‘ফাগুনের আঁচে’ পুড়ছে জঙ্গল। পূর্ব বর্ধমানের পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের আদুরিয়া জঙ্গলের কয়েকশো হেক্টর ইতিমধ্যেই ‘দাবানলের’ গ্রাসে চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ। সেখানকার বাসিন্দা ময়ূর, ভারতীয় ধূসর নেকড়ে, বনবিড়াল, সজারু, খরগোশ-সহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কয়েক হাজার হেক্টর জমি জুড়ে বিস্তৃত আউশগ্রাম বনাঞ্চলের অন্দরে বেশ কিছু গ্রামও রয়েছে। স্থানীয় লেখক তথা বন্যপ্রাণপ্রেমী রাধামাধব মণ্ডলের অভিযোগ, প্রায় প্রতি বছরই বসন্তে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ফলে, গাছের যেমন ক্ষতি হয়। তেমনই ক্ষতি হয় অনেক পশুপাখি, কীটপতঙ্গের। গত কয়েক দিন ধরে আকুলিয়া গ্রামের আশপাশের কালিকাপুর, হেদগড়া জঙ্গলে আগুন জ্বললেও বন দফতর প্রাথমিক ভাবে উদাসীনতা দেখিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়দের একাংশ।
আরও পড়ুন:
রাধামাধব জানিয়েছেন, এ বার বসন্ত ঋতুর আগে জেলা পুলিশের ছোড়া ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ত্রিদিব রাজকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামে গ্রামে প্রচার চালিয়েছিলেন স্থানীয় পরিবেশপ্রেমীরা! সেই প্রচারে অংশ নিয়েছিল পূর্ব বর্ধমান বনবিভাগও। কিন্তু পর্যাপ্ত নজরদারি এবং আগুন নেভানোর জন্য প্রয়োজনীয় জলের অভাবে পরিস্থিতি বিস্তীর্ণ অরণ্যভূমি জ্বলে ছাই হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘গত ১০ বছরে এমন আগুন লাগেনি। নিজের চোখে দেখে আশ্চর্য হয়েছি। শুধু একটা, দুটো বোর্ড দেওয়াই সার কোনো টহলদারি নেই বন দফতরের। ফলে পিডব্লিউডি-র রাস্তার উপর থেকেই আগুন লাগানো হয়েছে। তিন-চার দিন ধরে জ্বলছে। বন দফতরকে ফোন করে জানালে আগুন নেভাতে সচেষ্ট হয়।’’
পানাগড়ের রেঞ্জ অফিসার প্রণব কুমার দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এখন আপাতত আগুন নেভানোর কাজ শেষ হয়েছে। নতুন করে কোথাও আগুন লাগার খবর নেই। তিনি বলেন, ‘‘তবে জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় মাঝে মধ্যে আগুন ধরে যাচ্ছে। আমরাও চেষ্টা করছি আগুন নেভানোর। ফায়ার ব্লো নিয়ে জঙ্গলে আগুন নেভানোর কাজ করা হচ্ছে। আউশগ্রাম-২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শেখ আব্দুল লালন বলেন, ‘‘জঙ্গলে আগুন লাগার পর থেকেই বনকর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভানোর কাছে হাত লাগিয়েছেন। না হলে আগুন আরো ভয়াবহ আকার নিত।’’ স্থানীয় গেঁড়াইগ্রামের বাসিন্দা শেখ সঞ্জু বলেন, আগুনে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে জঙ্গলের। আগুন সম্পূর্ণ ভাবে নেভাতে না পারলে খুব সমস্যা হবে।