Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Haridevpur

Haridebpur Murder Case: সাঁইবাবার মূর্তিতে রক্তের দাগ, মদ্যপানের আসরে কথা কাটাকাটির জেরেই খুন বাপ্পা!

হরিদেবপুর থানা এলাকার জিয়াদার গেট এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে গত মঙ্গলবার উদ্ধার হয় সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য (৪২) ওরফে বাপ্পার রক্তাক্ত দেহ।

সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য ওরফে বাপ্পা খুন হন হরিদেবপুরে নিজের বাড়িতে। ডান দিকে, ধৃত দুই সন্দেহভাজন।

সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য ওরফে বাপ্পা খুন হন হরিদেবপুরে নিজের বাড়িতে। ডান দিকে, ধৃত দুই সন্দেহভাজন। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২২ ১২:৫৬
Share: Save:

হরিদেবপুর থানা এলাকার জিয়াদার গেট এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে গত মঙ্গলবার উদ্ধার হয় সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য (৪২) ওরফে বাপ্পার রক্তাক্ত দেহ। মদ্যপানের আসরে কথা কাটাকাটি, তার জেরে মাথা গরম করে বাপ্পাকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশ আধিরাকিকরা। এই ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মোট তিন জনকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হল। বাপ্পার বাড়ি থেকে একটি সাঁইবাবার মূর্তি উদ্ধার হয়েছে। তাতে রক্ত লেগেছিল। মূর্তিটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ওই মূর্তি খুনে ব্যবহৃত হয়েছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

কুন্দন কুমার নামে ২০ বছরের এক ব্যক্তিকে বিহার থেকে গ্রেফতার করা হয়। কুন্দনই প্রধান সন্দেহভাজন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, অপরাধের কথা নিজেই কবুল করেছেন কুন্দন। তাঁকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা নিয়ে আসা হয়েছে।

কুন্দনকে জেরা করে প্রকাশ পায় জিতেন লামা ওরফে বিট্টুর নাম। বিট্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া যায় দেবরাজ রায়ের নাম।
মহেশতলা থেকে ১৯ বছরের জিতেন এবং সুভাষগ্রামের বছর ২১ এর বিট্টুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের শুক্রবার আলিপুর আদালতে তোলা হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে দোতলা বাড়ির শৌচাগারে তাঁর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন বাপ্পাদেরই এক প্রতিবেশী। শৌচাগারের মেঝেতে ছিল রক্তের দাগ।

ওই প্রতিবেশীই মৃতের পরিজনেদের খবর দেন। ঘটনাস্থলে আসেন হরিদেবপুর থানার পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্টে বাপ্পার দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। মাথার পিছনে ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করার চিহ্ন আছে। এ ছাড়া মুখে ও দেহের একাধিক জায়গাতেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ওই ব্যক্তি খুন হয়ে থাকতে পারেন।

জিয়াদার গেট কলকাতা পুর এলাকার মধ্যে হলেও সেখানকার পরিবেশ অনেকটাই গ্রাম্য। পুকুর, বাঁশের সেতু পেরিয়ে হোগলা বন সংলগ্ন মাঠের মধ্যে কিছুটা নির্জন এলাকায় বছর দুয়েক আগে দোতলা বাড়ি বানিয়েছিলেন বাপ্পা। আশপাশে কার্যত কেউই থাকেন না। তবে এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, একটি চায়ের দোকানের কর্মী বাপ্পা স্থানীয় লোকেদের সঙ্গে খুব বেশি মিশতেন না। তবে এলাকায় পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি। তাঁর স্ত্রী বেঙ্গালুরুতে একটি বিউটি পার্লারে কাজ করেন। মেয়ে-জামাই থাকেন পানিহাটিতে।
বাপ্পার বাড়ির অদূরেই থাকেন মুন্না বর্মণ নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘‘মঙ্গলবার বিকেলে বাপ্পার স্ত্রী আমাকে ফোন করে জানান, ওঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারছেন না। বলেন ওঁদের বাড়ি গিয়ে একটু খোঁজ নিতে। তার পরেই আমার বাবা ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, শৌচাগারে পড়ে রয়েছে বাপ্পার দেহ। তত ক্ষণে দেহে পচন ধরতে শুরু করেছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটির একতলার দরজা তালাবন্ধ। তবে বাইরের দিকে একটি সিঁড়ি থাকায় অনায়াসেই যে কেউ দোতলায় উঠে যেতে পারেন। মুন্না জানিয়েছেন, বাপ্পার খোঁজ করতে গিয়ে তাঁর বাবা দেখেছেন, দোতলার ঘরের দরজাও খোলা ছিল।

বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে বুধবার পানিহাটি থেকে আসেন বাপ্পার মেয়ে মহামায়া ভট্টাচার্য এবং জামাই অরূপ দাস। মহামায়া জানান, দু’দিন ধরে তিনি তাঁর বাবার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। ফোন বন্ধ ছিল। গত রবিবার বাপ্পার দুই বন্ধুর তাঁর বাড়িতে আসার কথা থাকলেও তাঁরা এসেছিলেন কি না, সে কথা জানেন না মহামায়া। মৃতের স্ত্রী পিঙ্কি ভট্টাচার্যও জানান, রবিবার তাঁর সঙ্গে ফোনে শেষ বারের মতো কথা হয়েছিল বাপ্পার।

বুধবার দুপুরে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার আধিকারিকেরা ছাড়াও ঘটনাস্থলে যান ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা জানান, দোতলায় একটি শোওয়ার ঘর ছাড়াও রান্নাঘর ও শৌচালয় রয়েছে। ওই ঘর থেকে কিছু নমুনা তাঁরা সংগ্রহ করেছেন। ঘরটি বেশ অগোছালো ছিল। নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বাড়ির সামনের বাগান থেকেও। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, বাপ্পাকে খুন করা হয়ে থাকলে এর সঙ্গে একাধিক ব্যক্তির জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে খুনের কারণ কী, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

Haridevpur murder case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy