Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Indian Railways

Elephant Platform: ট্রেনে ঘোড়া উঠেছে তো কী হয়েছে? ভাড়া দিয়ে উঠতে পারে উট, হাতির মতো বড় প্রাণীও

এই বাংলাতেও ট্রেনে হাতি তোলার রেওয়াজ ছিল। শিয়ালদহ-বনগাঁ রুটের গোবরডাঙা স্টেশনেই লোক মুখে রয়ে গিয়েছে ‘এলিফ্যান্ট’ প্লাটফর্ম।

ভিড়ের মধ্যেই ছুটন্ত ট্রেনে নিশ্চল দাঁড়িয়ে ঘোড়াটি। নিজস্ব চিত্র।

ভিড়ের মধ্যেই ছুটন্ত ট্রেনে নিশ্চল দাঁড়িয়ে ঘোড়াটি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২২ ১২:০৬
Share: Save:

আস্তাবলের ঘ্রাণ ভেসে এসেছে লোকাল ট্রেনের কামরায়। বৃহস্পতিবার রাতের ডায়মন্ড হারবার লোকালে ভিড়ের মধ্যেই যাত্রীদের গায়ে গা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল ঘোড়া। ছুটন্ত ট্রেনে তার নিশ্চল দাঁড়িয়ে থাকার ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। নানা জনে নানা প্রশ্ন তুলছেন। গ্রেফতার হয়েছেন ওই ঘোড়ার মালিক। কিন্তু অনেকেরই জানা নেই যে, ভারতীয় রেলে পশুদের তোলার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। পোষা কুকুর, বিড়াল তো বটেই সেই সঙ্গে ঘোড়া, উট, হাতির মতো বড় প্রাণীও ট্রেনে তোলার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। প্রাণীর জাত এবং ওজন অনুযায়ী ভাড়াও নির্দিষ্ট রয়েছে। সেই সব নিয়মের তোয়াক্কা না করে লোকাল ট্রেনে ঘোড়া তুলে অবশ্য সঠিক কাজ করেননি গফুর আলি মোল্লা।

এখন সে ভাবে প্রয়োজন না থাকলেও এই বাংলাতেও ট্রেনে হাতি তোলার রেওয়াজ ছিল। শিয়ালদহ-বনগাঁ রুটের গোবরডাঙা স্টেশনেই লোক মুখে রয়ে গিয়েছে ‘এলিফ্যান্ট’ প্লাটফর্ম। জানা যায় গোবরডাঙার জমিদার বংশের সংগ্রহে ছিল বিভিন্ন দেশের হাতি। শোনা যায়, জমিদাররা একবার ট্রেনে চাপিয়ে হাতি পাঠিয়েছিলেন এখন বাংলাদেশের খুলনায়।

বৃহস্পতিবার ডায়মন্ডহারবার লোকালে ঘোড়া।

বৃহস্পতিবার ডায়মন্ডহারবার লোকালে ঘোড়া।

ভারতীয় রেল আইনের ৭৭-এ ধারায় ঠিক করা রয়েছে পশুদের জন্য নির্ধারিত বগিতে নিয়ে যাওয়া যায়। তার জন্য আলাদা আলাদা ভাড়াও। যেমন কুকুরের জন্য ৩০ টাকা ভাড়া। একই ভাড়া ছাগল, ভেড়া, গাধা, বাঁদর কিংবা বিভিন্ন পাখির সফরের ক্ষেত্রে। গরু, মহিষের মতো শিংওয়ালা প্রাণী হলে ভাড়া ২০০ টাকা। এই তালিকাতেই পড়ে উট, খচ্চর। তবে ঘোড়ার ভাড়া অনেকটাই বেশি। ৭৫০ টাকা। আর হাতি হলে তারও দ্বিগুণ দেড় হাজার টাকা। এখনকার বাজারদর অনুযায়ী ভাড়ার অঙ্ক অনেকটাই কম। কারণ, এই আইন ১৯৭৮ সালের। আরও একটা বিষয় ঠিক করে দেওয়া রয়েছে যে, সফরের সময় পশুদের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হলে তার দায় নেয় না রেল। সেটা আবার বলা রয়েছে নিয়মের ১৫৩ ধারায়।

সাধারণ ভাবে অবশ্য যাত্রীরা পোষ্য কুকুরকেই সঙ্গে করে নিয়ে যান বেশি। আর কুকুরের ক্ষেত্রে নিয়ম অনেক বেশি স্পষ্ট। কেউ চাইলে নিজের সঙ্গেই রাখতে পারেন পোষ্য ছোট বা বড় আকারের ল্যাব্রেডর, বক্সার, জার্মান শেপার্ড ইত্যাদি সারমেয়কে। তবে সেটা হতে হবে বাতানুকুল কিংবা সাধারণ প্রথম শ্রেণি। তবে গোটা বগিটাই ওই যাত্রীকে ভাড়ায় নিয়ে নিতে হবে। আবার অন্য যাত্রীরা অভিযোগ না করলে ছোট মাপের কুকুর সঙ্গে নিয়ে সফর করা যায়। কিন্তু অন্য যাত্রীরা আপত্তি জানালে বা অভিযোগে বিরক্তি প্রকাশ করলে জানালে পোষ্যটিকে রেল গার্ডের ভ্যানে পাঠিয়ে দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে পোষ্যের ভাড়ার অর্থ ফেরত দেওয়া হয় না। তবে মনে রাখতে হবে এসি স্লিপার ক্লাস, এসি চেয়ার কার, সাধারণ স্লিপার ক্লাস, সেকেন্ড এসি ক্লাসে কুকুরের প্রবেশ নিষেধ। ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে কুকুরটিকে ব্রেক ভ্যানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

কুকুরের জন্য বুকিং করতে যাত্রীকে পার্সেল অফিসে যোগাযোগ করতে হয়। ছোট কুকুরের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বাক্স পাওয়া যায়। কুকুরের ওজন এবং আকার বুঝে বাক্সের দাম নির্ধারণ করা হয়। ন্যূনতম দাম ১০ টাকা। বড় আকারের কুকুরকে অবশ্য ডগ বক্সে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয় না। তাকে ব্রেক ভ্যানেই যেতে হয়। একটি ঘোড়ার ক্ষেত্রে যা নিয়ম, বড় আকারের কুকুরের ক্ষেত্রেও তাই। আর ভাড়া না দিয়ে পোষ্যকে ট্রেনে তুললে ছয় গুণ পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে। সেই সঙ্গে মনে রাখা দরকার যে, কুকুরের খাবার থেকে জলের ব্যবস্থা মালিককেই করতে হয়।

ট্রেনে কুকুর নিয়ে ভ্রমণের আরও একটি কড়া নিয়ম রয়েছে। যদি প্রথম শ্রেণির বগিতে কোনও মহিলা ১২ বছর বয়সের নীচের একটি শিশুর সঙ্গে ভ্রমণ করেন, তবে তিনি ডগ বক্সে একটি পোষ্য কুকুর সঙ্গে নিতে পারেন। তবে একটা শর্ত রয়েছে। ওই বগিতেই যদি অন্য কোনও মহিলা যাত্রী একা সফর করেন তবে সেই মহিলার অনুমতি বাধ্যতামূলক।

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railways Sealdah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE