মিঠু পেশায় পরিচারিকা। ডায়মণ্ড হারবারের এক শিক্ষকের বাড়িতে গৃহকর্মে সাহায্য করতেন। ব্যক্তিগত ভাবে কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকী বা তাঁর ড্রাইভার রবীন কাউকেই চিনতেন না। ফাইল চিত্র।
গড়িয়াহাট জোড়া খুনের তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে ধৃত মিঠু হালদারের ভূমিকা। বুধবারই ডায়মন্ড হারবার থেকে গ্রেফতার করা হয় মিঠুকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মিঠু পেশায় পরিচারিকা। ডায়মণ্ড হারবারের এক শিক্ষকের বাড়িতে গৃহকর্মে সাহায্য করতেন। ব্যক্তিগত ভাবে কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকী বা তাঁর ড্রাইভার রবীন কাউকেই চিনতেন না। কোনও দিন তাঁদের মুখোমুখি হননি। কিন্তু তদন্তকারীদের অনুমান, সুবীরকে হত্যা করা থেকে শুরু করে হত্যাকারীরা কোন পথে পালাবে, তার সবই পরিকল্পনা করেন তিনি। বুধবার বিকেল চারটের সময় ওই পরিচারিকাকে তাঁর ডায়মণ্ড হারবারের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গত রবিবার মিঠুর ছেলে ভিকি এবং তাঁর বন্ধুরা কাঁকুলিয়ার সুবীরের বাড়িতে হাজির হন। বাড়ি কেনার নাম করে দেখা করেন সুবীরের সঙ্গে। পরে সেই বাড়িরই দোতলার ঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় সুবীরের দেহ এবং তিন তলার ঘর থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ড্রাইভার রবীনের দেহ।
বুধবার মিঠুর ডায়মণ্ড হারবারের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েকটি রক্তমাখা পোশাক উদ্ধার করে পুলিশ। ওই পোশাক ভিকি এবং তাঁর সঙ্গীদের বলেই পুলিশের সন্দেহ। মিঠু যে বাড়িতে ভাড়া থাকেন, সেই বাড়ির মালিক জানিয়েছেন, দু’দিন আগে ওই রক্তলাগা পোশাক মিঠুকে কাচতে দেখেছিলেন তিনি। প্রশ্ন করায় মিঠু তাঁদের বলেছিলেন, ‘‘ছেলে পুজোয় মারপিট করেছে। তাতে জখম হওয়ায় রক্ত লেগেছে পোশাকে।’’ বুধবার মিঠুকে গ্রেফতারের পাশাপাশি পুলিশ ওই পোশাকগুলিও বাজেয়াপ্ত করেছে।
বুধবার মিঠুকে গ্রেফতার করার পর টানা জেরা করেন তদন্তকারীরা। প্রথমে ঘটনাটি ছেলের মুখে শুনেছেন বলে দাবি করলেও পরে জেরায় মিঠু স্বীকার করে নেন, সুবীরকে হত্যার ষড়যন্ত্রে তিনি প্রথম থেকেই জড়িত ছিলেন। এমনকি সুবীরকে খুন করার পর ভিকি এবং তাঁর সঙ্গীরা যে বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে পালাবেন, সেই উপায়ও বাতলেছিলেন মিঠুই।
কাঁকুলিয়ায় সুবীরের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই কাঁকুলিয়া রেল গেটের কাছে মিঠুর শ্বশুরবাড়ি। মিঠু বেশ কয়েক বছর সেখানে ছিলেন। তবে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি ডায়মণ্ড হারবারে একটি বাড়িতে চলে আসেন। তবে কাঁকুলিয়ার বাড়িতে বরাবরই ভিকির যাতায়াত ছিল।
নিহত কর্পোরেট কর্তা সুবীর কাঁকুলিয়ায় তাঁর পৈতৃক বাড়িটি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন দীর্ঘ দিন ধরেই। কাগজে তার বিজ্ঞাপন দেখে এর আগেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ভিকি। রবিবার নতুন ক্রেতা সেজে তিনি কর্পোরেট কর্তা সুবীরের সঙ্গে দেখা করেন। তবে সুবীর তাঁকে চিনে ফেলেন বলে অনুমান। তার পরেই সম্ভবত সুবীরকে হত্যা করেন ভিকি এবং তাঁর বন্ধুরা। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, ভিকি এবং তাঁর বন্ধুদের খোঁজে এখনও তল্লাশি চলছে। তাদের খোঁজ পাওয়া গেলে তবেই জোড়া খুনের ঘটনাটি সম্পর্কে তারা বিশদে জানাতে পারবে। আপাতত বৃহস্পতিবার মিঠুকে আদালতে তুলে তাঁকে হেফাজতে চাইবে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy