প্রতীকী ছবি।
উপায় ছিল মূলত দু’টো। গ্রীষ্মাবকাশ বা পুজোর ছুটি অথবা দু’টিই কমিয়ে এনে পাঠ্যক্রম যথাসম্ভব শেষ করার চেষ্টা চালানো। অথবা করোনাকালের মতো পাঠ্যক্রম ছাঁটাই করা। শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, গরমের ছুটি এগিয়ে ও বাড়িয়ে ৪৫ দিন করায় আগামী বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা পাঠ্যক্রম শেষ করার সময় পাবে কি না, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে ওঠা সত্ত্বেও গরমের ছুটি কমানে হয়নি। বাকি শুধু পুজোর ছুটি। সেটাও যদি পুরো মাত্রায় বহাল থাকে, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম শেষ করা যাবে কী ভাবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সমস্যার সুরাহায় ছুটি কমানোর পথ ধরলেও অন্য জটিলতার আশঙ্কা আছে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষা জগতের অনেকে। পাঠ্যক্রম সংক্ষিপ্ত করলে এখনকার মতো সমস্যা মিটলেও পুরো পাঠ অধিগত না-থাকায় উচ্চশিক্ষা পর্বে সঙ্কটে পড়বে ছাত্রছাত্রীরাই।
এই অবস্থায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ যে অন্য বোর্ডগুলির দিকে তাকিয়ে আছে, সংসদ-সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের বক্তব্যে সেটা পরিষ্কার। তিনি বলেন, “পাঠ্যক্রম সংক্ষিপ্ত হবে কি না, তা এখনও ঠিক হয়নি। অন্যান্য বোর্ড কী করবে, বিশেষ করে সিবিএসই এবং সিআইএসসিই পাঠ্যক্রম কমায় কি না, তার উপরে নজর রাখা হচ্ছে।”
শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, যদি পুরো পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে পরীক্ষা হয়, সব থেকে বেশি আতান্তরে পড়বে আগামী বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার ফল বেরিয়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠার পরে পাঠ্যক্রম শেষ করার মতো পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাবে কি না, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছে পরীক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মধ্যে। তাই ছুটি কমিয়ে স্কুল খোলার দাবি উঠছিল।
শিক্ষক শিবিরের ব্যাখ্যা, দ্বাদশে ভর্তি হয়ে ক্লাস ১৫ জুলাই যদি ক্লাস শুরু হয়, তা হলেও পুজোর ছুটির আগে তারা ক্লাস করার সময় পাবে মাত্র আড়াই মাস। ৩০ সেপ্টেম্বর এক মাসের পুজোর ছুটি শুরু হওয়ার কথা। পুজোর ছুটির পরে স্কুল খোলার মাসখানেকের মধ্যেই আবার টেস্টের ঘণ্টা বেজে যাবে।
এত কম সময়ের মধ্যে পুরো পাঠ্যক্রম শেষ করা নিয়ে তাই জোরদার প্রশ্ন উঠছে। হিন্দু স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়াদের বক্তব্য, এই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে পাঠ্যক্রম শেষ করা খুব কঠিন। এখনকার মতো সুবিধার জন্য শিক্ষা দফতর যদি পাঠ্যক্রম সংক্ষিপ্ত করে দেয়, সেটাও তারা সমর্থন করতে পারছে না। কারণ, সংক্ষিপ্ত পাঠ্যক্রমের উপরে পরীক্ষা হলে বাদ পড়ে যাবে অনেক বিষয়। ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য, সেই সব বিষয় পড়া না-থাকলে পরবর্তী কালে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসতে গেলে অসুবিধা হতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্র বলেন, “পুজোর ছুটি কমিয়ে ক্লাস বাড়ালে পড়ুয়ারা কিছুটা অতিরিক্ত ক্লাস পেতে পারে। আগামী বছর রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরীক্ষার সূচি কী হবে, সেটাও অনিশ্চিত। পরীক্ষা এগোলে প্রস্তুতির সময় আরও কম পাবে পরীক্ষার্থীরা।”
অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেসের রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “ছুটি কমিয়ে ক্লাস বাড়ানোর বন্দোবস্ত না-করলে শুধু উচ্চ মাধ্যমিক কেন, মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রমও শেষ করা যাবে না।’’ সর্বস্তরে দাবি, আবেদন-নিবেদন, মামলা-মকদ্দমা সত্ত্বেও গরমের দীর্ঘ ছুটি পুরোপুরিই বহাল ছিল। তার পরে সারা রাজ্যে স্কুল খুলে গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু করোনার দাপট আবার বাড়ছে প্রতিদিনই। এই অবস্থায় স্কুল যদি ফের বন্ধ হয়ে যায়, তখন কী হবে, উঠছে সেই প্রশ্নও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy