Advertisement
E-Paper

চাকরি বাতিলে প্রকল্প রূপায়ণ নিয়েও আশঙ্কা

প্রধান শিক্ষকদের প্রশ্ন, যে সব স্কুল থেকে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডির চাকরি বাতিল হয়েছে সেই সব স্কুলগুলিতে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের এই সব প্রকল্প কী ভাবে বাস্তবায়িত হবে?

— প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:১৩
Share
Save

কন্যাশ্রী থেকে শুরু করে তরুণের স্বপ্ন, শিক্ষাশ্রী, ঐক্যশ্রী— তালিকাটা দীর্ঘ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানা প্রকল্প রূপায়ণের জন্য ভরসা গ্রুপ সি কর্মীরা। সেই কাজে সহায়তা করেন গ্রুপ ডি কর্মীরাও। এসএসসি-র ২০১৬-র প্যানেলের সমস্ত গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরি বাতিলের রায় বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। এর পরেই প্রধান শিক্ষকদের প্রশ্ন, যে সব স্কুল থেকে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডির চাকরি বাতিল হয়েছে সেই সব স্কুলগুলিতে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের এই সব প্রকল্প কী ভাবে বাস্তবায়িত হবে? গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের প্রশ্ন, পড়ুয়াদের স্বার্থ দেখার জন্য শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে বলা হল। তাঁরা কি পড়ুয়াদের স্বার্থ দেখেন না?

প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের মামলায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আবেদনে বলেছিল, স্কুলগুলি থেকে ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি রাতারাতি বাতিল হয়ে গেলে পঠনপাঠন ব্যহত হবে। তাই আগামী শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত বা নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত যারা দাগি বা অযোগ্য বলে চিহ্নিত হননি, তাঁদের স্কুলে যেতে অনুমতি দেওয়া হোক। এই আবেদনে সাড়া দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, যাঁরা দাগি নন সেই শিক্ষকেরা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারেন। কিন্তু গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীরা তা পারবেন না। এর পরই কার্যত ভেঙে পড়েছেন ওই গ্রুপ সি গ্রুপ ডি কর্মীরা। মিত্র ইনস্টিটিউশন ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রকল্পগুলিতে একজন নোডাল শিক্ষক থাকেন ঠিকই, কিন্তু তিনি শুধু বিষয়টি দেখভাল করেন। প্রকল্পগুলির রূপায়ণের কাজ গ্রুপ সি কর্মীরা করেন। ধরা যাক, তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে যাঁরা মোবাইল পাওয়ার যোগ্য, সেই সব পড়ুয়ার থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে সেই অ্যাকাউন্ট নম্বর ঠিক আছে কিনা দেখে পোর্টালে তোলা, কোনও কারণে তাঁদের টাকা না এলে জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে গিয়ে কেন এল না সেই নিয়ে খোঁজখবর করা, সবটাই ওঁরা করেন। গ্রুপ ডি কর্মীরা এই সব প্রকল্প রূপায়ণের জন্য গ্রুপ সি কর্মীদের সাহায্য করেন।” কয়েক জন প্রধান শিক্ষক জানান, শুধু তো স্কুলে ঘন্টা বাজানো বা স্কুল খোলা-বন্ধ করাই নয়, স্কুলের প্রশাসনিক কাজের অনেকটাই ওঁরা করেন। স্কুলে যে ল্যাবরেটরি আছে সেই সব ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্টের কাজ করেন এই গ্রুপ ডি কর্মীরা। ল্যাবরেটরিগুলির দেখভাল এবার কারা করবেন?

দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি স্কুলের এক চাকরিহারা গ্রুপ ডি কর্মী সুদাম মণ্ডল বলেন, “পড়ুয়াদের জন্য অনেক রকমের প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রকল্পগুলির যে অনুদান আসে তার হিসাব স্কুল ইনস্পেক্টরকে দেওয়া, জেলা স্কুল পরিদর্শককে দেওয়া সহ অজস্র কাজ আমাদের গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের করতে হয়। প্রধান শিক্ষক মাথার উপরে থাকেন ঠিকই, কিন্তু কাজটা আমরাই করি।”

ওয়াই চ্যানেলে বসে থাকা কয়েক জন চাকরিহারা গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি কর্মী বলেন, “ধরা যাক কন্যাশ্রী প্রকল্প। যারা প্রকল্পে টাকা পাবে, সেই ছাত্রীদের থেকে সব তথ্য যেমন তাদের আধার কার্ড, ব্যাঙ্কের নথি নিয়ে অনলাইনে আমাদেরই ফর্ম ফিলআপ করতে হয়। এই কাজ কে করবে?” গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি-র চাকরিহারা কর্মীরা এ দিন পার্ক সার্কাস থেকে মিছিল করে তৃণমূল ভবনে যান। পরে তাঁরা দাবি করেন, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু তাঁদের আলেছেন, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bengal SSC Recruitment Case West Bengal government Mamata Banerjee Group C Group D Staff

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}