অভিযোগ উঠেছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত মিনিবাসটির চাকা রিসোল করা ছিল। ফাইল চিত্র।
মেয়ো রোডের মিনিবাস দুর্ঘটনা জোর ধাক্কা দিয়েছে পরিবহণ দফতরকে। কী ভাবে প্রাথমিক শর্তগুলি পূরণ না করেই বাসটি কলকাতার রাস্তায় চলাচল করছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তার পরেই রাজ্যজুড়ে অসংখ্য বাস পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের নজর এসেছে, যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই। তাই এ বার ঠিক কত সংখ্যক বাস বৈধ নথি ছাড়া শহর কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় চলছে তা জানতে চাইছে পরিবহণ দফতর। গত শনিবার হাওড়া-মেটিয়াবুরুজ রুটের মিনিবাসটি বেপরোয়া গতিতে চলতে গিয়ে মেয়ো রোডের কাছে উল্টে যায়। সেই ঘটনায় মারা গিয়েছেন দু’জন। গুরুতর আহত হয়ে আরও তিন জন হাসপাতালে ভর্তি। তার মধ্যে রয়েছে ১৬ বছরের এক কিশোর। এই ঘটনার পরেই শহরে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া চলাচল করা যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ।
অভিযোগ উঠেছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত মিনিবাসটির চাকা রিসোল করা ছিল। ব্রেক প্যাড প্রায় ক্ষয়ে গিয়েছিল। বাসটির স্টিয়ারিংয়েও একাধিক সমস্যা ছিল বলে জানতে পেরেছে পরিবহণ দফতর। তাই এমন একটি বাসকে রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া কী ভাবে রাস্তায় নামানোর ঝুঁকি নেওয়া হয়েছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাই নতুন করে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া এবং রাস্তার নামার প্রাথমিক শর্তপূরণ না করা বাসগুলিকে এ বার চিহ্নিত করতে চাইছে পরিবহণ দফতর।
এই কাজে নেমে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে চলাচলকারী বৈধ বাসের যে পরিসংখ্যান উঠে এসেছে, তাতে চোখ কপালে উঠেছে পরিবহণ কর্তাদের। পরিবহণ দফতরের নথি অনুযায়ী, শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে চলাচলকারী সমস্ত জায়গাতেই যাত্রী নিয়ে চলছে অসংখ্য অবৈধ বাস। বেসরকারি বাস, মিনি বাস তো বটেই, কিছু ক্ষেত্রে সরকারি বাসও বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই চলছে। বিষয়টি পরিবহণ কর্তাদের নজরে এসেছে। কোনওটির ফিটনেস সার্টিফিকেটের (সিএফ) মেয়াদ শেষ হয়েছে। কোনওটির আবার দূষণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কাগজপত্রের বৈধতা ফুরিয়ে গিয়েছে দীর্ঘ দিন। কিন্তু, সেই সিএফ বা দূষণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কাগজপত্র নবীকরণ করার প্রয়োজন বোধ করেননি বাসমালিকেরা। তবে সমস্ত বাসের বৈধ কাগজপত্র নেই এমনটা নয়। অনেকে আবার যথা সময়ে বাস চালানোর সমস্ত শর্তপূরণ করিয়ে রেখেছেন। কিন্তু তাঁদের ক্ষেত্রে আবার রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে অভিযোগ নজরে এসেছে পরিবহণ দফতরের। বাস চালানোর ন্যূনতম নিয়ম এবং বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বাস মালিকদের বাস চালানোর প্রবণতা নিয়ে চিন্তায় দফতরের কর্তারা। পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘শহর-শহরতলি বা জেলায় কত সংখ্যায় বাস বৈধ কাগজপত্র ছাড়া চলছে, তা জানার পরেই পরিবহণ দফতর পাকাপাকি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।’’ এ প্রসঙ্গে সিটি সার্বাবন বাস সার্ভিসেসের তরফে টিটু সাহা বলেন, ‘‘ধরপাকড় হয়ে কী হচ্ছে? জরিমানা করেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। সিএফ তো আর করা হচ্ছে না। ধরপাকড় বা জরিমানাই একমাত্র পথ নয়। এই কাজে পরিবহণ দফতর, পুলিশ প্রশাসন বাস মালিকদের সহযোগিতার ভিত্তিতে চলতে হবে। তাতে বার বার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করেই এর সমাধান করতে হবে। আর দুর্ঘটনা যে কোনও সময়, যে কোনও পরিস্থিতে ঘটতে পারে। আমরা কারও পক্ষ নিচ্ছি না, যে কোনও দুর্ঘটনাই দুঃখজনক। তবে ভুল থেকে আমাদের সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy