Advertisement
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
CV Ananda Bose

শোভনদেব-ব্রাত্য-ফিরহাদ-চন্দ্রিমা-সহ সাত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিল রাজভবন

রাজভবন সূত্রে খবর, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, কলকাতার মেয়র তথা পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে রাজভবনের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে।

Governor CV Ananda Bose has sent a letter to CM Mamata Banerjee to against seven ministers

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৪ ১৫:০৯
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দিল রাজভবন। নবান্ন সূত্রে খবর, সম্প্রতি রাজভবন থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে নবান্নে। সেই চিঠিতে সাত জন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে। রাজভবন সূত্রে খবর, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, কলকাতার মেয়র তথা পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে রাজভবনের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যপাল বোসের বিরুদ্ধে এই মন্ত্রীরা যে সব মন্তব্য করেছেন, তা যে রাজভবন ভাল চোখে দেখেনি, তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। একজন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তাঁর কাছেই সংবিধানের শপথ নেওয়া মন্ত্রী কী ভাবে এ হেন মন্তব্য করতে পারেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

রাজভবন সূত্রে খবর, চিঠি পাঠানো হলেও তার কোনও জবাব এখনও নবান্ন থেকে পাওয়া যায়নি। রাজভবনের একাংশ মনে করছে, মুখ্যমন্ত্রী এই ধরনের অভিযোগের কোনও জবাব দেবেন না, সেটাই প্রত্যাশিত। কারণ, রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। ১৫ অগস্ট বিকালে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কয়েক জন ঘনিষ্ঠকে নিয়ে রাজভবনে গেলেও রাজ্যপালের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজভবনের মহিলা কর্মীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে রাজ্য সরকার অভিযোগকারিণীর পাশেই দাঁড়িয়েছিল। পাশাপাশি, নতুন বিধায়কদের শপথগ্রহণ নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের যে মতপার্থক্য হয়েছে, তা-ও কারও অজানা নয়। রাজ্যপালের নির্দেশ উপেক্ষা করে যে ভাবে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের শপথগ্রহণ করিয়েছেন, তাতেও রাজ্যপালের পদের মর্যাদাহানি হয়েছে বলেই মনে করছে রাজভবনের একাংশ। এ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যেরা যে ভাবে রাজ্যপালকে আক্রমণ করেছেন, তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজভবন থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যে মুখ্যমন্ত্রী কোনও জবাব দেবেন না, তা জানে রাজভবনের প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, প্রথম দিকে রাজ্যপাল বোসের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারের সম্পর্ক ভালই ছিল। ২০২৩ সালের সরস্বতী পুজোর দিন মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলা শেখার হাতেখড়ি হয়েছিল রাজ্যপালের। কিন্তু পরবর্তী সময়ে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ-সহ পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব হন রাজ্যপাল। শাসকদলের সন্ত্রাসে কেউ আক্রান্ত হলে, রাজভবনে তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ‘শান্তিকক্ষ’ তৈরি করে বির্তকে জড়িয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। তার পর থেকেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের আক্রমণের মুখে পড়েছেন তিনি। আর এ বার সরাসরি তাঁকে আক্রমণের অভিযোগ এনে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে রাজভবনের তরফে। যা বহুলাংশে নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাত বৃদ্ধির ইঙ্গিত বলেই মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE