লক্ষ্যে অবিচল ইন্দ্রজিৎ।
বাবা রাস্তা তৈরির শ্রমিক। বছরভর এই পরিশ্রমের মজুরিতেই তাঁর সংসার চলে। তবে তিনিও স্বপ্ন দেখেন। তাঁর ভবিষ্যৎ স্বপ্নের কারিগর তাঁর দুই ছেলে। শত দারিদ্রের মধ্যেও তাঁরাই আজ আশার আলো কোচবিহারের হলদিবাড়ির এক প্রত্যন্ত গ্রামের দেবু রায় লস্করের কাছে।
দেবুবাবুরা থাকেন হলদিবাড়ি ব্লকের বগরিবাড়ি গ্রামে। বড়ছেলে বুদ্ধদেব আইআইইএসটি, শিবপুরের ছাত্র। ছোটছেলে ইন্দ্রজিৎ ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। কঠোর পরিশ্রম করে দুই ছেলেকে পড়াচ্ছেন দেবুবাবু। দুই ছেলেই পড়াশোনায় ভাল। বড়ছেলেকে পড়ানোর জন্য তাঁর দু’বিঘে জমির এক বিঘে বিক্রি করেছেন। বড়ছেলে শিবপুরে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই ছোটছেলেকেও উচ্চশিক্ষা দেওয়ার জেদ চেপেছিল। বাবা ও ছোটছেলে ইন্দ্রজিতের জেদের জেরেই আজ আবার সাফল্য। কিন্তু দেবুবাবুর একটাই চিন্তা, ছোটছেলের পড়াশোনার খরচ কীভাবে সামলাবেন।
কচুয়া বোয়ালমারী হাইস্কুল থেকে ইন্দ্রজিৎ ২০১৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬৪৬ নম্বর পেয়ে পাশ করেন। ২০২০ সালে হলদিবাড়ি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ৪৩০ নম্বর নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। পাশাপাশি তিনি ঠিক করে ফেলেন, ঘরে বসেই তৈরি হবেন সর্বভারতীয় নিট পরীক্ষা দেবেন। টাকার অভাবে নামী কোচিং সেন্টারে ভর্তি হতে পারেননি। তার উপরে করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যায় স্কুল-কলেজ। এরই মধ্যে দাদা ফিরে আসে বাড়িতে। দাদার মোবাইল ফোন হাতে পেয়েই শুরু হয় ইন্দ্রজিতের যুদ্ধ। প্রথম নিট পরীক্ষাতেই ইন্দ্রজিতের সর্বভারতীয় তালিকায় ৭২৪৫৯ নম্বরে ও তফসিলি জাতির তালিকায় ২৬১৬ নম্বরে নাম রয়েছে। কাউন্সেলিংয়ের পর কলকাতার ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে তিনি সুযোগ পান।
ইন্দ্রজিতের বাবা দেবু রায় লস্কর বলেন, ‘‘ছেলেদের জন্যই পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আরও পরিশ্রম করতে হলেও পিছপা হব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy