Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Under Construction

দু’দশকের বেশি অপেক্ষার পরেও তৈরি হয়নি হাওড়া আদালতের নতুন ভবন

১৯৯৪ সালে হাওড়া আদালতের পুরনো ভবনের একাংশ ভেঙে মৃত্যু হয়েছিল দু’জন কর্মচারীর। সেই ঘটনার ১৭ বছর পরে, ২০১১ সালে ২৪ কাঠা জমির উপরে আদালতের নতুন ভবন তৈরির পরিকল্পনা হয়।

বর্তমানে হাওড়া আদালতে প্রায় তিন হাজার আইনজীবী রয়েছেন। প্রতিদিন আসেন প্রায় ১০ হাজার বিচারপ্রার্থী।

বর্তমানে হাওড়া আদালতে প্রায় তিন হাজার আইনজীবী রয়েছেন। প্রতিদিন আসেন প্রায় ১০ হাজার বিচারপ্রার্থী। ফাইল চিত্র।

দেবাশিস দাশ
হাওড়া শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৫
Share: Save:

দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের প্রশাসনিক অনুমোদন না আসায় অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে হাওড়া আদালতের নতুন ভবন তৈরির কাজ। ওই আদালতের আইনজীবীদের দাবি, ১০তলা ভবনের ছ’টি তলা তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে গত এক বছর ধরে। কিন্তু সেখানে বিদ্যুতের ব্যবস্থা-সহ অন্য পরিকাঠামো না থাকায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না। এই সমস্যার কথা জানিয়ে এবং দ্রুত ১০তলা ভবনটির কাজ শেষ করার জন্য আইনজীবীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারসচিব এবং নবান্নের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারকে চিঠি দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, নতুন ভবনের যে অংশটি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে, অন্তত সেখানকার পরিকাঠামোগত কাজ অবিলম্বে শেষ করে আদালত চালু করার ব্যবস্থা করুক রাজ্য সরকার।

১৯৯৪ সালে হাওড়া আদালতের পুরনো ভবনের একাংশ ভেঙে মৃত্যু হয়েছিল দু’জন কর্মচারীর। সেই ঘটনার ১৭ বছর পরে, ২০১১ সালে ২৪ কাঠা জমির উপরে আদালতের নতুন ভবন তৈরির পরিকল্পনা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, কাজটি হবে দু’টি পর্যায়ে। তার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১০তলা ভবনের ছ’তলা পর্যন্ত কাজ হয়ে পড়ে আছে। আইনজীবীদের বক্তব্য, প্রথম পর্যায়ের কাজের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। ফলে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের অনুমোদন না আসায় প্রথম পর্যায়ের কাজও এগোচ্ছে না। আদালত সূত্রের খবর, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের জন্য ৯ কোটি ৬১ লক্ষ ৭৬ হাজার ৪৫৮ টাকার একটি পরিকল্পনা রাজ্য সরকারের বিচার বিভাগের কাছে পাঠিয়েছিলেন কেএমডিএ-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু বছর ঘুরে গেলেও সেই কাজের অনুমোদন আসেনি।

এই বিষয়ে হাওড়া আদালতের ক্রিমিনাল কোর্ট বার লাইব্রেরির সভাপতি সমীর বসুরায়চৌধুরী বলেন, ‘‘২৮ বছর অপেক্ষা করার পরেও আদালতের নতুন ভবন তৈরি হল না। বর্তমানে সঙ্কীর্ণ আদালত চত্বরে আমাদের কার্যত রাস্তায় বসে কাজ করতে হয়। এই অবস্থা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য দ্রুত নতুন ভবন তৈরির কাজ শেষ করার কথা বলেছি। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে আবেদনও জানিয়েছি।’’

বর্তমানে হাওড়া আদালতে প্রায় তিন হাজার আইনজীবী রয়েছেন। প্রতিদিন আসেন প্রায় ১০ হাজার বিচারপ্রার্থী। সরু জায়গায় বিচার প্রক্রিয়া চলায় এবং প্রচুর সেরেস্তা থাকায় প্রবল সমস্যায় পড়তে হয় আইনজীবী থেকে শুরু করে বিচারপ্রার্থীদের। হাওড়া আদালতে বর্তমানে যে ভবনগুলি রয়েছে, সেগুলি অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ। আদালতে ঢোকার রাস্তায় প্রচুর গাড়ি ও মোটরবাইক থাকায় হাঁটাচলা করার কার্যত কোনও জায়গা থাকে না। তার উপরে আদালত চত্বরে রয়েছে বহু খাবারের দোকান ও হোটেল। সব মিলিয়ে সারা দিন জায়গাটিআরও ঘিঞ্জি হয়ে থাকে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন ভবনতৈরি হলে সেখানে চার জন বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত থেকে শুরু করে আইনজীবীদের সেরেস্তা— সবই থাকবে। তাই প্রত্যেকেই চাইছেন, দ্রুত নতুন ভবন তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হোক।

এই প্রসঙ্গে রাজ্য পূর্ত দফতরের এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার স্বপন দাস বলেন, ‘‘পূর্ত দফতর থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের খরচের হিসাব অর্থ দফতরে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন এলেই কাজ শুরু হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Under Construction Howrah Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy