Advertisement
E-Paper

গৃহবধূরা বেকার নন! বিনা বেতনের সংসারের কাজও বেতন পাওয়ার যোগ্য, বলল কলকাতা হাই কোর্ট

১৫ বছরের পুরনো একটি ঘটনা নিয়ে মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টে। বৃহস্পতিবার সেই মামলা উঠেছিল বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের বেঞ্চে। তিনিই মামলার রায় দেওয়ার সময় পর্যবেক্ষণে ওই মন্তব্য করেন।

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:৫৬
Share
Save

সংসারের জোয়াল ঠেলে কেটে যায় সকাল থেকে সন্ধ্যা। দিন-মাস-বছরও। বয়স বাড়ে, মন্থর হয়ে আসে কাজের গতি। তার পরও কেউ জানতে চায় না, হাড়ভাঙা ওই পরিশ্রমের পারিশ্রমিক কী? যিনি শ্রম দিচ্ছেন, তাঁর পরিশ্রমের মূল্য কতটা? বৃহস্পতিবার একটি মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্ট বলল, গৃহবধূদের বেকার বলা যাবে না। তাঁরাও স্বোপার্জনকারী। সংসারে তাঁরা দিবারাত্রি যে কাজ করেন, তার মূল্য রয়েছে।

১৫ বছরের পুরনো একটি ঘটনা নিয়ে মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টে। বৃহস্পতিবার সেই মামলা উঠেছিল বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের বেঞ্চে। তিনিই মামলার রায় দেওয়ার সময় পর্যবেক্ষণে ওই মন্তব্য করেন।

গৃহবধূদের উপার্জন প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, ‘‘কে বলেছে, গৃহবধূরা বেকার? সংসারে গৃহবধূদের অবদান অনেক বড়। তাঁরা কোনও ছুটি না নিয়ে ৩৬৫ দিন সংসারের যাবতীয় কাজ করেন। একই কাজ অন্য কাউকে দিয়ে করালে যে খরচ হত, তা ব্যয় করতে হয় না ওঁদের দৌলতেই। তাই সংসারে ওঁদের কাজের আর্থিক মূল্যও রয়েছে। আর সেই জন্যই গৃহবধূদের বেকার বলা যাবে না। তাঁদেরকেও উপার্জনকারী হিসাবেই দেখতে হবে।’’

বৃহস্পতিবার এই মর্মে এক গৃহবধূর মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ টাকা দেওয়ার নিদান দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।

পথ দুর্ঘটনায় ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছিল ২০০৮ সালের এপ্রিলে। বর্ধমানের ক্ষীরগ্রামে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাস ধরতে এসেছিলেন মহিলা। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডের সামনেই তাঁকে পিষে দিয়ে চলে যায় একটি বাস। এই ঘটনায় বর্ধমানের মোটর অ্যাকসিডেন্ট ক্লেম ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন তাঁর পরিবার। ক্ষতিপূরণ হিসাবে দাবি করেন ছ’লক্ষ টাকা। কিন্তু যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা, সেই সংস্থা এই দাবি মানতে চায়নি।

বর্ধমানের ওই পরিবারটিকে ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেয় সংস্থাটি। পাল্টা ওই গৃহবধূর পরিবার হাই কোর্টে মামলা করেন। তাঁদের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। তিনি ২০০৮ সাল থেকে ওই গৃহবধূর সম্ভাব্য উপার্জনের হিসাব দিয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। অন্য দিকে, সংস্থার তরফে বলা হয়, যিনি মৃত, তিনি কোনও উপার্জন করতেন না। তিনি এক জন গৃহবধূ। তবে তাঁর সম্ভাব্য উপার্জন হিসাবে এত টাকা চাওয়া হয় কী করে!

বৃহস্পতিবার এই মামলারই শুনানিতে আদালত নির্দেশ দিয়েছে মৃত গৃহবধূর পরিবারকে ৬ লক্ষ ৪১ হাজার ২০০ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দিতে হবে। ওই গৃহবধূর প্রতি মাসের সম্ভাব্য বেতন ৩০০০ টাকা হিসাবে ধরে তার উপর সুদের হার হিসাব করেই এই টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আদালত। তবে যে হেতু ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫০০ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে, তাই বাকি আরও ৪ লক্ষ ৫১ হাজার ৭০০ টাকা দিতে হবে সংস্থাটিকে।

Calcutta High Court homemaker

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}