Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
madrasah

Covid-19: কোভিড-কালেও ছাত্রী বৃদ্ধি, পথ দেখাচ্ছে বেলডাঙার অখ্যাত মাদ্রাসা

প্রতি বছর ছাত্রীর সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ২০১৯ সালে হয় ১০৮০। চলতি বছরে ওই মাদ্রাসায় ছাত্রীর সংখ্যা ১০৯১।

অন্য ছবি

অন্য ছবি ফাইল চিত্র

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২১ ০৬:২৬
Share: Save:

কোভিড আবহে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পঠনপাঠন দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ। গ্রামেগঞ্জে স্কুল, মাদ্রাসায় স্কুলছুট বাড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নজির গড়েছে মুশির্দাবাদের বেলডাঙার দেবকুণ্ডু শেখ আব্দুর রাজ্জাক মেমোরিয়াল গার্লস হাইমাদ্রাসা। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সামান্য হলেও ছাত্রী বেড়েছে।

শুরু থেকেই চলার পথটা কখনও মসৃণ ছিল না। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের অনুত্তীর্ণ, স্কুলছুট ১৫-১৬ বছর বয়সি ৭৮ জন ছাত্রী নিয়ে ২০১০ সাল থেকে জুনিয়র গার্লস হাইমাদ্রাসা হিসেবে পথ চলা শুরু। প্রতি বছর ছাত্রীর সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ২০১৯ সালে হয় ১০৮০। চলতি বছরে ওই মাদ্রাসায় ছাত্রীর সংখ্যা ১০৯১। মাদ্রাসা পষর্দ সভাপতি আবু
তাহের কামরুদ্দিন বলেন, ‘‘কোভিড আবহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পঠনপাঠন স্থগিত থাকলেও থেমে নেই বেলডাঙার ওই মাদ্রাসা। ওই মাদ্রাসার কর্মকাণ্ড অন্য মাদ্রাসাও অনুসরণ করুক। এই অতিমারিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা ছাত্রীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে পঠনপাঠন চালু রেখেছেন। ওখানকার ছাত্রীদের ভূমিকাও গর্ব করার মতো। যার জন্য স্কুলছুট হয়নি। বরং ছাত্রী বেড়েছে।’’

অতিমারির আবহে মাদ্রাসা বন্ধ থাকলেও স্কুলছুট ঠেকাতে নিরলস ভাবে কাজ করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা। শিক্ষিকাদের সাহায্য করেছে ‘চাইল্ড ক্যাবিনেট’। প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুনের কথায়, ‘‘প্রতি ক্লাসের প্রথম সারির দশ জন মেয়েকে নিয়ে আমাদের স্কুলে একটি মন্ত্রিসভা তৈরি করেছি। এই এলাকায় অর্থের অভাবে মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা খুব। সেই প্রবণতা রুখতে আমাদের ছাত্রীদের নিয়ে গঠিত মন্ত্রিসভা দারুণ কাজ করে।’’

‘চাইল্ড ক্যাবিনেট’-এর ‘প্রধানমন্ত্রী’ আনিসা সুলতানা চলতি বছরে মাদ্রাসা পর্ষদের মাধ্যমিক পরীক্ষায় যুগ্ম ভাবে দ্বিতীয় হয়েছে। আনিসার কথায়, ‘‘গত দেড় বছর মাদ্রাসা
বন্ধ থাকলেও আমরা সক্রিয় ছিলাম। চার ছাত্রীর বিয়ে আটকেছি। অপেক্ষাকৃত গরিব ছাত্রীদের উৎসাহ দিতে শিক্ষিকারা নিয়মিত ফোনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন।’’ আর এক ছাত্রী দশম শ্রেণির পড়ুয়া ফাওফিয়া ফিদ্দার কথায়, ‘‘আমরা গ্রুপের সদস্যেরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে এলাকায় গিয়ে ক্লাসও নিয়েছি। সেখানে শিক্ষিকারা অনলাইনে সাহায্য করেছেন।’’

বেলডাঙার বাসিন্দা, ইতিহাসের শিক্ষিকা সামজিদা খাতুনের পর্যবেক্ষণ, ‘‘করোনার সময় মাদ্রাসায় পঠনপাঠন বন্ধ থাকলেও আমরা চাইল্ড ক্যাবিনেটের সদস্য-ছাত্রীদের নিয়ে প্রতি মাসে গ্রামের এলাকায় গিয়ে সমস্যায় পড়া অভিভাবক, ছাত্রীদের নিয়ে কথা বলেছি।’’ স্কুলের পড়ুয়া ও শিক্ষিকাদের এই ভূমিকাতেই স্কুলছুট শুধু রোখা গিয়েছে তাই নয়, ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে।

মাদ্রাসা পর্ষদের সচিব রেজানুল করিম তরফদার বলেন, ‘‘ পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ, গান, খেলাধূলায় ছাত্রীদের উৎসাহ দিতে কাজ করছে এই মাদ্রাসা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

madrasah Girl students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE