Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Bridge

শ্রমিকের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, হাড় ভেঙে কাবু সঙ্গী

পার্ক সার্কাসের হাসপাতাল সূত্রের খবর, মুকেশ কুমার পাণ্ডে ও রঞ্জন কুমার নামে ওই দুই শ্রমিকের আঘাত গুরুতর।

চলছে উদ্ধারকাজ।—নিজস্ব চিত্র।

চলছে উদ্ধারকাজ।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:৩৬
Share: Save:

বৈষ্ণবনগরে নির্মীয়মাণ দ্বিতীয় ফরাক্কা সেতুর অংশ ভেঙে পড়ে আহত দুই শ্রমিককে রবিবার রাতে পাঠানো হয় কলকাতায়। সোমবার ভোরে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরে শেষে পার্ক সার্কাস এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁদের ভর্তি করিয়ে দেন সহকর্মীরা।

পার্ক সার্কাসের হাসপাতাল সূত্রের খবর, মুকেশ কুমার পাণ্ডে ও রঞ্জন কুমার নামে ওই দুই শ্রমিকের আঘাত গুরুতর। বছর আটত্রিশের রঞ্জনের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। খুলির একাংশ ভেঙেছে। মুকেশের বাঁ ঊরুর হাড় ভেঙে গিয়েছে। ভেঙেছে ডান হাঁটু এবং গোড়ালির মাঝখানের হাড়ও। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় বত্রিশ বছরের ওই যুবকের রক্তচাপ অস্বাভাবিক মাত্রায় কমে গিয়েছিল। রোগীকে স্থিতিশীল না-করে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব নয় বলে জানান হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ। এ দিন বিকেলে রঞ্জনের অস্ত্রোপচার হয়েছে। হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ জানান, রঞ্জনকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হবে।

পার্ক সার্কাসের ওই হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো রয়েছে কি না, সেই বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন তাঁদের সহকর্মীদের একাংশ। আহত শ্রমিকদের পাশে থেকে সব রকম সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং ঠিকাদার সংস্থার কর্তারা।

বৈষ্ণবনগরের নিউ খেজুরিয়া গ্রামে গঙ্গায় দ্বিতীয় ফরাক্কা সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। রবিবার রাতে সেই কাজ চলাকালীন স্ল্যাবের উপরে ভেঙে পড়ে লঞ্চিং গার্ডার। ওই স্ল্যাবের উপরে তখন কাজ করছিলেন ইঞ্জিনিয়ার শ্রীনিবাস রাও, সহকারী ইঞ্জিনিয়ার সচিন প্রতাপ এবং তিন শ্রমিক সুবেদার প্রজাপতি, মুকেশ ও রঞ্জন। গুরুতর আহত শ্রীনিবাস রাও, সচিন রাতেই মারা যান। তিন জখম শ্রমিককে প্রথমে পাঠানো হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরে দু’জনকে পাঠানো হয় কলকাতায়। প্রজাপতির দুই পায়ে আঘাত লেগেছে। তবে আঘাত তেমন গুরুতর নয়। তাঁর চিকিৎসা চলছে মালদহেই।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মুকেশ ও রঞ্জনকে রবিবার রাত ১২টা নাগাদ মালদহ থেকে কলকাতার হাসপাতালে ‘রেফার’ করেন চিকিৎসকেরা। দুই শ্রমিকের সহকর্মীরা তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতায় নিয়ে যান। তাঁরা জানান, প্রথমে দু’জনকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শয্যা না-থাকার কথা বলে আহতদের ভর্তি নেওয়া হয়নি। পরে পার্ক সার্কাসের ওই বেসরকারি হাসপাতালে দুই শ্রমিককে ভর্তি করানো হয়। এক শ্রমিক বলেন, ‘‘মাথায় আঘাত থাকায় রঞ্জনকে ভাল হাসপাতালে ভর্তি করা দরকার। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফেও তেমন সহযোগিতা মিলছে না।’’ দুই শ্রমিকের সঙ্গে কলকাতায় আসা এক ব্যক্তি জানান, দত্তাবাদ সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তাঁরা দু’জনকে এসএসকেএমে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স চালক তাঁদের পার্ক সার্কাসের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান।

সেতুর ঠিকাদার সংস্থার প্রকল্প ম্যানেজার বেঙ্কটেশ্বর স্বামী বলেন, ‘‘শুনেছি, নার্সিংহোমে শয্যা মিলছিল না। তাই জরুরি ভিত্তিতে পার্ক সার্কাসের ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আমরা সব সময় ওঁদের পাশে আছি।’’ মালদহের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক প্রকল্পের কর্তা দীনেশ হানসারিয়া বলেন, ‘‘মৃতদের পরিজন ও আহতেরা যাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণ পান, সেই চেষ্টা চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bridge Malda Accident Injury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy