Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Hilsa

Hilsa: বিশেষ উদ্যোগ, ইলিশের গায়ে চিহ্ন দিয়ে ছাড়া হচ্ছে উজানে

বিশ্বের যে ১১টি দেশে ইলিশ উৎপাদন হয়, বাংলাদেশ তার মধ্যে শীর্ষস্থানে। মাত্র ৪ বছর আগে বাংলাদেশ ইলিশের জোগান দিত বিশ্বের ৬৫ শতাংশ। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৮৬ শতাংশ।

ইলিশ ছাড়া হচ্ছে গঙ্গায়।

ইলিশ ছাড়া হচ্ছে গঙ্গায়। নিজস্ব চিত্র।

বিমান হাজরা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৫১
Share: Save:

ফরাক্কায় গঙ্গার উজানে ইলিশ সংরক্ষণে জোর দিল সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট।

ফরাক্কায় গঙ্গার মূল ধারার যেখানে যেখানে ইলিশ ডিম পাড়ে, সেই এলাকা সংরক্ষণই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। সেই সঙ্গে তারা দেখতে চায়, ইলিশ উত্তরে নদী পথ বেয়ে কত দূর যেতে পারে। যে কারণে, ছোট ছোট ইলিশ মাছ ধরে, তার গায়ে চিহ্ন দিয়ে তাকে খুব যত্নের সঙ্গে বাঁচিয়ে রেখে গঙ্গার উত্তর দিকে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ইলিশ জল থেকে তুললে খুব অল্প ক্ষণ বাঁচে। তাই খুবই যত্ন লাগে এই কাজে। এ বার, সেই চিহ্নিত ইলিশ যদি নদীর উত্তর দিকের কোনও জায়গায় কোনও মৎস্যজীবীর হাতে পড়ে, তা হলে ইলিশের গতিবিধি বোঝা যাবে। সে জন্য মৎস্যজীবীদের চিহ্নিত ইলিশ প্রতি দু’শো টাকা করে পুরস্কারও দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ইনস্টিটিউটের এক কর্তা সঞ্জীবকুমার জানান, ইতিমধ্যেই প্রায় আড়াইশো এমনই চিহ্নিত ইলিশ ধরা পড়েছে গঙ্গার উজানের বিভিন্ন এলাকা থেকে।

বিশ্বের যে ১১টি দেশে ইলিশ উৎপাদন হয়, বাংলাদেশ তার মধ্যে শীর্ষস্থানে। মাত্র ৪ বছর আগে বাংলাদেশ ইলিশের জোগান দিত বিশ্বের ৬৫ শতাংশ। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৮৬ শতাংশ। তুলনায় ইলিশ উৎপাদনে ভারত ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ৫ বছর আগে ভারতে ইলিশের উৎপাদন ছিল বিশ্বের মোট উৎপাদনের ২৫ শতাংশ। সে উৎপাদন বর্তমানে কমে দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশে। ইলিশ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, খোকা ইলিশ ধরার ফলেই ইলিশের এই সঙ্কট। তাই নমামী গঙ্গে প্রকল্পের মাধ্যমে ইলিশ নিয়ে ফরাক্কা থেকে ইলাহাবাদ পর্যন্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা বাড়াতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।

সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ফরাক্কার পর থেকে উজানে ইলিশের প্রজনন এখন প্রায় বন্ধ। ফরাক্কা ব্যারাজ টপকে গঙ্গার উজানে ইলিশ আর ঢুকতে পারছে না। অথচ ফরাক্কা ব্যারাজ চালু হওয়ার আগে ইলাহাবাদ পর্যন্ত প্রচুর ইলিশ পাওয়া যেত। নদীর উজানে ব্যাপক পলি, নদী দূষণ এবং নির্বিচারে খোকা ইলিশ ধরার ফলে ফরাক্কায় ইলিশের পরিমাণ একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। তাই ফরাক্কায় গঙ্গায় নির্দিষ্ট এলাকাগুলিকে ডিম পাড়ার উপযোগী করে তুলে সংরক্ষণ করে গঙ্গায় ইলিশের সংখ্যা বাড়ানোর এই চেষ্টা ।

ফরাক্কায় ইতিমধ্যেই ২৫০ মিটার লম্বা ও প্রায় ২৬ মিটার চওড়া একটি নতুন নেভিগেশনাল লকগেট তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। পুরোনো লকগেটটি চালু হয় ১৯৭৮ সালে। তারপর থেকেই উজানে ইলিশের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, নতুন নেভিগেশনাল লকগেট চালু হয়ে গেলে উজানে ইলাহাবাদ পর্যন্ত ইলিশের জোগান বাড়বে। ডিম পাড়ার সম্ভাবনাও তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মৎস্য বিশেষজ্ঞ এ কে সাহু জানান, ‘‘ফরাক্কায় ইলিশ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়েছে। ডাউন স্ট্রিমে গঙ্গা থেকে ইলিশ ধরে বিশেষ ব্যবস্থায় ট্যাগিং করে তা ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে আপ স্ট্রিমে। তার গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে। এতে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hilsa The Ganges Murshidabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy