মৃত স্বপ্নদ্বীপের শোকার্ত বাবা, নদিয়ার রানাঘাটে। শনিবার। ছবি: প্রণব দেবনাথ।
শুধু এক জনকে গ্রেফতার করা মানেই দায়িত্ব শেষ নয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্ব মানের একটা শিক্ষা সংস্থার জমি থেকে র্যাগিং নামের বিষাক্ত গাছকে শিকড় সমেত উপড়ে ফেলতে হবে— শনিবার সকলের কাছে এই দাবিই জানিয়েছেন মৃত স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর বাবা রামপ্রসাদ। পাশাপাশি স্বপ্নদীপের ভাই রত্নদীপ জানিয়েছে, সুযোগ পেলেও সে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতে চায় না।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপের নিথর দেহ পাওয়া যায় বুধবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের নীচে। অভিযোগ ওঠে র্যাগিংয়ের। বৃহস্পতিবার রাতেই স্বপ্নদীপের বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীর পাশাপাশি দ্বিতীয় বর্ষের আরও এক ছাত্রের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তার পর কেটেছে তিনটে দিন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ এখনও পর্যন্ত শুধু সৌরভকে গ্রেফতার করতে পেরেছে।
শনিবার রামপ্রসাদ ক্ষোভ আর হতাশা নিয়ে বলেন, “শুধু সৌরভকে গ্রেফতার করলেই তো হবে না। সে তো একা ছিল না। আরও অনেকে ছিল। তারা কোথায় গেল? পুলিশ কেন তাদের এখনও গ্রেফতার করতে পারল না? নাকি ইচ্ছে করে গ্রেফতার করল না?” তাঁর আরও প্রশ্ন, “সুবিচার পাবে তো আমার ছেলে?’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘এই সমস্যা অনেক গভীর পর্যন্ত ছড়িয়েছে। যাদবপুর থেকে র্যাগিংকে শিকড় সমেত তুলে ফেলতে হবে।”
বুধবার রাত থেকে এক দানা খাবারও মুখে তোলেননি স্বপ্নদীপের মা আদরি কুণ্ডু। মাঝেমধ্যে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন। তাঁকে রাখা হয়েছে রানাঘাটে স্বপ্নদীপের মামাবাড়িতে। গোটা পরিবার এখনও বিধ্বস্ত। আদরি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার ছেলেকে যারা খুন করেছে, তাদের সকলের শাস্তি হোক। সেই সঙ্গে যাদবপুরের হস্টেলে র্যাগিং চিরদিনের মতো বন্ধ হোক। আমি চাই না যে, আমার মতো আর কারও কোল শূন্য হয়।’’
দাদার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে কার্যত বাক্রুদ্ধ ভাই রত্নদীপ। সুযোগ পেলেও সে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতে চায় না বলে এ দিন জানিয়েছে। রত্নদীপ বলে, “ওরা দাদাকে মেরেছে। আমি আর মরতে চাই না। আমি চাই, সরকার আগে র্যাগিং বন্ধ করুক।’’
রবিবার স্বপ্নদীপকে যাদবপুর বিশ্বাবিদ্যালয়ের হস্টেলের ‘এ’ ব্লকে রেখে এসেছিলেন বাবা। ‘সিনিয়র’ সৌরভ চৌধুরীর হাতেই ছেলেকে তুলে দিয়ে এসে নিশ্চিন্তে ছিলেন। সৌরভই স্বপ্নদীপকে হস্টেলে আপাতত ‘অতিথি’ হিসাবে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। রামপ্রসাদ বলেন, “সৌরভ গ্রামের ছেলে। ভেবেছিলাম, সে গ্রামের ছেলেদের সমস্যা বুঝবে। ভিতরে-ভিতরে সে এই ধরনের পরিকল্পনা করছে, স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy