Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
FSSAI

মিষ্টির ছড়াছড়ি, নেই ল্যাবরেটরি

ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি’ (এফএসএসএআই)-র নয়া আইন বলছে, মিষ্টির বাক্স এবং শোকেস— সর্বত্রই মিষ্টি উৎপাদনের তারিখ এবং কত দিনের মধ্যে খেলে সেটির সেরা স্বাদ ও মানের হদিস মিলবে, তা লিখে রাখতে হবে।

—ফাইল ছবি

—ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:১১
Share: Save:

বিশ্বাসে মিলায় মিষ্টি, তর্কে বহু দূর! মিষ্টি নিয়ে নয়া সরকারি ফরমানে এ বার কি সেই বিশ্বাসের ভিতটাই নড়ে যাবে? কেন্দ্রীয় সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা এবং মান নির্ণয় কর্তৃপক্ষের নয়া ফরমানে এই প্রশ্ন উঠছে অখ্যাত থেকে বিখ্যাত— বাঙালির আদরের মিষ্টি বিশারদদের মধ্যে। কারণ, ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি’ (এফএসএসএআই)-র নয়া আইন বলছে, মিষ্টির বাক্স এবং শোকেস— সর্বত্রই মিষ্টি উৎপাদনের তারিখ এবং কত দিনের মধ্যে খেলে সেটির সেরা স্বাদ ও মানের হদিস মিলবে, তা লিখে রাখতে হবে। নতুন আইন মেনে চলতে হবে আগামী জুন থেকে। এ নিয়েই তৈরি হয়েছে যত আশঙ্কা।

রাজ্যের ফুড সেফটি কমিশনের দফতর সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, কেউ দোকানে গিয়ে একটা দানাদার বা গুজিয়া যা-ই খান, তা কত দিনের পুরনো, শোকেসের ট্রেতে সেই উল্লেখ রাখতে হবে। তা ছাড়া, অনেক মিষ্টি বিপণিই ছানার মানে আপস করে। ‘‘খারাপ মিষ্টিতে সুগন্ধী ছিটিয়ে চালানো হল, লোকে খেয়ে অসুস্থ হল, এটা চলতে পারে না!’’— বলছেন জনৈক সরকারি কর্তা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, মিষ্টির গুণমান যাচাই করবে কে? পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি সন্দীপ সেনের প্রশ্ন, এত সংখ্যক দোকানের জল থেকে শুরু করে মিষ্টির নানা উপাদানের মান কোথায় যাচাই করা হবে? রিষড়ার নামী মিষ্টি-স্রষ্টা অমিতাভ মোদকেরও আক্ষেপ, সরকারি তরফে মিষ্টির উপাদান যাচাইয়ের কোনও পরিকাঠামো নেই। জেলায় জেলায় ল্যাবরেটরি বা পরীক্ষাগার তো দূরের কথা!

এফএসএসএআই-এর তরফে আইন হাতেকলমে প্রয়োগ করতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের উপরে নির্ভর করা হয়। এক কর্তার কথায়, ‘‘এক বছর আগেই ১৫০ জন ফুড সেফটি ইনস্পেক্টর নিয়োগ করা হয়েছে। এখন ব্লক-পিছু দু’জন রয়েছেন।’’

সে না-হয় হল, কিন্তু অত ল্যাবরেটরি কোথায়? ফুড সেফটি কমিশনের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘কনভেন্ট রোডে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক ল্যাবরেটরি ছাড়াও কলকাতায় ছ’টি বেসরকারি ল্যাবরেটরি এনএবিএল (ন্যাশনাল বোর্ড অব অ্যাক্রেডিটেশন ল্যাবরেটরি) স্বীকৃত। শিলিগুড়িতেও সরকারি পরীক্ষাগার রয়েছে।’’ সরকারি পরীক্ষাগারের পরিকাঠামো বাড়াতে দিল্লিতে আবেদন করা হয়েছে।

এখন হাতে গোনা মিষ্টির দোকান ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষা করায়। সমিতির স্বীকৃত দোকান রাজ্যে হাজার দশেক। সব মিলিয়ে ২০-২২ হাজার। শুধু কলকাতাতেই পাঁচ-ছয় হাজার মিষ্টির দোকান। এত সংখ্যক দোকানকে আইনের শাসনে নিয়ে আসার পরিকাঠামো কই? ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষা করাতে এখন দেড় মাসের বেশি সময় লাগে। জুনের পরে পরিস্থিতি জটিলতর হবে বলেই অনেকের আশঙ্কা। দক্ষিণ কলকাতার এক নামী মিষ্টি বিপণির কর্ণধার সুদীপ মল্লিক বলছেন, ‘‘আমরা সাধারণত সরকার-স্বীকৃত কয়েকটি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে উপাদান পরীক্ষা করাই। শোকেসের সব মিষ্টির মানের ফিরিস্তি নিয়মিত লেখাটা গুরু দায়িত্ব। কিন্তু কাজটা সুষ্ঠু ভাবে সারতে ল্যাবরেটরির সাহায্য না পেলে মুশকিলে পড়ব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy