শুক্রবার সকাল থেকে থমথমে সন্দেশখালি। — নিজস্ব চিত্র।
শাহজাহান শেখ বিরোধী বিক্ষোভে বৃহস্পতিবার দিনভর উত্তপ্ত থেকেছে সন্দেশখালি। শাহজাহানের গ্রেফতারি চেয়ে পথে নেমেছিলেন সন্দেশখালির মহিলারা। শুক্রবার সকালে দেখা গেল, এলাকা থমথম করছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় সন্দেশখালির চেহারা কিছুটা অন্য রকম। খুব বেশি দোকানপাটও খোলেনি। অশান্তি এড়াতেই খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বেরোচ্ছেন না মানুষ।
বৃহস্পতিবার এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে দুই তরফের মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সে দিনই তাঁদের বসিরহাট আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত তাঁদের তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। বৃহস্পতিবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে এবং শাহজাহানের গ্রেফতারি চেয়ে শুক্রবার সন্দেশখালি থানায় ডেপুটেশন জমা দেওয়ার কথা সিপিএমের।
সন্দেশখালি থানায় দু’টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। একটি এফআইআর করা হয়েছে খোদ ‘অভিযুক্ত’ শিবু হাজরার অভিযোগের ভিত্তিতে। বিক্ষোভকারী ১১৭ জন মহিলার বিরুদ্ধে ভাঙচুর, খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। এ ছাড়া, ওই একই থানাতে বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীরা একটি এফআইআর করেছেন। তাতে শিবু, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে গিয়েছিল ইডি। সে দিন থেকেই তৃণমূল নেতা ‘নিখোঁজ’। ইডি তাঁর নাগাল পায়নি এখনও। সে দিন ইডিকে মার খেতে হয়েছিল শাহজাহানের ডেরায়। পরে অবশ্য আর এক দিন তাঁর বাড়িতে গিয়ে তালা ভেঙে তল্লাশি চালিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তবে উল্লেখযোগ্য কিছু বাড়ি থেকে পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে ইডি শাহজাহানকে দু’বার তলব করেছে। তিনি দু’বারই হাজিরা এড়িয়েছেন। যদিও আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছেন একাধিক বার।
গত এক মাসের বেশি সময় ধরে শাহজাহানের খোঁজ নেই। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার তাঁর এবং ব্লক সভাপতি শিবু, তাঁর ঘনিষ্ঠ উত্তমদের গ্রেফতারির দাবিতে বিক্ষোভ দেখা যায় সন্দেশখালির রাস্তায়। নেতৃত্বে ছিলেন মূলত মহিলারা। তাঁরাও নিজেদের তৃণমূলের সমর্থক বলেই দাবি করেছেন। জানিয়েছেন, দলের নাম ভাঙিয়ে শাহজাহান এবং তাঁর দলবল এলাকায় অত্যাচার চালান। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে গ্রামবাসীদের। তাই তাঁরা এ বার রুখে দাঁড়িয়েছেন। শাহজাহানের গ্রেফতারির দাবিতে থানাও ঘেরাও করা হয়েছিল। রাস্তার উপর বাঁশ, লাঠি, হাতা, খুন্তি হাতে বসে পড়েছিলেন মহিলারা।
বিক্ষুব্ধদের দাবি, শাহজাহান এলাকাতেই আছেন। পুলিশই তাঁকে নিরাপত্তা দিচ্ছে! তাঁর বিরুদ্ধে জমি দখল থেকে শুরু করে এলাকায় জুলুম, অত্যাচারের একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের। মাসখানেক আগে শাহজাহানের সমর্থনেই ইডির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ রূপ দেখা গিয়েছিল এই সন্দেশখালিতে। শাহজাহানের অনুগামীরা ইডি আধিকারিকদের উপর হামলে পড়েছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল কয়েক জনকে। এক মাসের ব্যবধানে সন্দেশখালির ভিন্ন রূপ দেখছে বাংলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy