(বাঁ দিক থেকে) সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এবং রায়াত হোসেন। —ফাইল চিত্র।
রাজভবনেই এসে শপথ নিতে হবে উপনির্বাচনে জয়ী দুই তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেনকে। মঙ্গলবার দুই বিধায়ককে ফের চিঠি পাঠিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করল রাজভবন। একই সঙ্গে বিধানসভার স্পিকারের ভূমিকার সমালোচনা করে রাজভবন জানাল, তিনি রাজ্যপাল এবং রাজভবনের ভূমিকাকে অবজ্ঞা করেছেন।
গত কয়েক দিন ধরেই ভগবানগোলা এবং বরাহনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী বিধায়ক রায়াত ও সায়ন্তিকার শপথ নিয়ে টানাপড়েন চলছিল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাজভবনের তরফে সায়ন্তিকা ও রায়াতকে ইমেলে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দুই বিধায়কই রাজভবন থেকে চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন। রাজভবন সূত্রে খবর, ওই চিঠিতে দুই তৃণমূল বিধায়ককে বলা হয়েছে, বুধবার দুপুরে রাজভবনে এসে শপথ নিতে হবে। যদিও আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে সায়ন্তিকা ও রায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা বলেন, ‘‘রাজভবনের চিঠি পেলেও তাতে কী লেখা আছে, তা আমরা পড়ে দেখিনি।’’
সোমবার দুই বিধায়ক রাজ্যপালকে চিঠি লিখে আবেদন করেছিলেন, তাঁদেরকে বিধানসভাতেই শপথ নিতে দেওয়া হোক। তাঁরা চান, তাঁদের শপথ পাঠ করান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বেলায় সেই চিঠির পাল্টা এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি বিস্তারিত পোস্ট করে রাজভবন। তাতে বিধানসভার স্পিকারের কড়া সমালোচনা করে রাজ্যপাল জানান, নবনির্বাচিত প্রার্থীদের শপথ নেওয়ার বিষয়ে যে চিঠি তিনি দিয়েছেন, তাতে রাজ্যপাল এবং রাজভবনের সাংবিধানিক মর্যাদাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে।
রাজ্যপাল জানিয়েছেন, সংবিধানে বলা আছে, বিধায়কদের শপথ নেওয়ার ব্যাপারে শেষ কথা বলবেন রাজ্যপালই। সেই নিদান না মানলে তার শাস্তিও পেতে হয়। জরিমানা দিতে হয় বিধায়কদের।
এই ক্ষমতা প্রয়োগ করেই ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়কে শপথ পাঠ করিয়েছিলেন তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। যদিও অনুষ্ঠানটি হয়েছিল বিধানসভাতেই। আবার ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথগ্রহণ নিয়ে দড়ি টানাটানি হয়েছিল রাজভবন এবং বিধানসভার মধ্যে। শেষ পর্যন্ত নির্মলের শপথ হয়েছিল রাজভবনেই।
বিষয়টি যে আইনসঙ্গত, তা বোঝাতে কলকাতা হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের উদাহরণও টেনে এনেছেন রাজ্যপাল। কিন্তু রাজভবনের অভিযোগ, সাংবিধানিক সেই নিদানকে পরোয়াই করছেন না বিধানসভার স্পিকার।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিধায়কেরা শেষ পর্যন্ত রাজভবনে গিয়ে শপথগ্রহণ করবেন কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রীই। এখন তিনি কী বলেন, সে দিকেই নজর রাখছে রাজনৈতিক মহল।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই ভগবানগোলা ও বরাহনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলঘোষণা হয়েছিল। কিন্তু রাজভবন থেকে সবুজ সঙ্কেত না পাওয়ায় দুই জয়ী প্রার্থীর শপথগ্রহণ আটকে রয়েছে বলে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ। পাল্টা রাজভবন জানিয়েছে, শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানের জন্য রাজভবনের তরফে বিধানসভার সচিবালয়ের কাছে কিছু তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল। প্রবীণতম মহিলা বিধায়ক, কনিষ্ঠতম বিধায়ক, তফসিলি জাতি, জনজাতির বিধায়ক -সহ আরও কিছু তথ্য চেয়ে রাজ্যপাল বোস চিঠি পাঠিয়েছিলেন বিধানসভায়। কিন্তু বিধানসভা সেই তথ্য দেয়নি। বরং এর পাল্টা একটি চিঠি দিয়ে বিধানসভার স্পিকার বিমানও রাজ্যপালকে ‘সাংবিধানিক নিয়ম’ স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার সংবিধান উদ্ধৃত করেই তার জবাব দিল রাজভবন।
— Raj Bhavan Kolkata (@BengalGovernor) June 25, 2024
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy