ভূগর্ভস্থ জলে টান পড়েছে, দেশের এমন ২৫৬টি জেলাকে চিহ্নিত করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার— যার মধ্যে রাজ্যের হুগলি জেলাও রয়েছে। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রক এই সব জেলার প্রতিটির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের এক জন করে অফিসারকে ‘প্রভারী’ বা দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার হিসেবে নিয়োগ করে মাঠে নামছে। জেলা প্রশাসন দু’জন করে অফিসারকে মনোনীত করবে। এক জন করে নোডাল অফিসার রাজ্যগুলিতেও থাকবেন। মন্ত্রকের বক্তব্য, এমন নয় যে গোটা জেলাতেই ভূগর্ভস্থ জলের টান রয়েছে। হুগলির ক্ষেত্রে যেমন একটি ব্লকে টান রয়েছে। যার অর্থ, যত ভূগর্ভস্থ জল তোলা হচ্ছে, তার চেয়ে কম জল সঞ্চিত হচ্ছে।
জল নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা মাথায় রেখেই আজ থেকে মোদী সরকার ‘জলশক্তি অভিযান’ শুরু করেছে। প্রথম পর্যায়ে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৫৬টি জেলায় জল সংরক্ষণ নিয়ে প্রচার অভিযান চলবে। আগের জমানায় যে ভাবে ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-কে সামাজিক আন্দোলনের চেহারা দেওয়া হয়েছিল, এ বার জল সংরক্ষণকেও একই চেহারা দেওয়ার চেষ্টা হবে। মোদী গত কাল ‘মন কি বাত’-এ জল সরংক্ষণের কথা বলেছিলেন। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত বলেন, ‘‘একে গণআন্দোলনের চেহারা দেওয়া জরুরি। মানুষের মনোভাব, অভ্যাস বদলাতে হবে। জলের অপচয় বন্ধ করতে হবে। কৃষিতে নজর দিতে হবে। কারণ ৮৯% জলই চাষে ব্যবহার হয়।’’
নীতি আয়োগ জানিয়েছিল, ২০২০-তেই দেশের ২১টি বড় শহরে ভূগর্ভস্থ জল প্রায় শেষ হয়ে যাবে। জলশক্তি মন্ত্রী অবশ্য বলছেন, নীতি আয়োগ যতটা বলেছে, সঙ্কট ততটা গভীর নয়। তবে ভূগর্ভস্থ জল কমছে। ১৯৫১-তে বছরে মাথাপিছু ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ ছিল ৫,১৭৭ ঘনমিটার। ২০১১-য় তা নেমে এসেছে ১,৫৪৫ ঘনমিটারে। ২০২৫-এ তা ১,৩৪১ ঘনমিটারে নেমে যাবে। চিন্তার কারণ হল, ভারতে চাষের জন্য আমেরিকা, চিন, ইজরায়েলের ৩ থেকে ৫ গুণ বেশি জল ব্যবহার হচ্ছে।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, এর আগে স্বচ্ছ ভারত-এ মোদী নিজে ঝাড়ু হাতে রাস্তা সাফাইয়ে নামলে কংগ্রেস তা দেখনদারি বলে কটাক্ষ করেছে। কিন্তু মোদী সরকারি প্রকল্পকে গণ-আন্দোলনের মোড়ক দিয়ে জনমানসে প্রভাব ফেলেছেন। যার ফায়দা মিলেছে ভোটে। আজ তাই কংগ্রেসও জলের সঙ্কটকে বাস্তব সমস্যা হিসেবে তুলে ধরে মাঠে নেমেছে। এ নিয়ে রাজনীতি করতে গেলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে হবে বুঝে সকালে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা, তার পরে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা এবং সংসদে জয়রাম রমেশ জলের সঙ্কট নিয়ে সরব হয়েছেন। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, বুন্দেলখণ্ড-সহ দেশের বড় অংশে জলের সমস্যাকে ‘জাতীয় দুশ্চিন্তার বিষয়’ আখ্যা দিয়ে প্রিয়ঙ্কার বক্তব্য, ‘সবাই মিলে দ্রুত এর সমাধান বার করতে হবে।’ কংগ্রেস অবশ্য বড়াই করতে পারে যে মোদী সরকারের ‘জলশক্তি অভিযান’-এ জল সংরক্ষণ, পুরনো জলাধারগুলির পুনরুজ্জীবন, জল ধরে রাখার পরিকাঠামো তৈরির কাজের সিংহ ভাগই হবে একশো দিনের কাজ বা মনরেগা প্রকল্পে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy