ফের কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার কিছু এলাকায় ফিরছে এমন ছবি।
কন্টেনমেন্ট জোনে ফের লকডাউন ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। আগামী বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে কন্টেনমেন্ট জোনগুলিকে কড়া লকডাউনের নির্দেশিকা জারিও করেছে নবান্ন। ওই এলাকায় সরকারি এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। চলবে না গাড়ি। কল-কারখানা, মার্কেট কমপ্লেক্স, ব্যবসা বাণিজ্যেও নিষেধাজ্ঞা থাকবে। তবে জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ছাড় মিলবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাওয়া যাবে। ওই এলাকাগুলিতে যাতে নিয়ম মানা হয়, সে কারণে পুলিশ এবং প্রশাসনের কড়া নজরদারি থাকবে ২৪ ঘণ্টাই।
কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা সহ বিভিন্ন জেলা প্রশাসন ফের লকডাউনের বিষয়ে নবান্নে রিপোর্ট পাঠায়। এ বিষয়ে পর্যালোচনার পর মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কন্টেনমেন্ট জোনগুলিতে কড়া লকডাউনের বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করেছেন। ইতিমধ্যে কলকাতায় বেশ কয়েকটি এলাকায় লকডাউনের বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়ে গিয়েছে। সিল করে দেওয়া হয়েছে বহুতল। বিভিন্ন রাস্তায় নতুন করে ব্যারিকেডও বসেছে। এ দিন কলকাতার পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম।
কলকাতায় কন্টেনমেন্ট জোনের মধ্যে ভবানীপুর, উল্টোডাঙা, ফুলবাগান, বেলেঘাটা, আলিপুর, কাকুরগাছি, হিডকো, বিজয়গড়, যাদবপুর, নিউ আলিপুর, কসবা, মুকুন্দপুর, অজয়নগরের মতো এলাকাগুলি রয়েছে। ওই এলাকাগুলিতে প্রয়োজনে রাস্তা বন্ধ রাখা হবে। বহুতলের ক্ষেত্রে ঢোকা-বেরনোর পথও আটকে দেওয়া হতে পারে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস যাতে পান বাসিন্দারা, তার বন্দোবস্ত করবে প্রশাসন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও সব মহকুমা এলাকাতেই কন্টেনমেন্ট জোন রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলিপুর সদর মহকুমা এলাকায়, কারণ এই মহকুমার অধিকাংশ এলাকা কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায়। এর মধ্যে রয়েছে বিষ্ণুপুর বিধানসভা এলাকার ঘোষেরহাট, দক্ষিণ গৌরীপুর, আমগাছিয়া, কন্যানগর গভর্নমেন্ট কলোনি, আশুতি রথতলা, চকডাঙা খেলার মাঠ, কয়াল পাড়া, আকান পাড়ার মতো এলাকা। খাসিটিকা, নন্দভাঙা-নস্করপাড়া, মল্লিকপাড়া, দৌলাপুর শেখপাড়া, রামনগর মণ্ডলপাড়া, চক এনায়েতপুর, উদয়রামপুর, মীরপুর, বড়গগন গোহালিয়াস পশ্চিম উমেদপুরের মতো এলাকা।
এ ছাড়া বারুইপুর মহকুমার রাজপুর সোনারপুর, বারুইপুর, ডায়মন্ড হারবার ও জয়নগর মজিলপুর পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডেও রয়েছে প্রচুর কন্টেনমেন্ট জোন। এ ছাড়া ডায়মন্ড হারবার মহকুমার ফলতা, মগরাহাট ১ ও ২, কুলপি, মন্দিরবাজার, মথুরাপুর-২, মন্দিরবাজার ব্লকের বিভিন্ন এলাকাতেও কন্টেনমেন্ট জোন রয়েছে। কাকদ্বীপ মহকুমার পাথরপ্রতিমা, সাগর ব্লকের বহু এলাকাতেও কন্টেনমেন্ট জোন রয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কন্টেনমেন্ট জোনের তালিকা by Saubhik Debnath on Scribd
গত কয়েক দিনে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছিল। আক্রান্তের সংখ্যা আটশোর ঘরে পৌঁছে গিয়েছিল। রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২২ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৮৬১ জনের। এই সময়ে কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা না করা গেলে, তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। সে কারণে ফের রাজ্যে লকডাউন ঘোষণা করা হল। কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরেও ছিল ‘বাফার জোন’। এ বার কন্টেনমেন্ট জোনের সঙ্গে বাফার জোনকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে কন্টেনমেন্ট জোনের পরিধি আরও বেড়ে গিয়েছে। ওই পুরো এলাকাতেই থাকবে লকডাউনের কড়া নজরদারি।
উত্তর ২৪ পরগনার কন্টেনমেন্ট জোনের তালিকা by Saubhik Debnath on Scribd
আরও পড়ুন: করোনায় শিক্ষক স্বামীর মৃত্যু, ২ সন্তানকে কোলে নিয়ে রেললাইনে ঝাঁপ স্ত্রীর
কন্টেনমেন্ট জোনের বাসিন্দাদের চলা-ফেরাও নিয়ন্ত্রিত হতে পারে। যেতে পারবেন না অফিসে। একমাত্র জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ছাড় পাওয়া যেতে পারে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হোম ডেলিভারির বন্দোবস্ত করবে স্থানীয় প্রশাসন। কলকাতা এলাকায় পুরসভা এবং পুলিশ যৌথভাবে বিষয়টি নজরদারি করবে। জেলার ক্ষেত্রে তা জেলাশাসক, পুলিশ সুপার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে, যাতে বাসিন্দারা লকডাউন মেনে চলে।
আরও পড়ুন: করোনার কোপে ক্যাম্পাস, ৩০% সিলেবাস কমাচ্ছে সিবিএসই, ঘোষণা মন্ত্রীর
কলকাতায় কন্টেমেন্ট জোনের সংখ্যা বেড়ে ৩৩ হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। ওই এলাকাগুলিতে আরও কড়াভাবে নজরদারি যাতে হয়, সে বিষয়ে পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, “অনেক মানুষই অযথা বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন। মুখে মাস্ক পড়ছেন না। দূরত্ববিধিও অনেক জায়গায় শিকেয় উঠেছে। এক দোকানে অনেকে একসঙ্গে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন। পুলিশকে এই বিষয়গুলি কড়া হাতে মোকাবিলা করতে বলা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy