প্রতীকী চিত্র
অতিমারির দীর্ঘায়িত প্রকোপে রাজ্য জুড়ে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিকাঠামো বেড়েছে অনেকটা। আধুনিক যন্ত্রপাতি থেকে চিকিৎসার ধরন— বদল এসেছে সবেতেই। কিন্তু সেই তুলনায় গ্রামবাংলায় চিকিৎসকের সংখ্যা কম। এই প্রেক্ষিতে আপাতত ছ’টি জেলায় ছ’টি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল গড়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য সরকার। গত ১০ বছরে আটটি মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে রাজ্যে। এই নতুন ছ’টি মেডিক্যাল কলেজ চালু হলে পরবর্তী পাঁচ বছরে চিকিৎসকের সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে যাবে। এখন রাজ্যে প্রতি বছর প্রায় ৩৪০০ চিকিৎসক পাশ করে বেরোন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, হুগলির আরামবাগ, হাওড়ার উলুবেড়িয়া, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত, পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, ঝাড়গ্রাম এবং জলপাইগুড়িতে নতুন মেডিক্যাল কলেজ তৈরির তোড়জোড় চলছে। প্রাথমিক ভাবে প্রতিটি নতুন মেডিক্যাল কলেজ যাত্রা শুরু করবে ১০০টি করে আসন নিয়ে। পরে শয্যা-সংখ্যা বাড়ানোর কথা ভাববে সরকার। সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, নতুন মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণে কেন্দ্রের অনুমতির প্রয়োজন হয়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দিষ্ট অফিসারেরা পরিকাঠামো এবং সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে তবে প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ছাড়পত্র দেয়। এ ক্ষেত্রে সেই ছাড়পত্র পেতে সমস্যা হবে না বলেই প্রশাসনিক কর্তাদের ধারণা।
সরকারি সূত্রের খবর, এক-একটি মেডিক্যাল কলেজ গড়তে আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকা করে খরচ হয়। এই ব্যয়ের ৬০ ভাগ দেয় কেন্দ্র, বাকি ৪০ ভাগ খরচ রাজ্যের। স্বাস্থ্যকর্তাদের আশা, নতুন মেডিক্যাল কলেজগুলির ক্ষেত্রে অর্থের অভাব হবে না।
এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, “নতুন মেডিক্যাল কলেজ যে-সব জায়গায় তৈরি হচ্ছে, সেখানে হয় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল অথবা জেলা হাসপাতাল রয়েছে। কোনও কোনও জায়গায় দু’টিরই সুবিধা পাওয়া যাবে। কারণ, পড়াশোনা এবং ইন্টার্নশিপের জন্য সেই ধরনের পরিকাঠামো প্রয়োজন হয়। সেই সঙ্গে দরকার অ্যাকাডেমিক ভবন, হস্টেলের সুবিধা ইত্যাদি। প্রস্তাবিত ছ’টি মেডিক্যাল কলেজের ক্ষেত্রে সেগুলি প্রস্তুত করতে বেশি সময় লাগবে না। সে-দিক থেকে দেখতে গেলে আরামবাগ এবং জলপাইগুড়ির পরিকাঠামো প্রায় প্রস্তুত রয়েছে।”
স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, আগামী বছর ডাক্তারিতে ভর্তির জন্য নিট বা সর্বভারতীয় প্রবেশিকা হওয়ার কথা সেপ্টেম্বর নাগাদ। সেই পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জনকারী ছাত্রছাত্রীরা রাজ্যের চালু মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ যেমন পাবেন, সেই সঙ্গে আরামবাগ এবং জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজেও ১০০ জন করে মোট ২০০ আসনে ছাত্র ভর্তি করার সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি চারটি মেডিক্যাল কলেজ ধীরে ধীরে চালু করবে রাজ্য। সব ক’টি মেডিক্যাল চালু হলে বছরে অতিরিক্ত ৬০০ আসনে ছাত্র ভর্তি করা সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, শহরাঞ্চলে চিকিৎসকের অভাব না-থাকলেও গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসকের আকাল এখনও যথেষ্টই। করোনা শিক্ষা দিয়েছে, সর্বত্র চিকিৎসা পরিকাঠামো সমান না-হলে এমন পরিস্থিতিতে মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া কার্যত অসম্ভব। সেই কারণে বিশেষত গ্রামীণ এলাকায় বেশি করে চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা দরকার। এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, “করোনার সূত্রে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকাতেও পৌঁছে গিয়েছে। উপযুক্ত পরিকাঠামো, যন্ত্রপাতিও প্রস্তুত। কোভিড পর্ব শেষ হয়ে গেলেও জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে সেই পরিকাঠামোর ব্যবহার চালু রাখা প্রয়োজন। তাই রাজ্যে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো বিশেষ জরুরি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy