Advertisement
E-Paper

সিংহ পাচারে নাম প্রাক্তন সার্কাসকর্তার

রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিন্‌হা রবিবার বলেন, ‘‘ওয়াসিম-সহ ধৃত তিন জন শনিবার ব্যারাকপুর আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। তাই তাঁদের হেফাজতে নিয়ে বিশদ ভাবে জেরা করার সুযোগ মেলেনি।’’

 উদ্ধার হওয়া জাভান (বাঁ দিকে) ও হোয়াইট হেডেড লাঙুর। ফাইল চিত্র

উদ্ধার হওয়া জাভান (বাঁ দিকে) ও হোয়াইট হেডেড লাঙুর। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৯ ০৬:০১
Share
Save

সিংহ পাচারের ঘটনায় ধৃতেরা নেহাত ‘ক্যারিয়ার’ বা বাহক নয়। তারা আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করছেন কেন্দ্রীয় বন মন্ত্রক এবং রাজ্য বন দফতরের আধিকারিকদের একাংশ। এ রাজ্যের এক প্রাক্তন সার্কাস ব্যবসায়ী এবং আর এক দাগি বন্যপ্রাণী পাচারকারীর সঙ্গে অভিযুক্তদের যোগসূত্রের কথাও জেনেছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, ধৃত ওয়াসিম রহমানের সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর যোগাযোগ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে তদন্তকারীদের হাতে সবিস্তার তথ্য নেই। সেই জন্যই সিংহ পাচারের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রের গভীরে যেতে পারছেন না তাঁরা।

রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিন্‌হা রবিবার বলেন, ‘‘ওয়াসিম-সহ ধৃত তিন জন শনিবার ব্যারাকপুর আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। তাই তাঁদের হেফাজতে নিয়ে বিশদ ভাবে জেরা করার সুযোগ মেলেনি।’’ তিনি জানান, অভিযুক্তদের জামিন খারিজ করার জন্য আজ, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন দাখিল করতে পারে বন দফতর। অবকাশকালীন বেঞ্চে যাতে মামলাটির দ্রুত শুনানি হয়, সেই আর্জিও জানানো হবে। এ ব্যাপারে তৎপর হওয়ার কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় বন মন্ত্রকও।

শুক্রবার গভীর রাতে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে সিংহশাবক এবং তিনটি বিরল প্রজাতির বাঁদর-সহ ওয়াসিম রহমান, ওয়াজিদ আলি এবং মহম্মদ গুলাম গাউসকে পাকড়াও করে কেন্দ্রীয় বন্যপ্রাণ অপরাধ দমন বুরো (ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল বুরো বা ডব্লিউসিসিবি) এবং রাজ্য বন দফতরের বন্যপ্রাণ শাখা। জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে ব্যারাকপুর আদালতে হাজির করানো হয় তাঁদের। ওই আদালতের বিচারক তিন জনকেই জামিনে মুক্তি দেন। বন দফতরের কর্তাদের আক্ষেপ, সরকারি কৌঁসুলিকে জামিনের বিরোধিতা করে বক্তব্য পেশের সুযোগ দেওয়া হয়নি।

উদ্ধারের পরে সিংহশাবক এবং বাঁদরগুলিকে আলিপুর চিড়িয়াখানায় রাখা হয়েছে। তারা সুস্থই আছে। সিংহশাবকটি ভারত না আফ্রিকার, নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রাজ্য জ়ু অথরিটির সদস্য-সচিব বিনোদকুমার যাদব জানান, সিংহশাবকটি নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পরে তার রক্ত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। সেই রিপোর্টেই তার বংশপরিচয় পাওয়া যাবে।

বন মন্ত্রকের একটি সূত্রের দাবি, ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে সবিস্তার জেরা করার সুযোগ না-মিললেও বেশ কিছু তথ্য ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। যেমন, ওয়াসিম দীর্ঘদিন ধরেই এই ধরনের চক্রে যুক্ত। ওই ব্যবসায়ী এবং অন্য এক পাচারকারী আগে নেপালের পাচারকারীদের সঙ্গে যুক্ত ছিল। পরবর্তী কালে সেই ব্যবসার জাল বাংলাদেশেও ছড়িয়েছে তারা। ওই সিংহশাবক ও বাঁদরগুলিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কোনও দেশ থেকে বাংলাদেশ হয়ে এ রাজ্যে ঢোকানো হয়েছিল। প্রাণীগুলিকে হাত-পাঁ বেঁধে নাইলনের ব্যাগে পুরে বনগাঁ সীমান্তের ‘নজরদারিহীন’ কোনও এলাকা দিয়ে নিয়ে এসেছিল চোরাকারবারিরা। এই পথে তারা এর আগেও প্রাণী পাচার করেছে। এই ধরনের প্রাণীকে মূলত পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতেই পাঠানো হয়। বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, কিছু ধনী ব্যক্তি বাগানবাড়িতে লুকিয়ে এই সব প্রাণী পোষেন। যদিও এ-পর্যন্ত সেই সব ধনী ব্যক্তি নাগালের বাইরেই রয়ে গিয়েছেন। এ বারেও তার পুনরাবৃত্তি হয় কি না, সেটাই দেখার।

Crime Wildlife Trafficking Circus Owner

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}