লাউ যেমন উপকারী, তেমন সহজ চাষ করা। এই সময় বর্ষাকালীন লাউ চাষ করা যায়। এমনিতে সামার ফার্টাইল রাউন্ড ও ফার্টাইল লং—এই দু’টি জাত বেশ ভাল। পুষা নবীন জাতটি গ্রীষ্মকালীন চাষের জন্য হলেও বর্ষায় এর চাষ করা যায়। এছাড়া আরও জাত আছে। তবে সেগুলির ফলন বেশি নয়।
লাউ চাষে ক্ষার এবং অম্লবিহীন মাটি লাগে। মূল গভীরে প্রবেশ করতে পারে না বলে অনুর্বর মাটিতে লাউ হয় না। আর অল্প-বিস্তর সার না দিলে ভাল ফলন পাওয়া যায় না। তাই লাউ চাষের জন্য জমি তৈরির সময় হেক্টর প্রতি ৫০-৬০ টন গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে। হেক্টর প্রতি ৫০ কেজি নাইট্রোজেন ও ৬০ কেজি ফসফরাস দিতে হবে। হেক্টর প্রতি ৪-৬ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। ৪x১ মিটার দূরত্বে মাদা করে বীজ লাগাতে হবে। চারা বেড়ে উঠলে অবশ্যই মাচায় তুলে দিতে হবে।
লাউ চাষে গুরুত্বপূর্ণ— কৃত্রিম হরমোনের ব্যবহার। গাছ যখন দু’টি পাতা অবস্থায় থাকে তখন এক বার এবং চার পাতা অবস্থায় আরও এক বার হরমোন এবং কেমিক্যাল স্প্রে করলে স্ত্রী-ফুলের সংখ্যা বাড়ে, ফলন বাড়ে। হরমোন যেমন ম্যালিক হাইড্রজাইড এবং ২, ৪-৫ ট্রাইআইওডোবেনজইক অ্যাসিড ১ লক্ষ ভাগের ৫০ ভাগ ব্যবহার করা যেতে পারে। বোরন ১ লক্ষ ভাগের ৩ ভাগ এবং ক্যালসিয়াম ১ লক্ষ ভাগের ২০ ভাগ স্প্রে করলেও ভাল ফল পাওয়া যায়। লাউ গাছে কাটুই পোকা, জাব পোকা লাগতে পারে। কাটুই পোকা লাগলে বিএইচসি, ডিডিটি গুঁড়ো মাটির উপর ছেটানো যেতে পারে। জাব পোকা লাগলে পাতা কুঁকড়ে নৌকার মতো দেখতে হয়। দমন করতে হলে রিজেন্ট এক লিটার জলে দেড় ছিপি বা ডাইকোফল ১ লিটার জলে ২ ছিপি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। ফলের পোকা লাগলে কচি ফলটা তুলে ফেলতে হবে। ম্যালাথিয়ন স্প্রে করা যেতে পারে। রোগের মধ্যে নিমাটোড ঘটিত রোগ, ভাইরাস রোগ প্রধান। ভাইরাস রোগে গাছ তুলে ফেলতে হবে। শুরুতেই ভাইরাস প্রতিরোধক্ষম জাত ব্যবহার করলে সমস্যা কমে। নিমাটোডের আক্রমণে গাছের বাড়ন্ত তেমন হয় না। গাছ মারা যায়। দমন করার জন্য মাটিকে জলে ভাসিয়ে ‘নিমাগন’ দিতে হবে। ‘ফুরাডন ১০ মিলিগ্রাম’ও স্প্রে করা যেতে পারে।
লেখক: বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy