্ত্রের আওয়াজ শ্রমিককে বধিরতা উপহার দিল। অবাঞ্ছিত শব্দ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে মানুষ সৃষ্টি করল ‘শব্দদানব’।

এই শব্দদানবের হাত থেকে বাঁচার তাগিদে মানুষই আবার সৃষ্টি করল নানাবিধ আইন। আইনের সুচারু প্রয়োগের পথ প্রশস্ত হল কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি ভগবতীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি নির্দেশের মাধ্যমে। তিনি জানান, মত প্রকাশের স্বাধীনতা যেমন আবশ্যিক। ঠিক তেমনই কোনও কিছু শুনতে না চাওয়াও জীবনের পক্ষে অপরিহার্য। তারপর সবটাই ইতিহাস। শব্দদূষণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ন্যায়ালয়ের এক এর পর এক রায় কেন্দ্রীয় সরকারকে বাধ্য করে বিষয়টি নিয়ে নতুন ভাবে চিন্তা করতে এবং তার ফলস্বরূপ ২০০০ সালে প্রণয়ন করা হয় শব্দদূষণ সংক্রান্ত নতুন আইন।

দুর্গাপুজোর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে শারদীয় নানা উৎসব। উৎসবের রেশ থাকবে সরস্বতী পুজো পর্যন্ত। উচ্চস্বরে মাইক বাজবে, শব্দবাজি ব্যবহার হবে নিয়ম ভেঙে। তবু চেষ্টা করতেই হবে নৈঃশব্দের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে। শব্দদানব এক সময় পশ্চিমবঙ্গের বুকে বোতল বন্দি হয়েছিল কিন্তু সে আবার বোতলের বাইরে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গে ১৯৯৭ থেকে আজ পর্যন্ত ১৪ জন শব্দ শহিদ হয়েছেন। তবে মাত্র একটি ক্ষেত্র ছাড়া দোষীরা কোনও শাস্তি পাননি। দোষীদের দ্রুত শাস্তি ও শব্দশহিদদের ক্ষতিপূরণের জন্য হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা বিচারাধীন।

পশ্চিমবঙ্গের বুকে বহু বেআইনি বাজি কারখানা এখনও চলছে। এমন অনেক কারখানায় বেআইনি বোমাও তৈরি করা হয়। এমন নানা কারখানায় বিস্ফোরণের ফলে কেবলমাত্র এই রাজ্যেই এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭০ জন মারা গিয়েছেন। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের এমনই একটি বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ফলে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তাই মনে হয়, এই রাজ্যে বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। তবু যে কোন পরিস্থিতিতে, যে কোন মূল্যে জারি রাখতে হবে নাগরিক আন্দোলন।

পরিবেশ ও সমাজকর্মী

অন্য বিষয়গুলি:

Firecracker Explosion Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy