মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিজি বীরেন্দ্র সঙ্গে রাজ্যপাল। ছবি: রাজ্যপালের টুইটার হ্যান্ডল থেকে সংগৃহীত।
রাজ্যে সাংবিধানিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ইঙ্গিত মিলছে বলে মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র। সেই বৈঠক শেষ হতেই রাজ্যপাল টুইট করে জানান, জেপি নড্ডার গাড়িতে হামলা হোক বা অন্য নানা বিষয়, কোনও কিছু নিয়েই তাঁকে অবগত করা হয়নি। তাঁর মতে, মুখ্যসচিব ও ডিজি-র লাগাতার প্রতিক্রিয়াহীন এই অবস্থান থেকেই আসলে রাজ্যের সাংবিধানিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ইঙ্গিত মিলছে।
বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে বিজেপি সভাপতি নড্ডার গাড়িতে হামলার ঘটনায় রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিলেন ধনখড়। সেই মতো সন্ধ্যা ৬টায় রাজভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন আলাপন ও বীরেন্দ্র। কিন্তু বৈঠকে তাঁকে কোনও তথ্যই দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। টুইটারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে ট্যাগ করে তিনি লেখেন, ‘মুখ্যসচিব এবং ডিজিপি আজ সন্ধ্যা ছ’টায় আমার সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু মুলতুবি থাকা নানা বিষয় বা বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার কনভয়ে হামলা, কোনও বিষয়েই আপডেট দেননি ওঁরা’। এর পরেই ‘সাংবিধানিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ইঙ্গিত মিলছে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকেও রাজ্যপালের কাছে বৃহস্পতিবারের ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইট করেন। টুইটে অমিত শাহ লেখেন, ‘আজ বাংলায় বিজেপি-র সভাপতি জেপি নড্ডাজির উপর আক্রমণ খুব নিন্দনীয়। কেন্দ্রীয় সরকার এই ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এই হিংসার জন্য বাংলার সরকারকে রাজ্যের শান্তিকামী মানুষদের জবাব দিতে হবে’। এর কিছু পরেই সরাসরি রাজ্য সরকারকে বিঁধে তাঁর টুইট, ‘তৃণমূল শাসনের অধীনে বাংলা অত্যাচার, অরাজকতা ও অন্ধকারের যুগে পরিণত হয়েছে। টিএমসি-র অধীনে বর্তমানে বাংলায় যে ভাবে রাজনৈতিক হিংসা প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে স্বীকৃতি পাচ্ছে এবং চরম আকার নিচ্ছে তা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী সব মানুষের কাছেই দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক’।
CS @MamataOfficial & DGP @WBPolice called on me today at 6 PM. Unfortunately neither came with any update on pending issues or regarding attack on convoy of BJP President JP Nadda.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) December 10, 2020
Their continued non responsive stance signals failure of constitutional machinery in the State. pic.twitter.com/0Fyo3qFzXk
আরও পড়ুন: নড্ডার কনভয়ে হামলা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কেন্দ্র, জানালেন শাহ
আরও পড়ুন: ‘গুন্ডারাজ’ চলছে, মমতাকে ছুটি দিন, তোপ নড্ডার, পাল্টা তোপ তৃণমূলেরও
তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে সভা করতে গিয়েছিলেন নড্ডা। কিন্তু আমতলা থেকে শিরাকোলের দিকে এগোনোর সময় দফায় দফায় বাধার মুখে পড়ে তাঁর কনভয়। আশপাশ থেকে এলোপাথাড়ি ইট, লাঠিসোটা উড়ে আসতে শুরু করে। কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হয় পাথর। তাতে আঘাতও পান রাজ্যে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক। উড়ে আসা বোতলের ঘায়ে রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষের গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। তাঁর এক নিরাপত্তাকর্মী চোট পান।
বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, শিরাকোলে তৃণমূলের লোকজনই তাঁদের পথ আটকায়। তাতে নেতৃত্ব দেন তৃণমূলের যুব সভাপতি সওকত মোল্লা। তাতেই নতুন করে তরজা শুরু হয়েছে শাসক শিবিরে। নড্ডার গাডি়তে হামলার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন অমিত শাহ। কিন্তু তৃণমূলের দাবি, সভায় লোক জড়ো করতে না পেরে, নিজেদের লোকেদের দিয়েই হামলা জানিয়েছে গেরুয়া শিবির।
তৃণমূলের তরফে যদিও রাজ্যপাল বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর টুইট-বার্তার কোনও সরাসরি জবাব মেলেনি। বিকেলে মেয়ো রোডের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওঁদের লোক নেই। কনভয়ে হামলার নাটক করে ন্যাশনাল নিউজে দেখাচ্ছে।’’ নড্ডার কনভয়ে হামলা প্রসঙ্গে তাঁদের কোনও দায় নেই বলে মন্তব্য করেন অভিষেকও। তিনি বলেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবারে এসে বিজেপি-র গাড্ডায় পড়েছেন জে পি নড্ডা। তা আমি কী করতে পারি? সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের দায়িত্ব তো আমার নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy