Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Gaighata

WBCHSE Results 2022: বাড়ি বাড়ি জল বিক্রি করে উচ্চ মাধ্যমিকে একাদশ, সিএ পড়ার খরচ নিয়ে চিন্তায় গাইঘাটার সায়ন

নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান সায়ন। ভবিষ্যতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোয়েন্‌কা কলেজ বাণিজ্য নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর।

উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে একাদশ গাইঘাটার সায়ন সাহা।

উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে একাদশ গাইঘাটার সায়ন সাহা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২২ ২১:০৯
Share: Save:

বাবা মানসিক অসুস্থতার জেরে শয্যাশায়ী। বাদাম প্যাকেজিংয়ের কাজ করে যথাসামান্যই আয় মায়ের। টানাটানির সংসারে তাই রোজগারে জুটে পড়েছেন ছেলে। তবে সে জন্য উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশোনায় অবহেলা করেননি। বাড়ি বাড়ি জল বিক্রি করার ফাঁকেও পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে একাদশ হওয়া গাইঘাটার সায়ন সাহা। উত্তর ২৪ পরগনার জেলার মধ্যে তাঁর স্থান ষষ্ঠ।

উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০০-র মধ্যে সায়নের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৮। গাইঘাটা ব্লকের চাঁদপাড়া বাণী বিদ্যাবিথী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। তবে এই নম্বর পাওয়ার জন্য সংসারের হাজারো প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দিনরাত খেটেছেন সায়ন। পড়াশোনার খরচ জোগাতে মা এবং নিজের রোজগার ছাড়াও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর ঠাকুরমা। সায়ন বলেন, ‘‘আমার টিউশন ফি বা বইখাতা কেনার খরচাপাতি আসত মামাবাড়ি থেকে। জলের ব্যবসা থেকে কিছুটা খরচ মেটাতে পারতাম। টুকটাক কাজ করে মা কিছুটা সাহায্য করত। মায়ের রোজগারের টাকায় সংসারও চলে। খাওয়াখরচ দিতেন আমার ঠাকুরমা।’’

উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৮৮ পেয়ে খুবই খুশি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সায়ন। জল বিক্রির পাশাপাশি পড়াশোনা কী ভাবে সামলাতেন? প্রশ্নের উত্তরে সায়ন বলেন, ‘‘সাধারণত সন্ধে ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পড়াশোনা করতাম। তার পর জলের ব্যবসায় হাত লাগাতাম। কারও জলের প্রয়োজন হলে রাত ১০টার পর তাঁদের জল দিতে যেতাম। রাত ১১টা পর্যন্ত সে কাজ করে খাওয়াদাওয়া সেরে ঘুমাতে যেতাম।’’

ছেলের এই সাফল্যে গর্বিত সায়নের মা ঝুমা সাহা। তিনি বলেন, ‘‘আমার শাশুড়ি সংসারের খরচ চালান। দেওরেরাও যথেষ্ট সাহায্য করেছেন। আমার মেয়ে ক্লাস সিক্সে পড়ে। আশা করি, ছেলে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে এঁদের সকলকে সাহায্য করতে পারবে।’’

নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান সায়নও। ভবিষ্যতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোয়েন্‌কা কলেজ বাণিজ্য নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। তবে উচ্চশিক্ষার জন্য অর্থিক প্রতিকূলতা ভাবাচ্ছে তাঁকে। সায়নের কথায়, ‘‘ভবিষ্যতে সিএ পড়ার ইচ্ছে রয়েছে। তবে আমার একার পক্ষে সেই পড়াশোনার খরচ জোগানো সম্ভব নয়।’’ যদিও সায়নের পড়াশোনায় সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস। তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়টি নিয়ে আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হওয়া চেষ্টা করব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Gaighata HS Exam HS results
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE