সিপিকে ভর্ৎসনা রাজ্যপালের। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ফের আক্রমণ শানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এ বার তিনি সরাসরি রাজ্যের এক মন্ত্রীর সামনে উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তাকে রীতিমতো ধমকালেন। ওই পুলিশকর্তার দিকে আঙুল উঁচিয়েও রাগত ভাবে কথা বলতে শোনা যায় রাজ্যপালকে। গোটা ঘটনাকে রাজ্যপালের ‘পূর্ব পরিকল্পিত’ বলে মন্তব্য করেছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
মহাত্মা গাঁধীর ৭২তম প্রয়াণ বার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে বৃহস্পতিবার সকালে ব্যারাকপুরের গাঁধী ঘাটে সস্ত্রীক গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়-সহ একাধিক শীর্ষ আমলা ও পুলিশ কর্তা। ছিলেন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার মনোজ বর্মা। শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে নিজের গাড়িতে ওঠার আগেই হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়েন রাজ্যপাল। সামনে তখন দাঁড়িয়ে মনোজ। তাঁর পাশে শোভনদেব। রাজ্যপাল আচমকাই মনোজের উদ্দেশে তীব্র ভর্ৎসনার সুরে বলেন, ‘‘আজ শহিদ দিবস, আর আপনি সামনের সারিতে বসে খবরের কাগজ পড়ছেন! এতটাই হেলদোলহীন আপনি! অনুষ্ঠানের গুরুত্বের নিরিখে আপনার আচরণ অনুপযুক্ত।”
মনোজ বর্মার উদ্দেশে রাজ্যপালকে রীতিমতো তর্জনী উঁচিয়েও কথা বলতে দেখা গিয়েছে এ দিন। মনোজকে তিনি বলেন, ‘‘এটা একটা মারাত্মক গাফিলতি। আমি খুব বিরক্ত হয়েছি।” এর পরেই তিনি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রীতিমতো খড়্গহস্ত হন। ক্ষুব্ধ রাজ্যপালকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার মনে হয় না এ রাজ্যে যেখানে আমি বসবাস করছি, সেখানে আদৌ কোনও আইনের শাসন আছে।’’ রাজ্যপালের কথা শুনে কিছু একটা বলার চেষ্টা করেন মনোজ। কিন্তু,তাঁকে থামিয়ে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন রাজ্যপাল। তিনি ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারকে বলেন,‘‘এটা খুবই লজ্জাজনক।”
VIDEO CODE
আরও পড়ুন: এত কিছু করেও আমি সন্ত্রাসবাদী? বিজেপির কটাক্ষে ক্ষোভ কেজরীবালের
ব্যারাকপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও এ দিন প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল। লোকসভা ভোটের সময় থেকেই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে রাজনৈতিক হিংসা অব্যাহত। সেই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেন,‘‘ওঁদের নামের তালিকা আমাকে পাঠাবেন।” একই সঙ্গে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি কোনও ফাইল খুললে তার শেষ পর্যন্ত না দেখে, সেই ফাইল বন্ধ করিনা।” তবে রাজ্যপাল কাদের নামের তালিকা মনোজকে পাঠাতে বলেছেন, তা যদিও স্পষ্ট হয়নি। মনোজকে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে আদৌ আইনের শাসন আছে বলে মনে হয় না। আপনাদের মতো উর্দিধারীরা যদি এ রকম আচরণ করেন, তা হলে আমরা কোন দিকে এগোচ্ছি!”
এর পর স্ত্রী-কে নিয়ে গা়ড়়িতে ওঠেন রাজ্যপাল। তবে তার আগে তিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলেন। বলেন, ‘‘এ রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ রূপে ভেঙে পড়েছে। নৈরাজ্য চলছে।একটা বিস্ফোরক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এ রাজ্য।’’
আরও পড়ুন: ‘এ সব পোকামাকড়কে দ্রুত খতম করুন’, শরজিলের বিরুদ্ধে সরব শিবসেনা
ঘটনাস্থলে উপস্থিত মন্ত্রী শোভনদেব রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পাল্টা অসৌজন্যের অভিযোগ তুলেছেন। রাজ্যপালের এই আচরণের নিন্দা করে তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে রাজ্যপালকে স্বাগত জানাতে ওখানে উপস্থিত ছিলাম। তাঁকে হাত জোড় করে নমস্কার জানালেও তিনি প্রতি নমস্কার পর্যন্ত জানাননি।’’ শোভনবাবুর অভিযোগ, ‘‘গোটাটাই ওঁর পূর্ব পরিকল্পিত। এদিন এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি যার জন্য তিনি এ রকম আচরণ করতে পারেন।’’ শোভনদেব আরও বলেন, ‘‘আমি আমার জীবনে কোনও রাজ্যপালকে এই ধরনের ব্যবহার করতে দেখিনি। তিনি একটা উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছেন। সেটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। তিনি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে আসেননি। তিনি একটা রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy