Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

‘ভাই কি দাগি অপরাধী?’ প্রশ্ন তন্ময়ের

তন্ময়বাবুর প্রশ্ন, ‘‘ভাই কি জঙ্গি বা দাগি অপরাধী! তা হলে পুলিশ কেন হেঁচড়ে নিয়ে গেল ওকে? পোশাক বদল করতে বা জুতোও পরতে দিল না কেন? টানা চার বারের কাউন্সিলর, অল্প ব্যবধানে বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়া সন্ময়ের সঙ্গে মারাত্মক অপরাধীর ফারাক, পুলিশ কি ভুলে গিয়েছিল?’’

সরব: আদালতের বাইরে সন্ময়বাবুর পরিজনেরা। ছবি: সুজিত মাহাতো

সরব: আদালতের বাইরে সন্ময়বাবুর পরিজনেরা। ছবি: সুজিত মাহাতো

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:০৬
Share: Save:

আগের রাতের ‘আতঙ্ক’ ভুলতে পারছেন না পানিহাটির কংগ্রেস নেতা সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়র পরিজনেরা। পানিহাটি পুরসভার টানা চার বারের কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্ময়বাবুকে বৃহস্পতিবার রাতে এলাকা থেকে তুলে আনে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে পুরুলিয়ার এক যুব তৃণমূল নেতা মুখ্যমন্ত্রী-সহ শাসকদলের কয়েকজনের বিরুদ্ধে সম্মানহানি করে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় লেখালেখির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন জেলার ‘সাইবার ক্রাইম সেল’-এ। শুক্রবার পুরুলিয়া আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে সন্ময়বাবুর সম্পর্কিত বোন ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় ও দাদা তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন।

ইন্দ্রাণীদেবীর দাবি, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ আগরপাড়া থেকে সন্ময়বাবুকে গ্রেফতারের সময়ে তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘হুড়মুড় করে কুড়ি-পঁচিশজন লোক বাড়িতে ঢুকে দাদাকে টানাহেঁচড়া করতে করতে তুলে নিয়ে গেল। আমাদের একটা ঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা টেনে দেয় ওরা। মুর্হূতের মধ্যে সব ঘটে যায়। কোনও রকমে এটুকু শুধু জানতে পেরেছিলাম, ওরা গুন্ডা নয়, পুলিশের লোক। কিন্তু দাদাকে কেন ধরল, সেটাই বোধগম্য হচ্ছিল না।’’

তন্ময়বাবুর প্রশ্ন, ‘‘ভাই কি জঙ্গি বা দাগি অপরাধী! তা হলে পুলিশ কেন হেঁচড়ে নিয়ে গেল ওকে? পোশাক বদল করতে বা জুতোও পরতে দিল না কেন? টানা চার বারের কাউন্সিলর, অল্প ব্যবধানে বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়া সন্ময়ের সঙ্গে মারাত্মক অপরাধীর ফারাক, পুলিশ কি ভুলে গিয়েছিল?’’ পুরুলিয়া জেলার পুলিশ যে ধরেছে, সেটুকু পর্যন্ত গ্রেফতারের সময়ে জানানো হয়নি এবং রাতে খড়দহ থানায় সন্ময়বাবুকে এক প্রস্ত মারধর করা হয় বলেও তন্ময়বাবুর অভিযোগ। যদিও এ নিয়ে জেলা পুলিশের কেউ মন্তব্য করেননি।

এই গ্রেফতারি নিয়ে তাপের আঁচ পুরুলিয়ার জেলা রাজনীতিতেও পড়েছে। পুরুলিয়া আদালতে সিজেএম রিম্পা রায়ের এজলাসে সন্ময়বাবুকে তোলার সময়ে দলীয় কর্মীদের নিয়ে সেখানে বসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি ও বিধানসভায় কংগ্রেস পরিষদীয় দলের ডেপুটি লিডার নেপাল মাহাতো। তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূল যত পুলিশকে দিয়ে বিরোধীদের দমাতে অতিসক্রিয়তা দেখাবে, তত তাড়াতাড়ি শাসকদলের ভরাডুবি হবে। পঞ্চায়েত ভোটে, লোকসভা ভোটে তা প্রমাণও হয়েছে।’’ পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর অবশ্য দাবি, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পদক্ষেপ করেছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

সরকার পক্ষের আইনজীবী অরুণ মজুমদার বিচারকের কাছে ধৃতের পুলিশ হেফাজতের আর্জি জানালে বিরোধিতা করেন সন্ময়বাবুর তরফের তিন আইনজীবী অনির্বাণ অধিকারী, নীলেশ সরকার ও শেখর বসু।

সবুজ হাফ শার্ট, পাজামা পরা সন্ময়বাবু চুপ করেই ছিলেন। দূর থেকে হাতের লাঠিটা শক্ত করে ধরে তন্ময়বাবু হেঁকে বলেন, ‘‘ভাই, হেরে যাস না। সবাই তোর পাশে আছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sanmoy Bandyopadhyay Congress Leader Purulia Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy