নবান্নের সঙ্গে সঙ্ঘাত বজায় রেখে আরও ছয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল বোস। ফাইল চিত্র।
সংঘাতের আবহ বজায় রাখার বার্তা দিল রাজভবন। রবিবার রাজভবন থেকে জানানো হল, আরও ছয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। নতুন এই তালিকায় উপাচার্য হিসেবে রয়েছেন এক জন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস। এর আগেও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসাবে অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস এম ওয়াহাবকে নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল। যা নিয়ে প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যা ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কিন্তু সেই ক্ষোভে পাত্তা না দিয়ে আবারও এক প্রাক্তন আইপিএসকে উপাচার্য পদে বসালেন তিনি। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সিএম রবীন্দ্রনকে।
এ ছাড়াও আরও পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের দায়িত্ব পেয়েছেন অচিন্ত্য সাহা। মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হচ্ছেন বিবি পারিদা। নিখিলচন্দ্র রায় পেয়েছেন কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব। আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পেলেন রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে দিলীপ মাইতিকে।
রাজভবনের উপর নজরদারি নিয়ে গত সপ্তাহ থেকেই দড়ি টানাটানি চলছে রাজ্যপাল-নবান্নের মধ্যে। গত বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের দফতর ও বসবাসের জায়গার নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে কলকাতা পুলিশকে সরিয়ে তা দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। তবে রাজভবন চত্বর ও রাজভবনের নীচের অংশের দায়িত্বে থাকবে কলকাতা পুলিশই। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, শনিবার রাজভবনের এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘‘আউটসাইড রাজভবন দেয়ার ইজ় ভায়োলেন্স। ইনসাইড রাজভবন বাই লেন্স।’’ আনন্দ বোসের এমন কৌশলী মন্তব্যে উপস্থিত কারও বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে, রাজভবনের নিশানা একেবারে নবান্নের দিকেই। আর রবিবার ছয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করে সেই সংঘাত বহাল রাখার বার্তাই তিনি নবান্নকে দিতে চেয়েছেন বলেই মনে করছে রাজ্য প্রশাসনের একাংশ।
তবে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের বক্তব্য, অধ্যাপনার ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেই উপাচার্য পদে নিয়োগ করা যায়। কিন্তু রাজ্যপাল যাঁদের নিয়োগ করেছেন, তাঁদের কারও অধ্যাপনার ১০ বছরের অভিজ্ঞতা নেই। পাল্টা রাজ্যপালও জানিয়েছিলেন, অন্তর্বতী উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে তেমন কোনও নিয়ম নেই। এ ভাবেই আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণের মধ্যে দিয়ে চলেছে রাজভবন-নবান্নের সম্পর্ক।
প্রসঙ্গত, যে রবীন্দ্রনকে উত্তরবঙ্গ উপাচার্য পদে বসানো হয়েছে, তিনি ১৯৭৭ ব্যাচের আইপিএস। প্রশাসনিক স্তরে কাজ করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। সিকিম পুলিশের ডিজিপি হিসাবে সাড়ে পাঁচ বছরের বেশি সময় কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। এ ছাড়াও নেপালের কাঠমান্ডুতে ভারতীয় দূতাবাসের প্রথম সচিব পদেও ছিলেন দীর্ঘ সময়। ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি)-র ডেপুটি ডিরেক্টরও ছিলেন রবীন্দ্রন। সম্প্রতি রাজ্যপাল আনন্দ বোসের কাছ থেকে কর্মযোগী পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy