Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
River

নদী বাঁচানোর সঙ্কল্প নিয়েই সম্মেলন শুরু

সল্টলেকে সোমবার শুরু হয়েছে প্রথম আন্তর্জাতিক নদী কংগ্রেস। ভার্চুয়ালি সেখানে বক্তৃতা দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:২৯
Share: Save:

গঙ্গালালিত ভারতভূমিতে প্রশস্ত ও আলঙ্কারিক অর্থে সব নদীই গঙ্গানদী। সব নদীর জলই গঙ্গাজল। কিন্তু মানুষের অসচেতন ব্যবহারে এবং অবহেলায় অনেক নদী কার্যত হারিয়ে গিয়েছে, অনেক নদী ধুঁকছে মাত্রাছাড়া দূষণে। গঙ্গাও লাগামছাড়া দূষণে বিপন্ন। দেশের বিভিন্ন নদনদীর দুরবস্থার কথা বারে বারেই তুলে ধরে আমজনতাকে সতর্ক করার চেষ্টা চালাচ্ছেন পরিবেশবিজ্ঞানী এবং নদী-বিশেষজ্ঞেরা। নদনদীর বিপন্নতার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ঘনায়মান বিপদ নিয়ে এ বার উদ্বেগের পাশাপাশি নদী বাঁচানোর সঙ্কল্পের সুর শোনা গেল কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের গলায়।

সল্টলেকে সোমবার শুরু হয়েছে প্রথম আন্তর্জাতিক নদী কংগ্রেস। ভার্চুয়ালি সেখানে বক্তৃতা দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আশির দশক থেকেই নদীর অবক্ষয় চলছে। বহু নদী অবলুপ্তির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। বহু নদীই কার্যত নিকাশি নালায় পরিণত হয়েছে।’’ এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার কী ভাবে নদী বাঁচাতে চাইছে, তার সবিস্তার বিবরণ দেন তিনি। শেখাওয়াতের পাশাপাশি গঙ্গা বাঁচাতে কেন্দ্রের নানা উদ্যোগের কথা জানান ‘ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা’ প্রকল্পের ডিজি রাজীবরঞ্জন মিশ্র।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মানবসভ্যতায় নদীর ভূমিকা অপরিসীম। উত্তর ভারতের বড় বড় নদী মূলত বরফগলা জলে পুষ্ট এবং তারা জলের জোগান দেয় বছরভর। কিন্তু গঙ্গা-সহ সেই সব বড় নদী যে-ভাবে দূষণের কবলে পড়ছে, তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদেরা। এই বিষয়গুলিই নদী কংগ্রেসে প্রধান আলোচ্য হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। নদী কংগ্রেসের আয়োজক সংস্থা ‘সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’-এর চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী এ দিন জানান, কংগ্রেসে যে-সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে এবং তা থেকে যে-সব সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসবে, সেগুলি সরকার এবং নদীর সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন দফতরকেও জানাবেন তাঁরা।

পশ্চিমবঙ্গের বহু নদীই নিজস্ব গতিপথ হারিয়েছে। নিয়ম ভেঙে নির্বিচার নির্মাণকাজ চালানো হয়েছে অনেক নদীর উপরে। বাংলায় গঙ্গা-ভাগীরথীর অবস্থাও তথৈবচ। একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে, কল্যাণী থেকে ডায়মন্ড হারবার পর্যন্ত গঙ্গার দূষণ ভয়াবহ। গঙ্গার এই পর্বে ফিক্যাল কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়ার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকশো গুণ বেশি। এর জন্য গঙ্গায় এসে পড়া অপরিশোধিত নাগরিক বর্জ্যকেই দায়ী করেন পরিবেশবিজ্ঞানীরা। উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে তিস্তার উপরে একের পর এক বাঁধ নির্মাণের জন্য জলের পরিমাণ যেমন কমেছে, তেমনই কিছু জায়গায় তিস্তার গতিপথেও বদল লক্ষ করা যাচ্ছে। আচমকা অতিবৃষ্টির ফলে তিস্তা বিধ্বংসী হয়ে ওঠে। যার নজির কয়েক মাস আগেই দেখা গিয়েছে।

আয়োজক সংস্থা সূত্রের খবর, আন্তর্জাতিক নদী কংগ্রেসে অনেক গবেষকই তাঁদের গবেষণাপত্র জমা দিয়েছেন। সেগুলির মধ্যে উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গ ছাড়াও ভারতের অন্যান্য প্রান্তের নদনদী আছে। এ দিন নদী গবেষণা এবং সংরক্ষণ প্রকল্পের জন্য পুরস্কারও দেওয়া হয়। সেরা নদীবিদের পুরস্কার পেয়েছেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র।

অন্য বিষয়গুলি:

River Ganges
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy