বউবাজারে ঘরছাড়াদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের। ফাইল চিত্র
বৌবাজারের বিপর্যয়ে নিরাশ্রয় হয়ে পড়া মানুষদের সাহায্যে এগিয়ে এল রাজ্য সরকার। শনিবার রাজ্য সরকারের তরফে আর্থিক প্যাকেজের কথা ঘোষণা করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (ববি)। তিনি জানিয়েছেন, ৩০ দিনের বেশি গৃহহীন হয়ে থাকাদের পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, ভাড়াটে ও দোকানকর্মীদের দেড় থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ১০০ বর্গফুটের বেশি জায়গার দোকান হলে ক্ষতিপূরণ হবে ৫ লক্ষ টাকা। তার কম হলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ দেড় লক্ষ।
শনিবার বৌবাজার বিপর্যয় নিয়ে নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। ঠিক ছিল, সেই বৈঠক হবে কলকাতা পুরসভায়। যদিও পরে রাজ্য সরকারের নির্দেশে তা হয় নবান্নে। ওই বৈঠকে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, মেয়র, মেট্রো কর্তৃপক্ষ (কেএমআরসিএল) ছাড়াও রেল বোর্ডের কর্তারা ছিলেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বৌবাজারের বিপর্যয় স্থলে যান মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিদেবী, স্বরাষ্ট্রসচিব বি পি গোপালিকা, মেয়র ফিরহাদ, পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। পরিস্থিতি পরিদর্শনের পর রাজ্য সরকারের দেওয়া ক্ষতিপূরণের কথা জানান মেয়র। সঙ্গে রাজ্য সরকার ও কলকাতা পুরসভার অবস্থানও স্পষ্ট করেন তিনি। ফিরহাদ বলেন, ‘‘এ বার থেকে এমন কোনও কাজ করার ক্ষেত্রে পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশকে আগে জানাতে হবে। এই ভাঙছে, ফাটল ধরছে, রাতারাতি সকলকে হোটেলে না তুলে ১০ হোক, ১৫ হোক বা ২০ দিন আগে জানাতে হবে আমাদের। আমরা সকলকে হোটেলে স্থানান্তর করে দেব।’’
ফিরহাদ জানিয়েছেন, বিপর্যয় পরবর্তী পর্যায়ে বৌবাজারে যখন মেট্রোর কাজ হবে, তখন সংশ্লিষ্ট জায়গা খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কোনও বাসিন্দার যাতে ক্ষতি না হয় সে দিকে নজর দিতেও বলেছেন তিনি রাজ্য প্রশাসনকে। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, ‘‘বৌবাজারের এমন ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী খুবই উদ্বিগ্ন। তিনি বার বার এলাকার বাসিন্দাদের খবর নিয়েছেন। লাগাতার যে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে তাঁদের, তার সুরাহার নির্দেশ দিয়েছেন।’’ মেয়র আরও বলেন, ‘‘মেট্রোর কাজে মাটি আলগা হয়ে যাচ্ছে। তার জন্যই ফাটল দেখা দিচ্ছে বার বার। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, কাউন্সিলর, স্থানীয় ওসি, কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং ডিপার্টমেন্টের লোকজন এলাকায় শিবির করে থাকবেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সুবিধা-অসুবিধা খতিয়ে দেখবেন সকলে।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট দুর্গা পিতুরি লেন ও সেকরাপাড়া লেনের একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরেছিল। গত মে মাসে দুর্গা পিতুরি লেনের বাড়িতে ফের ফাটল ধরে। দু’টি ক্ষেত্রে ঘরছাড়া হন বহু মানুষ। এ বার মদন দত্ত লেন এবং বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের কিছু বাড়ি ও দোকানে ফাটল ধরেছে। তিন বার এমন ঘটনা ঘটনায় আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন। স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে জানিয়েছেন, ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত হাজার খানেক মানুষকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy