ফিরহাদ হাকিম। ফাইল চিত্র।
কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, বনগাঁর পর এ বার নৈহাটি পুরসভাও পুনরুদ্ধার করল তৃণমূল কংগ্রেস। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে, নৈহাটি পুরসভা তৃণমূলের দখলে এসেছে বলে দাবি করেন ফিরহাদ হাকিম। ওই পুরসভায় মোট আসন ৩১। এ দিন আত্মবিশ্বাসী ফিরহাদের দাবি, ২৩ কাউন্সিলরই এখন তৃণমূলের পক্ষে। আর সেই অঙ্কেই নৈহাটি পুনদর্খল হল শাসক দলের।
শনিবার চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন ফিরহাদ হাকিম। বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের পর তৃণমূল কাউন্সিলরদের ভুল বুঝিয়ে বিজেপিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে আবার ফিরে এসেছেন। এখন ২৩ জন কাউন্সিলর আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।’’ একই সঙ্গে, বিজেপির বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগও করেছেন তিনি। শুক্রবার রাতে নৈহাটির গৌরীপুরে উমেশ সাউ নামে এক তৃণমূল কর্মীর উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। তা নিয়ে সরাসরি বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকে বিঁধেছেন ফিরহাদ। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘উমেশ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষছে। তাঁর উপর অর্জুন সিংয়ের দলবল হামলা চালিয়েছে।’’ ঘটনায় নৈহাটির কাউন্সিলর গণেশ দাস ও হালিশহরের কাউন্সিলর রাজা দত্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
লোকসভা ভোটে বিজেপির চমকপ্রদ উত্থান রাজ্যে নতুন নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের পথ খুলে যায়। রাতারাতি তৃণমূলের হাতে থাকা একাধিক পুরসভা বিজেপির দখলে চলে যেতে থাকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তার বেশির ভাগই ছিল উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার। সেই পথে হেঁটে নৈহাটি পুরসভাও বিজেপির দখলে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। ঘটনার সূত্রপাত হয় গত মে মাসে। নৈহাটি পুরসভার মোট ৩১ কাউন্সিলরের মধ্যে ২৯ জনই দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। আর তার ফলে, এক ধাক্কায় ওই পুরসভায় শাসক থেকে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: ঘাতক জাগুয়ারের স্টিয়ারিংয়ে ছিলেন আরসালানের মালিকের ছেলে, গ্রেফতার করল পুলিশ
নৈহাটিতে নিজেদের পাল্লা ভারী হতে স্বাভাবিক ভাবেই পুরসভা দখলের পথে হাঁটে বিজেপি। প্রাথমিক ভাবে, পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনেন ১৮ জন দলত্যাগী কাউন্সিলর। ভোটাভুটি চেয়ে তাঁরা পুর আধিকারিককে চিঠি দেন। পাল্টা তৎপর হয়ে ওঠে জোড়াফুল শিবিরও। দলত্যাগীরা আস্থা ভোট চাইলেও, তা কৌশলে এক রকম এড়িয়েই যায় শাসকদল। বস্তুত, সে সুযোগই -+ দেওয়া হয়নি ওই পুরসভায়। বদলে, সেখানে প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্ত নেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। নৈহাটি নিয়ে বিজেপির সঙ্গে প্রেস্টিজ ফাইটে, ফিরহাদের এই পদক্ষেপে সায় ছিল তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্বেরও।
একই সঙ্গে, নৈহাটি পুরসভার ঘটনাকে সামনে রেখে রাজনৈতিক প্রচারও তুঙ্গে তোলে তৃণমূল কংগ্রেস। নৈহাটি এলাকায় প্রচারে নামেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। পুরসভার সামনে ‘সত্যাগ্রহ’ কর্মসূচি পালন করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম ও উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার তৃণমূল নেতৃত্বও। সেই মঞ্চ থেকেই মুকুল রায় ও অর্জুন সিংকে নিশানা করে তোপ দাগেন তৃণমূল নেত্রী। বিজেপির বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের রুদ্ধদ্বার বৈঠকেও আমল পেল না চিন-পাক দাবি, বলছে রিপোর্ট
গত কয়েক মাস ধরে নৈহাটি নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে চোখের পলক না ফেলা লড়াই। তার মধ্যেও দলত্যাগীদের সঙ্গে আলোচনা জারি ছিল তৃণমূলের জেলা ও শীর্ষ নেতৃত্বের। আর সেই কৌশলেই নৈহাটি নিয়ে স্বস্তি ফিরল তৃণমূলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy