Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

অবশেষে করাচির পথে আজরা-ইশরাতরা

ঠিক যেন দুই পড়শি দেশের খুশির ইদের সৌহার্দ্য!

ইদের আগেই ছাড়া পেল বন্দিরা

ইদের আগেই ছাড়া পেল বন্দিরা

  প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৯ ০১:৩৩
Share: Save:

ঠিক যেন দুই পড়শি দেশের খুশির ইদের সৌহার্দ্য!

ইদের মরশুমেই মুখে হাসি ফুটছে দমদমে জেল-বন্দি পাকিস্তানি পরিবারটির। রুটি-রুজির টানে আকছার এ দেশে আসা-যাওয়া করতেন পাকিস্তানের নবাব খান। সেই সূত্রেই টিটাগড়ের শাহজিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর।
আদতে করাচির বাসিন্দা নবাবের পরিবারের ডালপালা এ বার দু’দেশেই ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর বড় মেয়ে ইশরাতও টিটাগড়েই সংসার পেতেছিলেন। এর পরেই পারিবারিক গোলযোগের সূত্রপাত। সস্ত্রীক নবাব, তাঁদের দুই কন্যা ইশরাত, আজরা, তাঁদের এক ভাই এবং ইশরাতের কোলের শিশুপুত্র— সবারই পাসপোর্টের নথি নষ্ট করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অবৈধভাবে এ দেশে বসবাসের অভিযোগে গোটা পরিবারটিরই জেলে ঠাঁই হয়েছিল। ২০১২ সালে গ্রেফতার হয় পরিবারটি। সাত বছরের টানাপড়েন শেষে অবশেষে মুক্তি পেতে চলেছেন নবাবেরা। আজ, বুধবার দুপুরে দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার কথা তাঁদের।

রমজান সম্পর্কে এ তথ্যগুলি জানতেন?

পাসপোর্ট সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ২০১২ সালে টিটাগড় থেকে গ্রেফতার হন নবাব, শাহজিয়া, ইশরাতরা। সব মিলিয়ে ছ’জনের পরিবারের ঠাঁই হয় শ্রীরামপুর মহকুমা জেলে। ২০১৬ সাল থেকে তাঁদের ঠিকানা দমদম সেন্ট্রাল জেল। এ বছরের গোড়াতেই তাঁদের মুক্তি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ধৃতেরা পাক নাগরিক বলেই কিছু বাড়তি সতর্কতা বজায় রাখা হয়। পরিবারটিকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে দেওয়ার আগে মেপে-মেপেই পা ফেলেন ভারত-পাকিস্তানের দায়িত্বপ্রাপ্ত পদাধিকারীরা। তাতেই কিছুটা দেরি হয়েছে বলে মত, প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের।
কারা দফতর সূত্রের দাবি, পাক বন্দিদের দেশে ফেরানো নিয়ে তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন পাকিস্তান দূতাবাসের আধিকারিকেরা। ভারতে পাক বন্দিদের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা শুধুমাত্র তিহাড় জেলে রয়েছে। নবাব-আজরাদের তাই দমদম থেকে তিহাড়েও পাঠিয়েছিল কারা দফতর। দমদমের জেলের ডেপুটি জেলার সমীর কুমার রায় বিষয়টি নিয়ে খুবই তৎপর ছিলেন।
গত কয়েক বছরে জেলের অন্দরে মেয়েদের ক্রিকেট, ছবি আঁকা বা জেল সাফসুতরো রাখা— সবকিছুতেই নজর কেড়েছিলেন বন্দিনী আজরা। ব্যাট হাতে মেয়েদের ক্রিকেটে মাত করেছিলেন দিদি ইশরাতও।
মাত্র তিন বছরেই জেলের পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন দুই বোন। আজ, বুধবার জেল থেকে মুক্তির পরে হাওড়া থেকে ট্রেনে এ রাজ্য
ছাড়বেন তাঁরা। স্বাভাবিকভাবে খুশি ছ’জনের পরিবার। তবে দমদম জেলের প্রতি তাঁদের একটা টানও তৈরি হয়েছে।
কয়েক মাস আগে ভারতীয় জাদুঘরে বন্দিদের ছবির প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সেখানেও ছিল আজরার আঁকা ছবি। বিক্রিও হয়েছিল তা। ওঁরা না-থাকলেও দমদমে জেল সুপারের ঘরের দেওয়ালে থাকবে, আজরার আঁকা ধ্যানরত বুদ্ধের ছবি। পড়শি দেশের মেয়ের প্রীতির স্মারক।

অন্য বিষয়গুলি:

Eid Eid-Ul-Fetar Religion Dumdum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy