Advertisement
E-Paper

বেহাল তহবিল, আয় বাড়াতে ভরসা স্বাস্থ্যসাথী

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের মাধ্যমে আয় বাড়াতে এভাবেই অভিনব পন্থার খোঁজে ব্যস্ত রয়েছেন একাধিক সরকারি হাসপাতালের সুপারেরা।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:২৮
Share
Save

‘স্যার, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের রোগীদের টুথপেস্ট, ব্রাশ দিলে কেমন হয়’!

সুপারের প্রস্তাব শুনে অসম্মতিসূচক ঘাড় নাড়লেন আধিকারিক। তাঁর বক্তব্য, সরকারি হাসপাতালে রোগীদের মধ্যে তো তফাৎ করা যায় না।

সুপারের বিকল্প প্রস্তাব, ‘তাহলে ফল’? সম্মতি অধরাই রইল। কারণ, তাতে আবার কোথা থেকে, কত টাকা দরে ফল কেনা হচ্ছে তা নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হতে পারে! শেষমেষ আধিকারিক জানান, বড়জোর ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান থেকে ‘হেল্‌থ ড্রিঙ্ক’ কিনে দেওয়া যেতে পারে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের মাধ্যমে আয় বাড়াতে এভাবেই অভিনব পন্থার খোঁজে ব্যস্ত রয়েছেন একাধিক সরকারি হাসপাতালের সুপারেরা।

কিন্তু কেন? মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার নীতির জন্য এখন রোগী কল্যাণ সমিতির তেমন আয় নেই। অনলাইন পরিষেবার পাশাপাশি টিকিট ভেন্ডিং মেশিন চালু হওয়ায় বর্হির্বিভাগের টিকিট থেকে আয়ের পথও ক্রমশ সীমিত হয়ে আসছে। একমাত্র ভরসা ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড। কারণ, সরকারি বিমা প্রকল্পে রোগীরা ভর্তি হলে বিমা সংস্থার কাছ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ রোগী কল্যাণ সমিতির তহবিলে যায়।

সূত্রের খবর, এই পথেই এ বছর এখনও পর্যন্ত চার কোটি ৯০ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। স্বাস্থ্যসাথী থেকে আয় রোজগারের প্রশ্নে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে এনআরএস। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে এসএসকেএম ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। তারও পিছনে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ (সিএনএমসি) এবং আরজিকর। চলতি বছরে সিএনএমসি’র আয় ৭০ লক্ষের কাছাকাছি। আরজিকরের আয় ১০ লক্ষ টাকারও নীচে। সরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে আয়ের নিরিখে এনআরএস শুধু প্রথম নয়। বাকিদের তুলনায় অনেক এগিয়ে। অগস্ট পর্যন্ত সিএমসি’তে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে রোগীর সংখ্যা ৩৯৬ জন। সেখানে এনআরএসে প্রতি মাসে গড়ে ৪৫০ রোগী স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে পরিষেবা পান!

স্বাস্থ্য প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের মতে, সম্প্রতি যে সকল হাসপাতালে স্থানাভাব নেই সেখানে বিনামূল্যে পরিষেবার পাশাপাশি ‘পেয়িং বেড’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এসএসকেএমের উডবার্নের ধাঁচে সেই পরিকাঠামো তৈরি না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালগুলির কাছে লক্ষ্মীর ঝাঁপি বলতে ‘স্বাস্থ্যসাথী’। তবে সেখানেও লক্ষ্মীলাভ করা সহজ কথা নয়।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘হাসপাতালে যেহেতু সবই বিনামূল্যে তাই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলেও অনেকে বলতে চান না। বিমার টাকা বেসরকারি হাসপাতালের জন্য তুলে রাখতে চান। কেউ কার্ড দেখাতে না চাইলে জোরও করা যায় না।’’ এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ‘স্বাস্থ্যসাথী’দের খোঁজে বিশেষ দল গড়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। রোগীদের বুঝিয়ে সরকারি বিমা প্রকল্প ব্যবহারে রাজি করানো হল সেই দলের গুরুদায়িত্ব। হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মীরা পরিষেবা নেওয়ার সময় যাতে কার্ড ব্যবহার করেন কিছু ক্ষেত্রে তা-ও নিশ্চিত করা হয়েছে।

ন্যাশনালের এক আধিকারিকের কপালে আবার চিন্তার ভাঁজ। ‘স্বাস্থ্যসাথী’র আয়ের সূচক সম্প্রতি সেখানে ঊর্ধ্বমুখী হলেও আবার মন্দা দেখা দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে প্রচুর স্বাস্থ্যসাথী হোক এটা আমাদের লক্ষ্য নয়। তবে হাসপাতালগুলির মূল আয়ের জায়গা যে স্বাস্থ্যসাথী সেটা ঠিক। ফলে দৈনন্দিন খরচ জোগাতে সকলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে আগ্রহ রয়েছে।’’

Swasthyasathi Scheme Government Hospitals NRS CMC RG Kar Hospital

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।