প্রতীকী ছবি।
কখনও নামের ভুলে এক রোগীর রিপোর্ট অন্য রোগীর হাতে যাওয়ায় ঘটছে বিপত্তি। কখনও আবার রিপোর্টে তথ্যের গন্ডগোলে মানসিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছেন রোগীর পরিজনেরা। এই পরিস্থিতিতে এ ধরনের গাফিলতির ক্ষেত্রে প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলির কী করণীয় তা বুধবার স্থির করে দিল স্বাস্থ্য কমিশন।
এদিন প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির গন্ডগোলের জেরে রোগী হয়রানির অভিযোগ সংক্রান্ত মোট সাতটি মামলার শুনানি ছিল। সেই ভুলের কারণে রোগীর পরিজনেরা কী ধরনের পরিস্থিতির মুখে পড়ছেন তা বোঝাতে দু’টি ঘটনার উল্লেখই যথেষ্ট। স্বাস্থ্য কমিশন সূত্রের খবর, প্রথম ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই কোভিডে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো গত ১৮ সেপ্টেম্বর মেডিকায় স্ত্রী’র ডি-ডাইমার পরীক্ষা করানো হয়। আক্রান্তের দেহে প্রদাহের মাত্রা বোঝার জন্য এই পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। দম্পতির পনেরো বছরের কন্যা যখন রিপোর্ট হাতে পান তখন দেখা যায় ডি-ডাইমারের পরিমাণ ৪১০৩২ লেখা রয়েছে। পরবর্তী ক্ষেত্রে দেখা যায়, সেটি আসলে ৪১০.৩২ হতো। টাইপ করার সময় পয়েন্ট না দেওয়ায় গন্ডগোলের সূত্রপাত। অভিযোগকারীর বক্তব্য, কোভিড আক্রান্ত স্বামী-স্ত্রী হোম আইসোলেশনে ছিলেন। পনেরো বছরের মেয়ে বাবা-মায়ের দেখাশোনা করছিল। ওই রিপোর্টে পয়েন্টের গন্ডগোলে মেয়ের মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এরপর শহরের অন্য একটি পরীক্ষাগারে পুনরায় পরীক্ষা করানো হলে রিপোর্ট স্বাভাবিক আসে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত বেসরকারি হাসপাতাল নিজে থেকে পরীক্ষার খরচ ফেরৎ দেওয়ার কথা বলে। এ ছাড়া ক্ষতিপূরণ বাবদ দশ হাজার টাকা রোগীর পরিজনকে দেওয়ার জন্য বলে কমিশন।
আর একটি ঘটনায় কাঠগড়ায় রয়েছে ভগীরথী নেওটিয়া হাসপাতাল। মোমিনপুরের বাসিন্দা বছর চল্লিশের এক মহিলা ওই হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে থাইরয়েড পরীক্ষা করান। রিপোর্ট দেখে ওই হাসপাতালেরই একজন চিকিৎসক ফের পরীক্ষা করাতে বলেন। দেখা যায়, আগের রিপোর্টটি ভুল ছিল।
এ ধরনের ঘটনার প্রেক্ষিতেই নির্দেশের মাধ্যমে প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে একচি রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্দেশে বলা হয়েছে, রিপোর্টে সংখ্যা বা নামের ভুলের কারণে মারাত্মক ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এর দায় সংশ্লিষ্ট ল্যাবরেটরিকে নিতে হবে। কমিশনের বক্তব্য, ছাপার ভুল থাকলেও যিনি রিপোর্টে সই করছেন তাঁর বিষয়টি খেয়াল করা উচিত। চেয়ারম্যান জানান, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে রিপোর্ট অস্বাভাবিক হওয়ায় রোগীর চিকিৎসকের সন্দেহ হয়েছে। সেই সন্দেহের নিরসন ঘটাতে গিয়ে ভুলের কথা জানা গিয়েছে। কমিশনের বক্তব্য, রোগী এ ধরনের অভিযোগ নিয়ে এলে আগে নিখরচায় দ্বিতীয় বার পরীক্ষা করে দেওয়া উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy