Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
টানা বৃষ্টিতে দুশ্চিন্তা

এক রাতে চারশো

প্রবল বৃষ্টির জেরে মঙ্গলবারই জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন এলাকা।

দুশ্চিন্তা: কোচবিহারে জল বাড়ছে তোর্সায়। বন্যার আশঙ্কায় নদীর আশপাশের বাসিন্দারা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

দুশ্চিন্তা: কোচবিহারে জল বাড়ছে তোর্সায়। বন্যার আশঙ্কায় নদীর আশপাশের বাসিন্দারা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

নিজস্ব সংবাদদাতা 
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯ ০২:২১
Share: Save:

একশো-দু’শো নয়, এক রাতেই বৃষ্টি ছাড়াল ৪০০ মিলিমিটার। পাহাড়-সমতলে এমন প্রবল বৃষ্টির জেরেই আলিপুরদুয়ার জেলার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। বুধবার নতুন করে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়। জলবন্দি হয়ে পড়েন বহু মানুষ। বিভিন্ন জায়গায় নদী বাঁধ, সেতু ও রাস্তার ক্ষতি হয়।

প্রবল বৃষ্টির জেরে মঙ্গলবারই জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন এলাকা। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরের পর বৃষ্টি খানিকটা কমায় জেলার ওই সব জায়গার পরিস্থিতিও অনেকটা উন্নতি হয়। কিন্তু রাত বাড়তেই ফের একবার জেলার প্রায় সর্বত্রই শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় আলিপুরদুয়ার শহর ও লাগোয়া এলাকায়। সেচ দফতর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার এক রাতেই আলিপুরদুয়ারে ৪০৫.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। যা কার্যত রেকর্ড বলেই মত সেচ দফতরের কর্তাদের একাংশের। তাদের হিসেব অনুযায়ী এর আগে ১৯৯৩ সালের বন্যার দিনে আলিপুরদুয়ারে একদিনে ৩০০ মিলিমিটারের একটু বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। তারপর একদিনে এত বেশি বৃষ্টি হয়নি বলেই মত সেচ দফতরের কর্তাদের একাংশের। হাসিমারাতেও গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫১.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এরসঙ্গে সমস্যা আরও বাড়ায় ভুটানের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সূত্রের খবর, প্রবল বৃষ্টির পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় ধসের কবলেও পড়তে হয় ভুটানের বাসিন্দাদের।

পাহাড় ও সমতলে প্রবল বৃষ্টির জেরে বুধবার সকাল থেকে আলিপুরদুয়ার জেলার সমস্ত বড় ও ছোট নদীতে জলস্ফীতি শুরু হয়। কোনও কোনও নদীতে ভুটান পাহাড়ের ডলোমাইট মিশ্রিত কাদা জলও বইতে শুরু করে। এ দিন সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি ছিল কালজানির। সকাল সাড়ে ৬টায় আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া ওই নদীতে হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ কালজানির জল বিপদসীমা পেরিয়ে গেলে লাল সঙ্কেত জারি করে সেচ দফতর। এ দিন সকাল থেকেই জলমগ্ন হতে শুরু করে আলিপুরদুয়ার শহরের বেশিরভাগ ওয়ার্ড। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকে। তবে একইসঙ্গে সকাল থেকে জেলার অন্য নানা জায়গা প্লাবিত হতে শুরু করে।

কোথায় কত

আলিপুরদুয়ার ৪০৫
হাসিমারা ২৫১
মালবাজার ১৪৮
নাগরাকাটা ২২২
তুফানগঞ্জ ১৭০
মাথাভাঙা ৭৮
কোচবিহার ৭৬
জলপাইগুড়ি ৪৮

(বৃষ্টিপাত মিলিমিটারে, বুধবার সকাল আটটা পর্যন্ত)

এ দিন সকাল থেকে কালচিনির বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হতে শুরু করে। সকালের দিকে বাঁধ ভেঙে বাসরা নদীর জল হ্যামিল্টনগঞ্জে ঢুকে পড়ে। পশ্চিম সাঁতালিতেও নদী বা বাঁধের খানিকটা ক্ষতি হয়। জলের তোড়ে পানা সেতুর খানিকটা অংশও ভেঙে যায়। মেন্দাবাড়িতে প্রচুর কৃষি জমিতে জল ঢুকে পড়ে। সকাল থেকে দলসিংপাড়ায় এশিয়ান হাইওয়ের উপর দিয়ে জল বইতে শুরু করে। আলিপুরদুয়ার- ১ব্লকের পলাশবাড়িতেও চর তোর্সা নদীর ডাইভার্সনের উপর দিয়ে জল বইতে শুরু করে। ফলে আলিপুরদুয়ার ও ফালাকাটার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সোনাপুর দিয়ে কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ি দিয়ে বিভিন্ন যান চলাচল করে।

এলাকার নদীগুলিতে জলস্ফীতির জন্য এ দিন মাদারিহাট ব্লকের বিভিন্ন এলাকাও জলমগ্ন হয়। মাদারিহাটের সঙ্গে টোটোপাড়ার যোগাযোগ ফের একবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হলং নদীর জলে প্লাবিত হয় পূর্ব খয়েরবাড়ির একটি অংশ। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। প্রবল বৃষ্টির জেরে এ দিন আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক ও কুমারগ্রামের বেশ কিছু এলাকাও জলমগ্ন হয়।

কোন নদীতে সর্তকতা

কালজানি (আলিপুরদুয়ার) লাল সর্তকতা

তোর্সা জল বাড়ছে
মানসাই জল বাড়ছে
তিস্তা জল বাড়ছে

প্রশাসন সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত জেলায় সরকারি ত্রাণ শিবিরে কেউ আশ্রয় নেননি। তবে অনেকেই উঁচু জায়গায় উঠে এসেছেন। বেশ কিছু জায়গায় সেখানেই চলছে ত্রাণবিলি। পরিস্থিতি দেখতে এ দিন কুমারগ্রাম ও মাদারিহাটে যান জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা। তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।এবার শুধু খবর

পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

Rain Monsoon Alipurduar Flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy