E-Paper

যকৃতের বিরল অসুখে তরুণীর মৃত্যুর পরেই অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত 

ব্যারাকপুরের বাসিন্দা শুভজিৎ কুণ্ডুর বড় মেয়ে শুচিস্মিতা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়া ছিলেন। ২০১৪ সালে পর পর দু’বার এবং ২০১৫-এ এক বার জন্ডিসে আক্রান্ত হন ওই তরুণী।

মরণোত্তর অঙ্গদানের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘রিজিয়োনাল অর্গান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজ়েশন’- এর কাছে।

মরণোত্তর অঙ্গদানের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘রিজিয়োনাল অর্গান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজ়েশন’- এর কাছে। —প্রতীকী চিত্র।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫ ০৯:৩৫
Share
Save

যকৃতের বিরল অসুখে আক্রান্ত, ২১ বছরের তরুণী ক্রমশ ব্রেন ডেথের দিকে এগোচ্ছিলেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নেন, মরণোত্তর অঙ্গদানে রাজি করাতে হবে তরুণীর পরিজনদের। বুধবার সকালে বাবা-মাকে বিষয়টি বলতেই তৎক্ষণাৎ তাঁরাও জানিয়ে দেন, বাড়িতে এমনই চিন্তাভাবনা করে হাসপাতালে এসেছেন। আদরের বড় মেয়েকে তাঁরা বাঁচিয়ে রাখতে চান অন্য রোগীকে অঙ্গদান করে।

ব্যারাকপুরের বাসিন্দা শুভজিৎ কুণ্ডুর বড় মেয়ে শুচিস্মিতা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়া ছিলেন। ২০১৪ সালে পর পর দু’বার এবং ২০১৫-এ এক বার জন্ডিসে আক্রান্ত হন ওই তরুণী। চলতি মাসের প্রথম দিকেও ফের জন্ডিসে আক্রান্ত হন। কিছুতেই তা কমছিল না। জ্বরের মাত্রাও ক্রমশ বাড়ছিল। ৩ মার্চ দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল শুচিস্মিতাকে। কিন্তু শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে শুরু করায় ১০ মার্চ তাঁকে সোনারপুরে যকৃতের চিকিৎসার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিজনেরা।

সোনারপুরের লিভার ফাউন্ডেশনের সম্পাদক পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় জানান, শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, ভর্তির পরেই শুচিস্মিতাকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয়। মারাত্মক ভাবে তাঁর লিভার ফেলিয়োর শুরু হয়েছিল। পার্থসারথির কথায়, ‘‘অটোইমিউন লিভার ডিজ়িজ়ে আক্রান্ত ওই তরুণীর একমাত্র চিকিৎসা ছিল যকৃৎ প্রতিস্থাপন। কিন্তু ওঁর শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, সেই অস্ত্রোপচার করা কোনও ভাবেই সম্ভব ছিল না।’’ শুভজিৎ জানান, মঙ্গলবার রাতে স্ত্রী সুমিতা বাড়ি ফিরে তাঁদের বড় মেয়ে রেশমীর (শুচিস্মিতার বাড়ির নাম) ব্রেন ডেথের কথা জানান। প্রৌঢ়ের কথায়, ‘‘এর পরেই স্ত্রী, ছোট মেয়ে শুভমিতা আর আমি, তিন জনে বসে আলোচনা করি, এখন কী করা উচিত। সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিই, রেশমীকে তো আর ফিরিয়ে আনতে পারব না। কিন্তু মরণোত্তর অঙ্গদানের মধ্যে দিয়েই ওকে সকলের মাঝে বাঁচিয়ে রাখতে পারব।’’

বাড়িতেই মুদির দোকান রয়েছে শুভজিতের। সেই ব্যবসার পাশাপাশি এলাকায় রক্তদান, মরণোত্তর অঙ্গদানের মতো কর্মসূচিতে যুক্ত রয়েছেন ওই প্রৌঢ়। এ দিন সকালে পরিবারের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে সোনারপুরের হাসপাতালে পৌঁছন তিনি। পার্থসারথি বলেন, ‘‘ব্রেন ডেথ নিশ্চিত জানানোর পরে ওঁরা আমার সঙ্গে দেখা করেন। আমরা মরণোত্তর অঙ্গদানের প্রসঙ্গ তুলতেই ওঁরা জানিয়ে দেন, এমন চিন্তাভাবনা করেই হাসপাতালে এসেছেন।’’ এ দিন বিকেলে শুচিস্মিতার ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয়। মরণোত্তর অঙ্গদানের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘রিজিয়োনাল অর্গান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজ়েশন’ (রোটো)-এর কাছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Organ Donation Medical

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।