Advertisement
E-Paper

Scarcity of rainfall: বৃষ্টি বাড়ন্ত জুলাইয়ে, কপালে ভাঁজ চাষির

খরিফ মরসুমে সাধারণত জুন থেকে বীজতলা তৈরি শুরু হয়। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পেরোলেই শুরু হয় ধান রোয়া। অগস্টের শেষ পর্যন্ত ধান রোয়া যেতে পারে।

ফুটিফাটা জমি। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের গ্রামে। শুভ্র মিত্র

ফুটিফাটা জমি। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের গ্রামে। শুভ্র মিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২২ ০৬:১৬
Share
Save

পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে চলতি মাসটা ভাল কাটছে না রাজ্যের চাষিদের। দক্ষিণবঙ্গের সর্বত্র ধান বোনা, বীজতলা করার মতো জলের অভাব। পাট পচানোর জল মিলছে না। উত্তরের অধিকাংশ জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। জুন মাসে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে অতিবৃষ্টি হলেও, জুলাইয়ে বৃষ্টি তুলনায় অনেক কম হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গাঁটের কড়ি খরচ করে শ্যালো বা সাব-মার্সিবল পাম্পের জলে সেচ দিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা করছেন চাষিরা। এই পরিস্থিতিতে কৃষি দফতর ‘শ্রী’, ‘ড্রাম সিডার’ এবং ‘জ়িরো টিলেজ’-এর মতো ন্যূনতম জল ব্যবহার করে চাষের পদ্ধতি নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত জলের অভাবে ধান-পাটের ফলনে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে চাষিদের একাংশের। জলাভাবে আনাজ চাষের অবস্থাও বিশেষ ভাল নয়। রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, “উত্তরবঙ্গে ভাল বৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। কৃষি দফতর পরিস্থিতি নজরে রেখেছে।’’

খরিফ মরসুমে সাধারণত জুন থেকে বীজতলা তৈরি শুরু হয়। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পেরোলেই শুরু হয় ধান রোয়া। অগস্টের শেষ পর্যন্ত ধান রোয়া যেতে পারে। কিন্তু ২০ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যের ‘শস্যগোলা’ বলে পরিচিত পূর্ব বর্ধমানে ৫১ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। গত জুলাইয়ে সেখানে ২৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। এ বার বৃষ্টিপাত ১৪০ মিলিমিটার। জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে মুর্শিদাবাদে বৃষ্টির ঘাটতি প্রায় ৮৮.২ শতাংশ, নদিয়ায় প্রায় ৮৪, হুগলিতে ৬৪.৯২, মালদহে ৬৩.৪, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৫৮ শতাংশ। উত্তর ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, বাঁকুড়াতেও পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি।

কোচবিহারে জুনে ১,২৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা গত সাত বছরে রেকর্ড। সে সময় জল দাঁড়িয়ে বীজতলার ক্ষতি হয়েছিল। অন্য দিকে, জুলাইয়ে সেখানে বৃষ্টি হয়েছে কম-বেশি ১৬০ মিলিমিটার, যা স্বাভাবিকের থেকে কম। এই ‘জাঁতাকলে’ পড়ে যে কোচবিহারে সাধারণত দু’লক্ষ ১০ হাজার হেক্টর এলাকায় আমন চাষ হয়, সেখানে এখনও পর্যন্ত মাত্র ২৫ শতাংশ জমিতে চাষ হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে সেচের জল ভরসা হতে পারত চাষিদের। শুক্রবার থেকে ডিভিসি দুই বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া, হাওড়ায় সেচের জল দিচ্ছে। কিন্তু সংস্থা সূত্রের দাবি, মাইথন জলাধারে পর্যাপ্ত জল নেই। তাই ছ’দিন জল দিয়ে, পর্যালোচনা করে দ্বিতীয় দফায় জল ছাড়া হতে পারে। বীরভূমে মশানজোড় এবং হিংলো জলাধারে পর্যাপ্ত জল না থাকায় সেচের জন্য জল ছাড়া হবে না।

পশ্চিম মেদিনীপুরে সব জায়গায় পর্যাপ্ত সেচের জল মেলে না। সেখানে এক বিঘা জমিতে পাম্প চালিয়ে জল দিতে গড়ে খরচ হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। হুগলিতে সরকারি-সেচ মিললে, পুরো মরসুমে একর (প্রায় তিন বিঘা) পিছু খরচ ২০৪ টাকা। বেসরকারি পাম্প থেকে জল নিলে, পুরো মরসুমে বিঘাপিছু ৮০০-১,০০০ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।

কপালে চওড়া ভাঁজ পূর্ব বর্ধমানের সুকান্ত ঘোষের মতো ধানচাষিদের। বলছেন, “বৃষ্টির অভাবে চাষে দেরি হলে, ফলন ভালো হবে না। ধানের মানও ঠিক থাকবে না।’’ একই ধরনের চিন্তার শরিক মুর্শিদাবাদের ডোমকলের পাটচাষি সিরাজুল মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘খাল-বিল শুকিয়ে যাওয়ায় পাট কেটে পচানোর জায়গা নেই। পাট পুড়ে খাক হচ্ছে।’’

বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের নেতারা এই পরিস্থিতিতে কৃষি-ঋণ মকুব, চাষিদের জন্য সেচের জল, ক্ষতিপূরণ, বেসরকারি সেচ-ব্যবস্থাগুলোর ক্ষেত্রে যাতে বিঘাপিছু দর কম হয়, সে মতো তাদের বিদ্যুৎ বিল মকুব করে, ন্যূনতম দর বেঁধে দেওয়া, ‘খরা’ ঘোষণা করার দাবি তুলছেন।

‘কৃষকসভা’র রাজ্য সম্পাদক অমল হালদারের মন্তব্য, “আমনের বীজতলা বাঁচাতে আরও আগে সেচের জল দেওয়া দরকার ছিল।’’ রাজ্যের মুখ্য কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার অবশ্য বলেন, “এখনও সময় রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে কী করতে হবে, কৃষি দফতর চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছে।’’

scarcity of rain Jute Farmers North Bengal

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।