Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

পুলিশ বাপের বাড়ি ফেরাল ‘নির্যাতিতাকে’

শুক্রবার রাতেই কলকাতা পুলিশ মহিলাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে রামনগর থানায় নিয়ে যায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯ ০২:৩৪
Share: Save:

শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ার পরে পুলিশ দিয়ে বাড়ি পাঠানো হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামনগরের ‘নির্যাতিতা’কে।

শুক্রবার রাতেই কলকাতা পুলিশ মহিলাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে রামনগর থানায় নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর কাছ থেকে কিছু তথ্য নিয়ে মহিলাকে পৌঁছে দেওয়া হয় বাপের বাড়িতে। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত-রিপোর্ট রামনগর থানাকে দেওয়া হয়েছে।

শনিবার ফোনে ওই তরুণী জানান, রামনগর থানার পুলিশ আদালত চত্বরে তাঁর আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টার কথা জেনে বাপের বাড়ির এলাকায় গিয়ে পড়শিদের কাছ থেকে খোঁজখবর নেয়। তিনি কেমন, কোথায় যাতায়াত করেন, শ্বশুরবাড়ি থেকে অত্যাচারের পরে কোথায় ছিলেন— এ সব তথ্য জানতে চায়। ওই তরুণীর অভিযোগ, ‘‘আমি আদালতে হাত কেটে মরার অভিনয় করে অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে চেয়েছিলাম, এমন মিথ্যা কথা পুলিশ রটিয়ে গিয়েছে।’’

সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামনগর থানা এলাকার বছর একত্রিশের ওই মহিলা কলকাতা হাইকোর্টের ‘সি’ গেটের বাইরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। কলকাতা পুলিশের কাছে ওই তরুণী বয়ান দেন, গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পরে বিচার না পেয়েই তিনি হতাশায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মহিলা এর আগে ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মারধরের অভিযোগ করেছিলেন। সে সময়ে দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। বাকিরা পলাতক।

ওই মহিলার বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, গণধর্ষণের তদন্তে রামনগর থানার পুলিশের গাফিলতি ছিল। টাকার অভাবে তিনি ভাল আইনজীবীও পাননি। অনেকে জেলা ‘লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি’-র ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকেরই অভিযোগ, সাধারণ মানুষ জানেনই না, জেলায় জেলায় নিখরচায় আইনি পরিষেবা পাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ওই মহিলা বলেন, ‘‘আমায় তো এ সব কেউ বলেনি।’’ যদিও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ‘লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি’-র পক্ষে সেলিম আহমেদ আনসারি বলেন, ‘‘সর্বত্র প্যারালিগ্যাল ভলান্টিয়ার দিয়ে প্রচার চালানো হয়। সাধারণ মানুষ জানেন না, এমনটা ঠিক নয়।’’

শনিবার তরুণীর শ্বশুরবাড়ির এলাকায় পড়শিদের অনেকে জানালেন, সম্পত্তির লোভে অত্যাচার চলত তরুণীর উপরে। তাঁর দেওয়ের স্ত্রীকেও মাস দু’য়েক আগে অত্যাচার করে বাড়িছাড়া করেছে পরিবারের বাকিরা। ‘নির্যাতিতা’ তরুণীর স্বামী কর্মসূত্রে ভিন্‌ রাজ্যে থাকেন। মহিলা অসুস্থ শ্বশুরের সেবা করায় দুই ভাশুর ও তাদের স্ত্রীরা ধরে নিয়েছিল, সম্পত্তি হাতানোর জন্যই শ্বশুরমশাইকে যত্নআত্তি করছেন ওই মহিলা। মহিলা ও তাঁর স্বামীকে মারধর করে সম্পত্তি লিখিয়ে নেওয়া হয়। স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে মহিলাকে দুই ভাশুর ধর্ষণ করে বলেও অভিযোগ। মহিলার দাবি, পুলিশের কাছে গিয়েও সুবিচার পাননি। সে কারণেই কলকাতায় এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলার দুই ভাশুর ও এক দেওর। দুই ভাশুর একই পরিবারের দুই বোনকে বিয়ে করেছেন। এখন পরিবারের আরও দুই ছেলে ও তাঁদের বৌকে তাড়াতে চাইছে বাকি দু’জন।

তবে বড় ভাশুরের স্ত্রীর দাবি, সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা। তাঁর কথায়, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় এর আগেও অভিযোগ করেছিল ও। দিনের পর দিন অত্যাচার চালাচ্ছে আমাদের উপরে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Gang Rape Ramnagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy