Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
21 July TMC Rally

ময়নাগুড়ির গ্রাম থেকে এই প্রথম একুশের সমাবেশে বৃদ্ধ কৃষক

ময়নাগুড়ি থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে মধ্যসাপ্তিবাড়ি গ্রাম। সেখানেই দুই ছেলে, নাতি-নাতনিকে নিয়ে বসবাস ইছামুদ্দিনের। স্ত্রী মারা গিয়েছেন। বৃদ্ধের সংসার চলে চাষ-আবাদ করে। এই প্রথম ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে কলকাতায় পা রাখা।

মহম্মদ ইছামুদ্দিন

মহম্মদ ইছামুদ্দিন —ফাইল চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৪ ০৬:০৯
Share: Save:

চোখ কুঁচকে যত দূর দেখা যায়, চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বৃদ্ধ। তাঁর থেকে মঞ্চের দূরত্ব অবশ্য বেশি নয়। কিন্তু তিনি বলছেন, ‘‘চোখে ভাল দেখি না, চশমাও করা হয়নি।’’ উস্কোখুস্কো চুল, অবিন্যস্ত দাড়ি। হাঁটু পর্যন্ত তোলা লুঙ্গির উপরে সাদা পাঞ্জাবি আর কুঁচকে আসা চামড়ায় বয়স এবং দারিদ্রের ছাপ স্পষ্ট। জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি থেকে আসা, বছর ৭০-এর মহম্মদ ইছামুদ্দিন তবু বলছেন, ‘‘সরকার তো আমাদের যত্ন নেওয়ার কথা ভাবছে। দেখিই না, শেষ পর্যন্ত কী হয়!’’

ময়নাগুড়ি থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে মধ্যসাপ্তিবাড়ি গ্রাম। সেখানেই দুই ছেলে, নাতি-নাতনিকে নিয়ে বসবাস ইছামুদ্দিনের। স্ত্রী মারা গিয়েছেন। বৃদ্ধের সংসার চলে চাষ-আবাদ করে। এই প্রথম ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে কলকাতায় পা রাখা। রবিবার মঞ্চের কাছাকাছি এক কোণে ঠায় বসেছিলেন বৃদ্ধ। বৃষ্টিতে ভিজলেও পরোয়া করেননি। ভিড়ের মধ্যেই ইছামুদ্দিন বললেন, ‘‘বরাবর কংগ্রেসের সমর্থক ছিলাম। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই দেখে তৃণমূলে যোগ দিই। চাষবাস করে পেট চলে। কেন্দ্রের থেকে চাষিরা ভাতা পান না। কিন্তু দিদির সরকার বছরে দশ হাজার টাকা কৃষকবন্ধু ভাতা দিচ্ছে। সেটা আমাদের কাছে অনেক।’’ ময়নাগুড়ির জমিতে পাট চাষ বড় ভরসা কৃষকদের। এ ছাড়াও ধান, আনাজ চাষ হয়ে থাকে। ইছামুদ্দিনের কথায়, ‘‘মাত্র ছ’বিঘা জমিতে চাষবাস করে সংসার চালানো দিন দিন কঠিন হচ্ছে। লক্ষ্মীর ভান্ডার, বার্ধক্য ভাতা আছে বলে কোনও রকমে চালাতে পারছি।’’

জলপাইগুড়ি থেকে ট্রেনে রওনা দিয়েছিলেন গত শুক্রবার। শনিবার সকালে কলকাতায় পৌঁছে ইছামুদ্দিন উঠেছেন সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে। সঙ্গে বছর ত্রিশের নাতি। তাঁর বাড়ি জলপাইগুড়ি লোকসভা ও ময়নাগুড়ির বিধানসভা কেন্দ্রের অধীনে। দু’টিই বিজেপির দখলে। ইছামুদ্দিনের কথায়, ‘‘আমরা হিন্দু-মুসলমান বরাবর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থেকেছি। কিন্তু বিজেপি আসার পর থেকেই জাতপাতের লড়াইয়ে নেমে ভাগাভাগি করার চেষ্টা করছে। ছোটখাটো ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহু বার ওরা গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করেছে। তবে সফল হয়নি।’’

বৃদ্ধের পাশে তখন বসেছিলেন একই গ্রাম থেকে আসা হরমোহন বর্মণ। দু’জনে দীর্ঘদিনের বন্ধু। হরমোহনের দিকে তাকিয়ে ইছামুদ্দিন বলতে থাকেন, ‘‘আমরা বরাবর একসঙ্গে ছিলাম। থাকব। দুর্গাপুজোয় আমি সপরিবার হরমোহনের বাড়ি যাই। ইদেও হরমোহনেরা আমাদের বাড়িতে আসে। আমরা নিজেরা ঠিক থাকলে কেউ ভাঙন ধরাতে পারবে না।’’ হরমোহন রাজবংশী সম্প্রদায়ভুক্ত। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল সরকার রাজবংশীদের জন্য অনেক কিছু করেছে। সেটা কি কম পাওয়া?’’

অন্য বিষয়গুলি:

21 July TMC Rally TMC Rally TMC Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy